প্রতীকী চিত্র
ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে ২০২৪–এর একটি মাস। আগের বছরের মতো এই বছরেও মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও তাকে কেন্দ্র করে জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যয়ভার, বেকারত্ব ও সুদের হার পরিবর্তনের সমস্যা সবটাই থাকবে। আর সেই সব কিছুরই প্রভাব পড়বে আপনার পকেটেও। তাই বিনিয়োগের আগে ভাল করে ভেবে নিয়ে তারপর বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। সঞ্চয় বা বিনিয়োগ যাই হোক না কেন, পরিকল্পনা আপনার চাহিদার উপর ভিত্তি করেই করবেন। সঙ্গে ঝুঁকির দিকটিও মাথায় রাখবেন। এই বছরে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? ভেবেছেন কি? রইল টিপস।
যদি আপনি আর্থিক বিষয়ে একেবারে কম ঝুঁকি পছন্দ করেন, সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য বেছে নিতে পারেন সরকারি ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে বিভিন্ন মেয়াদী সঞ্চয়। যেমন– স্থায়ী আমানত যেখানে বর্তমান সুদের হার ৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ। তবে, বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বছরের প্রথমার্ধে এই হার বজায় থাকলেও কমতে পারে দ্বিতীয় অর্ধে। পিপিএফ বছরে ১.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা দেওয়া যায়, যা কর ছাড়ের আওতাভুক্ত। তা ছাড়া ১৫ বছরের পরে যা পাবেন, তার উপরে সুদও করমুক্ত। ডাকঘরে ৫ বছরের মাসিক আয় প্রকল্প ও (সুদ ৭ থেকে ৭.৪০ শতাংশ) এনএসসি (কর ছাড়ের সুযোগও রয়েছে)। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন সরকারি বন্ড, যেখানে সুদের হার ৭–৮ শতাংশের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। তবে এখানে বিনিয়োগ প্রায় ঝুঁকিমুক্ত হলেও ৭ থেকে ৮ শতাংশের বেশি রিটার্ন পাবেন না।
যদি আপনি অল্প ঝুঁকি নিতে আগ্রহী থাকেন, সে ক্ষেত্রে ব্যালান্সড মিউচুয়াল ফান্ডের বিষয়ে ভেবে দেখতে পারেন। কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও অনায়াসে রিটার্ন বাড়িয়ে নিতে পারেন। রয়েছে ডেট মিউচুয়াল ফান্ড, যেখানে আপনার টাকা সাধারণত স্থায়ী সিকিউরিটি, বন্ড ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া রয়েছে ডিভিডেন্ড পেয়িং স্টকস, যেখানে কিছু ব্লু চিপস কোম্পানির মাধ্যমে শেয়ার মার্কেট থেকে আপনি নিয়মিত ডিভিডেন্ড পেতে পারেন। রয়েছে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ)–এর সুবিধাও।
আর হাতে যদি বাড়তি কিছু সঞ্চয় থাকে, তাহলে একটু সাহস করে ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ বাড়িয়ে নিতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে সরাসরি ইকুইটিতে বিনিয়োগ বা ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ড, ফরেক্স ট্রেডিং অথবা হেজ ফান্ডস–এর মতো বিষয়গুলো। তবে, মনে রাখা ভাল, এই সব পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে ভরসা রাখতে হবে। এখানে এক দিকে যেমন আপনি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, অন্য দিকে রিটার্ন ৩০ থেকে ১০০ শতাংশ বা তারও বেশি হতে পারে। তবে অবশ্যই শেয়ার বাজারের উপরে চোখ রাখতে হবে, আর প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নিতে হবে।
এ ছাড়াও ২০২৪–এ সোনা বা রুপোয় বিনিয়োগ করতে পারেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, সোনায় বিনিয়োগের ইতিহাস বলছে, বিগত কয়েক বছরে রিটার্ন হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। অথবা সুযোগ থাকলে অবশ্যই নতুন আবাসন কেনার পরিকল্পনাও মাথায় রাখুন। কারণ, রিয়েল এস্টেট আপনাকে অন্তত পক্ষে ৯.৫০–১১ শতাংশ রিটার্ন দেবেই, দাবি বিশেষজ্ঞদের। আগামীতে কমতে পারে গৃহঋণে সুদের হারও।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।