ওকাকুরাকে প্রিযম্বদার চিঠি
সালটা সম্ভবত ১৯০২।
বম্বে বন্দরে একটা জাপানি স্টিমার দাঁড়িয়ে। রবীন্দ্রনাথের দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে সুরেন্দ্রনাথকে খাওয়াবেন বলে ওকাকুরার দরকার এক বোতল ‘সাকে’।
সুরেন্দ্রনাথের গায়ে নিজের কিমোনো চাপিয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ওকাকুরা উঠলেন স্টিমারে।
বিব্রত জিজ্ঞাসা আর সন্দেহ নিয়ে ছুটে এলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন কর্মীরা। এক-পা এগিয়ে, মাথাটা সামান্য ঝাঁকিয়ে নিজের পরিচয় দিতে ওকাকুরা শুধু বললেন, ‘‘ওকাকুরা।’’
হাঁটুতে হাত রেখে সামনের সবকটা মাথা এর পর নিমেষে নত হয়ে গেল। তীব্র নিশ্বাসের সঙ্গে তাঁরা বললেন, ‘‘ঘাস আমরা, আপনার পায়ের নীচে।’’
এশিয়াকে এক হবার ডাক দিয়ে বাংলার ভাবনার পালে এই ওকাকুরা লাগিয়ে দিয়েছিলেন জাপানের হাওয়া। সেই হাওয়ায় গা ভাসিয়ে, একশো বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ভেসে গেলেন ওকাকুরার দেশে। তাঁর বহু প্রতীক্ষিত প্রথম জাপান যাত্রা। বয়েসে এক বছরের ছোটো ওকাকুরার সঙ্গে প্রথম দেখা হবার চোদ্দো বছর পর।
ওকাকুরার জীবন ছিল ঘটনা আর বিতর্কে মোড়া। ইয়োকোহামার এক রেশম ব্যবসায়ীর ছেলে। ক্রমশ হয়ে ওঠেন জাপানের অগ্রগণ্য শিল্প-ইতিহাসবিদ। ভাবুক। আধুনিক শিল্প-কলা বিপ্লবের পুরোধা। সে-দেশে তাঁর তৈরি শিল্প-কলা চর্চা প্রতিষ্ঠান নিহোন বিজুত্সুইন। তারই হাত ধরে উঠে এসেছিলেন ও দেশের একঝাঁক সেরা শিল্পী।
ইংরেজিতে লেখা ওকাকুরার তিনটি বই ‘দ্য বুক অব টি’, ‘দ্য আইডিয়াল্স অব দ্য ইস্ট’ আর ‘দ্য অ্যাওয়েকনিং অব জাপান’ জাপানের বাইরে ওকাকুরাকে পরিচিত করে তোলে। আমেরিকার বস্টন মিউজিয়ম অব ফাইন আর্টস-এর এশিয়া বিভাগ গড়ে ওঠে ওকাকুরার পরিকল্পনায়।
১৯০২। স্বামী বিবেকানন্দকে জাপানের বিশ্বধর্ম সম্মেলনে নিয়ে যাবার অনুরোধ নিয়ে কলকাতায় এলেন ওকাকুরা। সঙ্গে স্বামীজির ফরাসি অনুরাগিণী জোসেফিন ম্যাকলাউড।
আনন্দে স্বামীজি বললেন, যেন পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই ভাইয়ের দেখা হয়ে গেল আবার।
ওকাকুরা পরিচিত হলেন স্বামীজির শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গে। নিবেদিতার সঙ্গেই ওকাকুরা উত্সাহী হয়ে পড়লেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা পরিকল্পনায়। তার উপর একেবারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন
নিবেদিতা-কুহকে।
শোনা যায়, স্বামীজি ওকাকুরার এই প্রবণতা মেনে নেননি। দু’জনের সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত চিড় ধরেছিল।
নিবেদিতা ওকাকুরার প্রতিভার মর্যাদা দিয়েছেন। ওকাকুরার বই ‘দ্য আইডিয়াল্স অব দ্য ইস্ট’-এর খসড়া আদ্যোপান্ত দেখে দিয়ে বইয়ের এক চমত্কার মুখবন্ধও লিখে দিয়েছিলেন তিনি।
এক বার ওকাকুরা হঠাৎ অসুস্থ হলে তাঁকে নিবেদিতা নিয়ে এলেন নিজের বাড়িতে। এক রাতে ওকাকুরার কষ্ট মাত্রা ছাড়ালে নিরলস সেবার পর ধুইয়ে দিলেন মাথা। নিবেদিতাকে বুঝতে সম্ভবত ভুল করেছিলেন ওকাকুরা। নিবেদিতার বাড়িতে তাঁর অসুস্থতার প্রহর আর নিভৃত শান্ত কথোপকথন তাঁকে যেন ভাসিয়ে দিয়েছিল। সে কথা স্বীকারও করেন নিবেদিতার কাছে। তাতেই কঠিন হয়ে যান নিবেদিতা। ওকাকুরাকে মনে করিয়ে দেন, ‘‘আর কিছু নই, আমি শুধু এক সন্ন্যাসিনী।’’
নিবেদিতাকে ওকাকুরা বলেছিলেন, তাঁর বাড়িতেই আজীবন-ঘর-খোঁজা এক পথিক শেষ অবধি খুঁজে পেলেন নিজের বাসা।
ওকাকুরার সেই উচ্চারণে অনভিপ্রেত এক ‘খিধের আগুন’ দেখেছিলেন নিবেদিতা।
জেসেফিন ম্যাকলাউডকে লেখা চিঠিতে ওকাকুরার প্রতি তাঁর অগাধ শ্রদ্ধার পাশাপাশি নিবেদিতা ওকাকুরাকে নিয়ে তাঁর তীব্র সংশয় আর অস্বস্তির কথাও জানিয়েছিলেন
ওকাকুরার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন নিবেদিতাই।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, নিবেদিতার কল্যাণে এক জাপানির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তাঁর।
ওকাকুরা সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তরুণ বৌদ্ধ গবেষক শিতোকু হোরিকেও। স্বধর্মের সন্ধানে হোরি তখন আকুল। জাপানে বসে যার কোনও সুরাহা হয়নি। তারই কারণে ওকাকুরার সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁরও।
ওকাকুরা শান্তিনিকেতনে যেতে পারেননি কখনও। কিন্তু ওকাকুরার সুপারিশে রবীন্দ্রনাথের সদ্য গড়ে ওঠা আশ্রম বিদ্যালয়ের প্রথম বিদেশি ছাত্র হয়ে শান্তিনিকেতনে সংস্কৃত শিখতে যান হোরি।
রেল ভাড়া আর সামান্য হাতখরচ দিয়ে হোরিকে শান্তিনিকেতনে পাঠান ওকাকুরা। তারপর তাঁর দায়িত্ব নেন রবীন্দ্রনাথ নিজেই। ভারতত্ত্ববিদ কাজুও আজুমার অনুবাদ করা শিতোকু হোরির দিনপঞ্জিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলার তাঁত যন্ত্রের অসম্পূর্ণতা দেখে রবীন্দ্রনাথের কথায় হোরি তাঁত যন্ত্রের নকশা আঁকছেন। কলকাতা গেলে রবীন্দ্রনাথ হোরির ফরমায়েশ করা সরঞ্জাম কিনে আনছেন। দামি ধুতি, লেখার কালি রবীন্দ্রনাথ হোরিকে উপহার দিচ্ছেন। চিন ও জাপানে চলে যাওয়া সংস্কৃত পুঁথি কপি করে দেশে ফেরাবার দায়িত্ব রবীন্দ্রনাথ হোরিকে দিচ্ছেন।
লাহৌর এক পথ দুর্ঘটনায় আঙুলে চোট পেয়ে ধনুষ্টঙ্কারে মারা যান রবীন্দ্রনাথের আশ্রম বিদ্যালয়ের প্রথম জাপানি ছাত্র শিতোকু হোরি। তার কিছু দিন আগেই মারা গেছেন কবি পত্নী মৃণালিনী।
অক্টোবর, ১৯০২। ভারত ছেড়ে ওকাকুরা ফিরে গেলেন জাপানে। দেশে ফিরে ওকাকুরা ভুললেন না রবীন্দ্রনাথ, জোড়াসাঁকো আর শান্তিনিকেতনে কবির আশ্রম বিদ্যালয়ের কথা।
১৯০৩-এ জাপান থেকে ওকাকুরা কলকাতায় পাঠালেন তাঁর সেরা দুই চিত্রকর শিষ্য তাইকান ইয়োকোয়ামা আর শুনসো হিশিদাকে। জোড়াসাঁকোয় অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথের সঙ্গে দুই দেশের অঙ্কন রীতির বিনিময় হল। আশ্রমের ছাত্রদের আত্মরক্ষার তালিম দিতে ওকাকুরার কাছে রবীন্দ্রনাথ আবদার করেছিলেন একজন জাপানি জুজুৎসু শিক্ষকদের।
১৯০৫-এ জাপান থেকে ওকাকুরা শান্তিনিকেতনে পাঠালেন জিন্নোত্সুকে সানো-কে। তিনবছর সানো জুজুৎসু আর জাপানি ভাষা শেখালেন আশ্রমের ছাত্রদের।
১৯১২। আমেরিকা যাবার পথে কলকাতায় চলে এলেন ওকাকুরা। দশ বছরে বদলে গেছে অনেক কিছুই। এক বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন নিবেদিতা।
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে সুরেন্দ্রনাথের বাড়িতে ওকাকুরার পরিচয় ধবধবে সাদা শাড়ি পরা, একচল্লিশে পা দেওয়া লতায় পাতায় রবীন্দ্রনাথের আত্মীয়া প্রিয়ম্বদা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
এত গভীর ছিল সেই প্রথম দেখার দাগ, ১৯১৩-র ১৫ সেপ্টেম্বর জাপান থেকে চিঠিতে প্রিয়ম্বদাকে ওকাকুরা লিখছেন,‘‘কাল আমাদের প্রথম-দেখার একবছর।’’
বুদ্ধিদীপ্ত, আকর্ষণীয়, একাকী কবি প্রিয়ম্বদাকে দেখে তাক লেগে গেল
ওকাকুরার। সেই আবেশ আমৃত্যু আচ্ছন্ন করে রাখল তাঁকে।
স্বামী ও পুত্রকে অকালে হারিয়ে প্রিয়ম্বদা তখন মায়ের সঙ্গে ঝাউতলা রোডের বাড়িতে থাকছেন।
কবিতা আর প্রবন্ধ লিখছেন। সামাজিক কাজকর্ম আর মেলামেশার ভিতর খুঁজছেন একাকীত্বের যন্ত্রণা ভুলে থাকবার ইন্ধন।
সম্ভবত প্রিয়ম্বদাকে নিজের বই ‘দ্য বুক অব টি’ উপহার দিয়েছিলেন
ওকাকুরা। বইটি পড়ে ইংরেজি অনুবাদসহ ওকাকুরাকে একটা কবিতা লিখে পাঠান প্রিয়ম্বদা।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে আবার চিঠি লিখে সুরেন্দ্রনাথকে নিয়ে বাড়ি আসতে বলছেন তাঁকে। লিখছেন, ‘‘চা খেতে আসতে বলার সাহস নেই আপনাকে। সুরেনকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের মিষ্টি আর শরবত খেয়ে যাবেন।’’
জাপানের চা উত্সবের
শ্রুতকীর্তি বোদ্ধাকে চায়ের নিমন্ত্রণে আহ্বানের সাহসই নয় শুধু,
মহিলাদের ঘনঘন প্রেমে পড়া জ্যোতির্ময় জাপানি সারস্বত সাধক ওকাকুরাকে একা ডাকার সাহস সম্ভবত প্রথম প্রথম হারিয়েছিলেন প্রিয়ম্বদা। এর পর এক সময় তাঁর সাহস ফিরে এলেও, একা ওকাকুরার মুখোমুখি হবার সুযোগ আর ফিরে আসেনি কোনও দিন।
ওকাকুরাকে লেখা প্রিয়ম্বদার ১৫টি চিঠি যত্নে সংরক্ষিত জাপানের ইজুরায় ওকাকুরা স্মারক সংগ্রহালয়ে। প্রিয়ম্বদাকে লেখা ওকাকুরার ১৯ টি চিঠির বর্তমান ঠিকানা বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন। পরস্পরকে ইংরেজিতে লম্বা লম্বা চিঠি লিখতেন ওকাকুরা আর প্রিয়ম্বদা। দুজনের চিঠি নিবিড় আবেগে সম্পৃক্ত। বস্টনই হোক, অথবা ইজুরা, প্রিয়ম্বদার চিঠি, কবিতা আর ফটোগ্রাফের অধীর অপেক্ষায় থাকেন ওকাকুরা।
নিবেদিতাকে তিনি বলেছিলেন, সারা জীবন যে ঘর খুঁজেছেন তা-ই যেন শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেলেন নিবেদিতার বাসায়।
আর প্রিয়ম্বদাকে লিখলেন, সারা জীবন তিনি যে বৃক্ষের খোঁজে ছিলেন, তার দেখা পেলেন প্রিয়ম্বদার ভিতর। লিখলেন, দু’জনের ভৌগোলিক দূরত্ব তাঁকে উতলা করে তুলেছে।
লিখলেন, ‘‘তোমার গাছের পাঁপড়ি তোলার বারণ থাকে যদি, দূর থেকে তার সৌরভে কি স্নান করতে পারি?’’
ভারত ছেড়ে আমেরিকায় রওনা হবার আগে প্রিয়ম্বদাকে ওকাকুরা লিখলেন, ‘‘যতই তোমার তীরের থেকে সরে আসছি, অদ্ভুত এক বিষণ্ণতা গ্রাস করছে আমায়। ফিরতে চাই আমার প্রিয় বাংলায়।’’
এক সময় দেখা যাচ্ছে, ভাষার দেওয়াল ভেঙে প্রিয়ম্বদার হৃদয়ে কান পাতার তাগিদে বাংলা শেখার তোড়জোড় করছেন ওকাকুরা। কোথায় পাবেন বাংলা ব্যাকরণের বই?
শেষমেষ সেই বই কিনে ওকাকুরাকে জাপানে পাঠালেন প্রিয়ম্বদা স্বয়ং। সঙ্গে জানতে চাইলেন,‘‘সত্যি বলো আমার চিঠি এখন আর চাইবে কিনা, যেহেতু তুমি বাড়ি ফিরেছ।’’
জানতে চাইছেন, ‘‘ঠিক কবে তোমার মনে ধরল আমার কথা?’’, ‘‘ভয় করে না? আমি একটা মায়া ভেবে?’’
প্রিয়ম্বদাকে নিত্য নতুন সম্বোধনে নিজের আদর উজাড় করে দিতেন ওকাকুরা। এক বার চন্দ্রমল্লিকার চিহ্ন দেওয়া কিমোনোও পাঠান প্রিয়ম্বদাকে।
২১ অগস্ট ১৯১৩। প্রিয়ম্বদাকে ওকাকুরা লিখলেন তিনি খুব অসুস্থ।
বিছানায় শুয়ে চিঠি লিখছেন, ওকাকুরা। চারপাশে উষ্ণ প্রস্রবণ। মৃত এক আগ্নেয়গিরির উপর নিজের প্রিয় এক আবাস থেকে নিজের অজান্তে প্রিয়ম্বদাকে তাঁর শেষ চিঠি লিখছেন ওকাকুরা। জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে কালো পাইনের অরণ্য মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড় চূড়া। বাইরের মেঘ এসে ঘুরে ঘুরে ছুঁয়ে যাচ্ছে ওকাকুরার বালিশ।
প্রিয়ম্বদাকে লিখছেন, ‘‘আজ এখানে তুমি যদি আমার কাছে থাকতে...।’’
২ সেপ্টেম্বর ১৯১৩। প্রিয়ম্বদার গোপন গানে ভেসে আকাকুরায় তাঁর বাড়িতে প্রয়াত হলেন ওকাকুরা।
তাঁর শেষ চিঠি সম্ভবত তখনও পৌঁছায়নি কলকাতার ঝাউতলা রোডে তাঁর ‘পদ্ম-হৃদয়’ প্রিয়ম্বদার হাতে।
প্রিয়ম্বদাদেবী
রবীন্দ্রনাথ জোর গলায় স্বীকার করেছেন, ওকাকুরার সঙ্গে পরিচয়ের আগে চিন আর জাপানের বিষয়ে তাঁর খুব একটা ধারণাই ছিল না।
৩ মে ১৯১৬। জাপানি মালবাহী জাহাজ তোসামারু রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে রওনা হল জাপানের পথে।
সঙ্গী মুকুলচন্দ্র দে, উইলিয়ম পিয়ারসন আর চার্লস ফ্রিয়ার এন্ড্রুজ। কাজলকালো জল কেটে জাহাজ এগোচ্ছে স্বপ্নে দেখা, গল্পে শোনা জাপানের দিকে।
চারপাশে জল আর সীমানাহীন আকাশের হাতছানি। ঝোড়ো হাওয়া আর পাহাড়ের মতো উঁচু ঢেউ তছনছ করে দেয় জাহাজের ডেক।
চিন সাগরে মধ্যরাতে বৃষ্টি এল খুব। অঝোর বর্ষণে জাপানযাত্রী কবি একের পর এক গেয়ে চললেন আপন গান: ‘‘শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে...।’’
সেই রাতেই গেয়ে উঠলেন নতুন এক গান : ‘‘তোমার ভুবনজোড়া আসনখানি, আমার হৃদয় মাঝে বিছাও আনি।’’
২৯ মে ১৯১৬। রেঙ্গুন, পেনাং, সিঙ্গাপুর, হংকং হয়ে তোসামারু এল জাপানে।
কোবে বন্দরে কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে পরিচিত কয়েকটি মুখ— শিল্পী তাইকান য়োকোয়ামা, শ্যোকিন কাত্সুতা, শুনসো হিশিদা, আর জাপানি পণ্ডিত একাই কাওয়াগুচি।
নেই শুধু একজনই।
রাতের তারা দিনের রবির মায়া কাটিয়ে তার তিন বছর আগে অপার অনন্তের পথে হেঁটে গেছেন ঋষি কবির ওকাকুরা কাকুজো।