অনুবাদ আসলে এক শিশি থেকে অন্য শিশিতে আতর ঢালার মতো। ঢালা যায় ঠিকই, কিন্তু অনেকটা সুগন্ধ মাঝের বাতাসে হারিয়ে যায়। বলেছিলেন কে যেন। আর স্বয়ং গালিবকে অনুবাদের চেষ্টা আমার কাছে স্পর্ধারই নামান্তর। তাঁকে যেটুকু পড়ি, মূল ভাষায় পড়েই বোঝবার চেষ্টা করি। উর্দু ভাষার নিজস্ব গঠনই এমন যে তার ভাবকে অনুবাদ করা গেলেও ভঙ্গিকে কখনওই যায় না। আর ভঙ্গি বা পেশ করার মেজাজটাই উর্দু ভাষাকে বাকিদের চাইতে রাজকীয় করে রেখেছে বলে আমার ধারণা।
সেই ভাষায় যখন খোদ গালিবের মতো একজন কবি লিখতে আসেন, তখন উর্দু তার ভাব, ভঙ্গি, গঠন ও প্রকাশের শীর্ষ স্পর্শ করে। আমরা সেই চূড়ার দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হতে পারি মাত্র, সেই উচ্চতার সহস্র ভাগের একভাগও অনুবাদে আনতে পারি না। তা সত্ত্বেও, পত্রিকার সম্পাদক মশায়ের কথায় এই দুঃসাহসী কাজে হাত দেওয়া। মির্জ়ার ভাবকে ধরবার ব্যর্থ প্রয়াসই থাকল এখানে, শব্দের নিপুণ ব্যবহার বা ভঙ্গির রাজকীয়তা অধরাই থেকে গেল। সে আমার অক্ষমতা, অনস্বীকার্য।—অনুবাদক