ঠাকুরবাড়ির মঞ্চগান

তিনদিন ধরে অ্যাকাডেমি থিয়েটারের উদ্যোগেজোড়াসাঁকো নাট্যশালার দেড়শো বছর পূর্তিতে অ্যাকাডেমি থিয়েটার নিবেদন করল তিন দিনের উৎসব ‘জোড়াসাঁকো মঞ্চগাথা’। প্রথম পর্বে ছিল রবীন্দ্রভারতী থিয়েটার রেপার্টরির নাটক ‘ফাগুন রাতের গপ্পো’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২২
Share:

জোড়াসাঁকো নাট্যশালার দেড়শো বছর পূর্তিতে অ্যাকাডেমি থিয়েটার নিবেদন করল তিন দিনের উৎসব ‘জোড়াসাঁকো মঞ্চগাথা’। প্রথম পর্বে ছিল রবীন্দ্রভারতী থিয়েটার রেপার্টরির নাটক ‘ফাগুন রাতের গপ্পো’। দ্বিতীয় পর্বে ‘জোড়াসাঁকো মঞ্চগাথা’। জোড়াসাঁকো মঞ্চের পূর্বাপর মঞ্চগান ঘিরে এ প্রযোজনার রচনা ও নির্মাণ দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। স্বদেশি নবজাগরণের উন্মেষ পর্বে ঠাকুরবাড়ি মেতে উঠল থিয়েটারি চর্চায় মুলত জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আর গুনেন্দ্রনাথের উদ্যোগে। জ্যোতির আত্মকথনে মেলে গোপাল উড়িয়ার ‘বিদ্যাসুন্দর’ পালাগানে তাঁদের মনে জাগে মঞ্চভাবনা। সেই নাট্যের গান ‘মালিনী তোর রঙ্গ দেখে’ গেয়ে মাতিয়ে দিলেন দেবজিত। পরে মধুসূদন দত্তের ‘কৃষ্ণকুমারী’র ‘তারে না হেরে’ প্রতিষ্ঠা পেল শিল্পীর কণ্ঠে। নাট্য প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাও করেছিলেন জোড়াসাঁকোর উদ্যোক্তারা। পুরষ্কৃত নাট্যকার রামনারায়ণ তর্করত্নের ১৮৬৭-র প্রযোজনা ‘নব-নাটকের’ ‘মুখ হেরিব না আর ’ গাইলেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

পরে শিল্পী গাইলেন ১৮৫৭-এ অভিনীত জ্যোতির ‘সরোজিনী’ নাটকে রবীন্দ্রনাথের প্রথম গান ‘জ্বল জ্বল চিতা’। ঠাকুরবাড়ির মেয়ে স্বর্ণকুমারীর পছন্দের গান বঙ্কিমচন্দ্রের ‘মৃণালিনীর’ ‘সাধের তরণী আমার’ মূর্ত হয়ে উঠল দেবজিতের গায়নে। তেমনই গাইলেন ‘শঙ্করা’ রাগাশ্রিত জ্যোতির ‘মানময়ী’র মঞ্চগান ‘শুনলেম নাকি নিদারুণ মানে’। ঋদ্ধির কণ্ঠে তেমনই মুগ্ধতা মিলল স্বর্ণ-র মঞ্চনাট্য ‘বসন্ত উৎসব’-এর ‘নিঃঝুম নিঃঝুম’ গানে। বা ‘ইটালিয়ান ঝিঁকিট’-এ নিবদ্ধ ‘অশ্রুমতী’-র গান ‘প্রেমের কথা আর বোল না’তে। পর পর গাইলেন দ্বিজেন্দ্রলালের ‘চাহি অতৃপ্ত নয়নে’, রবীন্দ্রনাথের বিসর্জন নাট্যের ‘তিমির দুয়ার খোলো’, ইন্দিরা দেবী চৌধুরানির ‘পরীর বর’ নাট্যের ‘জোছনা সাগরে লেগেছে ঢেউ’। তবেরবীন্দ্রনাট্য ‘বাল্মীকি প্রতিভা’র ‘রাঙাপদ পদ্মযুগে’ ‘নটীর পূজা’র ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো’, দ্বিজেন্দ্রলালের ‘কল্কি অবতারের’ ‘হো বিক্রমাদিত্য রাজার’, অবনীন্দ্রনাথের পরশুরাম-আশ্রিত নাটক ‘লম্বকর্ণ-পালা’র ‘বেলেঘাটা যাত্রাসদনের’ গানগুলিতে দেবজিত্ আবিষ্ট করে রাখেন শ্রোতাদের। সব শেষে ছিল দেবজিত্ ও ঋদ্ধির জ্যোতির ‘পুনর্বসন্ত’ নাট্যে অনুজ রবির গান ‘আয় তবে সহচরী’। গানের ফাঁকে সময়-কাল-কাব্য-কাহিনির ইতিহাসকে সাবলীল সংযোজনায় ভরিয়ে তুললেন দেবাশিস বসু।

সংগীত সহযোগিতায় প্রশংসার দাবি রাখেন দেবাশিস সাহা, সৌম্যজ্যোতি ঘোষ, সন্দীপ বাগ এবং তালবাদ্যে অমিত মুখোপাধ্যায়, প্রীতম সাহা, ঋদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিলু দত্তের মঞ্চসজ্জা আর বাবলু রায়ের আলোয় জোড়াসাঁকোর মঞ্চগাথার পরিবেশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement