প্রতীকী ছবি।
পারফর্ম্যান্স রাঙ্ঙ্কিং
আগেই বলেছি রাঙ্কিং শেষ কথা নয়। কিন্তু এর উপর নজর রাখা জরুরি। আপনার ফান্ড অন্যদের তুলনায় কেমন করছে, নজর রাখতে হবে তার উপর। এবং সেই নজরদারিটা করতে হবে নিয়মিত। প্রতি তিন মাসে আপনার ফান্ড একই ধরনের অন্য ফান্ডের তুলনায় কেমন করছে তা-ও যাচাই করতে হবে।
কোয়ার্টাইল রাঙ্কিং:
ধরুন বাজারে ১০০টা একই জাতীয় ফান্ড রয়েছে। কিন্তু ১০০টাই একই রকম ফল করবে না। তাই তাদের ফল দেখে ভাল থেকে খারাপ সাজিয়ে নিন। এবার তাদের মধ্যে প্রথম ২৫টিকে আমরা প্রথম ২৫ শতাংশ বা প্রথম কোয়ার্টাইলে রাখব।পরের ২৫টিকে আমরো বলব দ্বিতীয় কোয়ার্টাইল। এই ভাবে চারটে গ্রুপ তৈরি হয়ে গেল। প্রতিটিকে বলব কোয়ার্টাইল।
ভাবছেন কোথায় পাবেন এই সব তথ্য? ইন্টারনেটেই দেখতে পেয়ে যাবেন এই রাঙ্কিং। বিভিন্ন সংস্থা ওয়েবসাইটেই মিলবে এই তথ্য।
ঝুঁকির অঙ্ক
ঝুঁকি মাপারও অঙ্ক আছে। কিন্তু আপনাকে সেই অঙ্ক কষতে হবে না। এই অঙ্ক করে তার ফল প্রতিটি স্কিমেই দেওয়া থাকে। আপনাকে শুধু বুঝে নিতে হবে কোনটার কী মানে। এর প্রতিটিই ইঙ্গিত করে আপনি টাকা ঢাললে তার ফেরত পাওয়ার তুলনামূলক ঝুঁকি। কোনওটা বলে বাজারে সূচকের ওঠা-পড়ার সঙ্গে আপনার বিনিয়োগের লাভ-ক্ষতির সম্পর্ক, কোনওটা বা বলে যে রিটার্ন পাওয়ার কথা তা পাচ্ছেন কিনা তার কথা। অথবা টাকা ঢালার পরে তা ফেরত পাওয়ার ঝুঁকির সঙ্গে ফেরত পাওয়া টাকার অনুপাত ইত্যাদি।
আলফা
যেমন ধরুন আলফা।আলফা কী বলে? আলফা আপনাকে বলে, যে টাকা আপনি ঢেলেছেন তা ফান্ড পরিচালক ঠিক মতো বিনিয়োগ করছে কি না। এটা বোঝা খুব কঠিন নয়। বাজারের সূচক যে অনুপাতে নড়াচড়া করছে সেই অনুপাতে আপনার বিনিয়োগের অবস্থান কী সেটাই আলফা বলে দেয়। ধরুন আপনার স্কিমের আলফা ১.০। তার মানে সূচকের থেকে আপনার বিনিয়োগে লাভ ১ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ, আপনার ফান্ড পরিচালক আপনার টাকাকে ঠিকঠাক বিনিয়োগ করে চলেছেন। আবার এটাই যদি -১.০ দেখায় তার মানে হয় উল্টো। অর্থাৎ, আপনার বিনিয়োগ সূচকের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ।
অন্য ভাবে দেখলে কিন্তু এটা আপনার ফান্ড কত দক্ষ ভাবে পরিচালিত হচ্ছে তারও সূচক।যদি দেখা যায় পর পর কয়েকটি ত্রৈমাসিকে আপনার ফান্ডের আলফা নেগেটিভ, তার মানে কিন্তু আপনাকে ভাবতে হবে আপনি এই ফান্ড থেকে টাকা সরাবেন কি না।
টোটাল এক্সপেন্স রেশিও
আপনার টাকা আরেকজন সামলাবে কিন্তু তাতে কোনও খরচ লাগবে না তা হয় না। মিউচুয়াল ফান্ডও আপনার হয়ে টাকা বিনিয়োগ করে কিন্তু তার জন্য একটা ফি তারা নেয়। ধরুন আপনার ফান্ড আপনার বিনিয়োগের উপর ২ শতাংশ ফি নিচ্ছে। তার মানে হল প্রতি ১০০০ টাকায় ২০ টাকা খরচ বাবদ কেটে নিচ্ছে।
কত টাকা ফি নিতে পারে কোনও সংস্থা সেটা সেবি বলে দেয়। এবার দুটো ঘটনা ঘটতে পারে। এক স্কিম পরিচালনার খরচ তহবিলের তুলনায় বাড়তে থাকল। তার মানে ফান্ড পরিচালনার খরচ বাঁধতে পারছে না সংস্থাটি। অথবা খরচে রাশ রাখলেও তহবিল পরিচালনায় সংস্থাটি ব্যর্থ। তাই বাজারে খাটানো তহবিলে ক্ষতির অঙ্ক বাড়ছে। খরচ এক থাকলেও তহবিলের অনুপাতে পরিচালনার খরচ বাড়ছে।
আপনার কিন্তু দুটোতেই ক্ষতি। প্রথমটায় লাভের গুড় পরিচালকদের অদক্ষতায় খাচ্ছে। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আপনার টাকা জলে যাচ্ছে। তাই এই অঙ্কটাতে নজর রাখা জরুরি। যদি দেখেন যে এই অনুপাত ক্রমাগত বাড়ছে তখন আপনাকে টাকা অন্য কোনও ফান্ডে সরানোর কথা ভাবতে হবে। যদি না আপনি অদক্ষ পরিচালকের হাতে আপনার কষ্টার্জিত সঞ্চয় ফেলে না রাখতে চান।