আপনার বাড়ির স্নানঘর হয়ে উঠুক ব্যক্তিগত স্পা! কথাটা শুনে অবাক হবেন না। ভাবছেন তো, সাঁলোর স্পা-এর যা খরচ, তা যদি ঘরে তৈরি করতে হয়, না জানি তার বাজেট কোনখানে গিয়ে ঠেকবে? এই ধারণাটা পালটে ফেলার সময় এসেছে। আপনি চাইলে নিজের বাড়ির বাথরুম স্পা-এর উপযোগী করে ফেলতে পারেন। সে বাথরুম বড় পরিসর নিয়েই হোক বা ছোট। সব রকম আকারের বাথরুম স্পা-র জন্য উপায় বাতলে দেবে পত্রিকা।
স্পা মানে যেখানে আপনি সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে হয়ে উঠবেন ঝরঝরে। এর জন্য দরকার ছোটখাটো পরিবর্তন আর কয়েকটি জিনিসের সংযোজন।
রং: বাথরুমের দেওয়ালের রং, বেসিন, কমোড, বাথটাব, পরদা সব কিছুর রং এমন হবে যাতে চোখের আরাম হবে, মনে শান্তি দেবে। এর জন্য পারফেক্ট সাদা, হালকা সবুজ, হালকা নীল, উডেন কালার বা টেক্সচার। হালকা রঙের জন্য বাথরুম বড়ও দেখায়।
শো-পিস: বাথরুমের দেওয়ালে লাগাতে পারেন একটি বা দু’টি ফ্রেম করা ফোটোগ্রাফ বা পেন্টিং। তবে অবশ্যই সেটা আকারে বড় হবে না। আবার একগাদা ফ্রেম দিয়ে দেওয়াল ভরিয়ে ফেলবেন না। ছবির পাশাপাশি ফুল ও গাছ ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বাথরুমের জানালা, বেসিন বা বাথটাবের পাশে সেরামিকের টবে রাখতে পারেন ইন্ডোর প্ল্যান্ট, যেমন ইউক্যালিপটাস বা লাকি ব্যাম্বু। ইউক্যালিপটাস গাছের নিজস্ব সুগন্ধ আছে। গাছ রাখা ও তার যত্ন সমস্যার মনে হলে মানানসই ফুলদানিতে রাখতে পারেন লিলি, গোলাপ বা জারবেরা। কাচের বাটিতে জলের মধ্যেও ডাল ভেঙে পাতা ছেঁটে রাখতে পারেন এই সব ফুল।
বাথটাব: উষ্ণ গরম জলে চার-পাঁচ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল বা ইউক্যালিপটাস অয়েল ফেলে স্নান করুন। শুষ্ক ত্বক ও মাথা ব্যথার জন্য ল্যাভেন্ডার অয়েল, পেশির আরামের জন্য রোজমেরি অয়েল, তাৎক্ষণিক এনার্জির জন্য অরেঞ্জ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপ্রিকট স্ক্রাবার দিয়ে মাসাজ করলে ত্বক হবে নরম ও সতেজ। স্নানের জলে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীন সময় থেকে। পাপড়ির বদলে জলে মিশিয়ে নিতে পারেন গোলাপজল। যা ত্বকের পক্ষে যেমন ভাল, তেমন অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়ালও। এতে ভাল ঘুমও হয়। কিন্তু এ সবের জন্য দাঁড়িয়ে স্নান করার চেয়ে বাথটাবে শুয়ে রিল্যাক্স করতে পারলে উপকার হয় বেশি। বাথটাবের জন্য বাথরুমের আকার বিরাট হবে হবে এমন নয়। ছোট বাথরুমের জন্য উপযোগী জাপানি সোকিং টাব। এই টাবগুলো সাধারণত ২৭ ইঞ্চি গভীর হয়।
শাওয়ার: টাব বসাতে না চাইলে বা পরিস্থিতি না থাকলে শাওয়ারের মুখে রেন শাওয়ার হেড লাগিয়ে দিন। এতে বৃষ্টির নরম ফোঁটার মতো জল আপনার ক্লান্তি ধুয়ে দেবে। উপযুক্ত অয়েল মাসাজ করে কিছুক্ষণ শাওয়ারের নীচে দাঁড়ালে শরীরের ক্লান্তি দূর হবেই।
ফ্লোর: নজর দিতে হবে বাথরুমের ফ্লোরে। উডেন ফ্লোর অনেক বেশি প্রাকৃতিক লাগে। কিন্তু সত্যিকারের কাঠ দিয়ে বাথরুমের ফ্লোর তৈরি সম্ভব নয়। কাঠের ন্যাচারাল ফিলিং আনতে ব্যবহার করা যেতে পারে ফক্স উড টাইলস। এগুলো সেরামিক বা পোর্সেলিনের হয়।
ম্যাট: গোটা ফ্লোর বদলে ফেলতে না চাইলে বদল আনুন বাথরুম ম্যাটে। পেবল, মস, সেডার বাথ ম্যাট, বা কাঠের বাথম্যাট আপনার বাথরুমে আনবে প্রকৃতির ছোঁয়া।
সুগন্ধী মোম: বাথটাবের সুগন্ধী অয়েল মিশ্রিত উষ্ণ জলে শরীর ডুবিয়ে রাখার সময় বাথরুমের জোরালো আলোটা বন্ধ করে দিন। জ্বেলে ফেলুন সুগন্ধী মোম। টাবের কাছে থাকুক কাঠের বা বাঁশের ট্রে। তাতে রাখুন সুগন্ধী মোম, ফুল, গোলাকার ভাঁজ করে রাখা তোয়ালে। রাখতে পারেন পানীয়ের গ্লাসও। অল্প মোমের আলো, ও হালকা সুগন্ধ আপনার শরীর ও মনকে করে তুলবে তরতাজা।
মিউজিক: স্পা-এর ষোলো কলা পূর্ণ হবে হালকা সংগীতের সংযোজনে। হালকা এবং ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক শোনার জন্য বাথরুমে লাগিয়ে নিন ব্লু-টুথ স্পিকার। যা মোবাইল বা ল্যাপটপের সাহায্যে চালানো যায়। খেয়াল রাখবেন স্পিকারে যাতে জল না লাগে। বাথরুমের জন্য বাজারে পাওয়া যায় ওয়াটারপ্রুফ স্পিকার।