প্রাচ্য-র ‘নীলিমা’ নাটকে। দেখলেন পিয়ালী দাস
প্রচ্য-র প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হল ‘নীলিমা’ নাটকটি। পরিচালনায় বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউজিন ইওনেস্কোর ‘দ্য লেসন’ এই ফরাসি নাটক অবলম্বনে রচিত। রূপান্তরে উদয়ন ঘোষ। নাটকের বিষয় শিক্ষাব্যবস্থার অন্তঃসারশূন্যতা। মুখস্থ বিদ্যাই যেখানে বড়। পরিচালকের কথায় ‘বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা একটা অত্যাচার, পৈশাচিক পদ্ধতি। একটা সিস্টেমকে ডেভলপ করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে’।
‘নীলিমা’-কে ব্ল্যাক কমেডি বলা চলে। ফ্যান্টাসি, ব্যঙ্গ-কৌতুকের মোড়কে বিষয়টিকে উপস্থাপন করেছেন পরিচালক। ট্রিটমেন্টের গুণে নাটকটি অন্য মাত্রা পায়।
নাটকের শুরুতেই দেখা যায় জোকারদের পড়াশোনা। সবাই অদ্ভূত স্বরে সমবেতভাবে পড়া মুখস্থ করছে। এই দৃশ্য বাড়তি আগ্রহ তৈরি করে নাটকের পরবর্তী দৃশ্যগুলির প্রতি। সেটও উল্লেখ করার মতো। মঞ্চের নীচ থেকে ওপর পর্যন্ত একটি অংশ জুড়ে বিশাল লাইব্রেরি। ক্লাসরুমের চারিদিকে বই ছড়ানো। নীলিমা এসেছে অধ্যাপকের কাছে পড়তে। অধ্যাপক প্রথম থেকেই ছাত্রীর মেধার পরীক্ষা নিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীকে বোঝার পরিবর্তে নিজের বিদ্যে জাহির করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে শিক্ষাদান এবং গ্রহণের মধ্যে ভারসাম্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়। এক বিরক্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কখনও একই কথার পুনরাবৃত্তিতে (আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছি...), কখনও জোকারদের ড্রাম পিটানোর বীভৎস আওয়াজে অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে দর্শকদের মধ্যেও। ইউজিন ইওনেস্কো, উদ্ভট নাট্যকার হিসেবেই যাঁর জগৎজোড়া খ্যাতি। তাঁর নাটকের বৈশিষ্ট্যগুলোও নিখুঁতভাবে এ নাটকে তুলে ধরেছেন পরিচালক।
খ্যাপাটে, উত্তেজিত অধ্যাপকের ভূমিকায় মুগ্ধ করেন গৌতম হালদার। তাঁর নিজস্ব ঘরানার অভিনয়ের পাশাপাশি, উত্তেজনার মুহূর্তের তোতলামির ভঙ্গিমা মনে থেকে যায়। বাংলা ভাষার শিক্ষক (ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়-এর আদলে) এবং বিজ্ঞানী (আইনস্টাইন-এর আদলে), দ্বৈত ভূমিকাতেই মুগ্ধ করেন তিনি। শিক্ষকের বেশে — সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি, চোখে মোটা ফ্রেমের কালো চশমা, নেচে নেচে শিক্ষা দান হাসির উদ্রেক করে। ছাত্রীর ভূমিকায় মনে ধরে শাঁওলী চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়। পরিচারিকার (রীনা হালদার) মাঝে মাঝেই ঝাঁটা হাতে আগমন, অধ্যাপকের প্রতি খবরদারি-নজরদারির দৃশ্যটিও মনে রাখার মতো। এ নাটকে নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা ব্রাত্য বসুকে পাওয়া যায় সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায়। নাটকের আলো এবং আবহ করেছেন তিনি। কস্টিউম (দ্যুতি হালদার ও সৌম্য মুখোপাধ্যায়) এবং মেক-আপ (মহ. ইস্রাফিল) ও নাটকে বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছে।
ছকে বাঁধা যে জীবন
ঐহিক প্রযোজিত ‘থোড় বড়ি খাড়া’ নাটকে
সম্প্রতি অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হল ঐহিক প্রযোজিত নাটক ‘থোড় বড়ি খাড়া’। মধ্যবিত্ত বাঙালির আটপৌরে অনিশ্চয়তার জীবন যেন ছকে বাঁধা, গতানুগতিক! তারা অল্পতে সন্তুষ্ট নয়। সাধ আর সাধ্যের ফারাকটা না বুঝেই অসম্ভবের পিছনে ছুটে চলা।
বাস্তবের রুক্ষ জমিতে পতিত হয়ে ব্যর্থ হয় প্রেমও। কখনও বা আবার বাঙালির পারিবারিক জীবনে শাশুড়ি-বৌমার চিরাচরিত অম্ল-মধুর সম্পর্ক। শিশুরাও যেন অনিচ্ছাসত্ত্বেও প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে সামিল। স্বার্থসর্বস্ব বাঙালীর জীবন, যেখানে গুণের কদর না করে শুধুমাত্র অর্থমূল্যের দ্বারা সাফল্য বিচার করা হয়। সব মিলিয়ে আজ বাঙালি যেন একটা ক্ষুদ্র গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ।
এই রকম কিছু টুকরো টুকরো দৃশ্য নাটকে উপস্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বাঙালি কি সত্যিই সম্ভব-অসম্ভবের সীমারেখা অতিক্রম করে এই সবের থেকে বেরিয়ে এসে বৃহত্তর পৃথিবীতে মিশতে পারবে? এই নিয়েই নাটক। নাটকের বক্তব্য সহজ হলেও প্রথম দিকে নাটকের গতি খুবই মন্থর ও খাপছাড়া।
প্রেমিক অর্ণবের ভূমিকায় শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়, শাশুড়ি স্বাতী রায় এবং বাবুদা অরিন্দম রায় সাবলীল। বৌমার ভূমিকায় অনিন্দিতা ধারা কিছুটা আড়ষ্ট। নাটক স্বাতী রায়ের। পরিচালনায় অরিন্দম রায়।
পিনাকী চৌধুরী
কোনও রূপকথা নয়
ঠাকুরদাদার ঝুলি। লিখছেন বারীন মজুমদার
অনিন্দিতার ঠাকুরদাদার ঝুলি কোনও রূপকথা বা কল্পকাহিনী নয়। সত্যিই ঠাকুরদাদার ঝুলির কাহিনি। কেননা তিনি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি। নজরুলের দুই পুত্র কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধর অকাল প্রয়াণ ঘটেছে। আছেন পুত্রবধূ কল্যাণী কাজী, নাতি নাতনি কাজী অনির্বাণ ও অনিন্দিতা কাজী। তাই কল্যাণী আর অনিন্দিতার কাছ থেকে পাওয়া গেল তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক অজানা তথ্য। সঙ্গে দেখা গেল কাজী অনির্বাণের সংগ্রহ থেকে কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি যা সমগ্র অনুষ্ঠানে পিছনের পর্দায় ফুটে উঠল। এই রচনা ও গানের সংকলন করেছেন অনিন্দিতা নিজে। শুরুতেই কল্যাণী যথার্থই বলেছেন, প্রায় তেষট্টি বছরের স্মৃতি অল্প কথায় বলা যায় না। তাঁর গানে, তাঁর কবিতায় ও তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে যে প্রাণের প্রকাশ ঘটেছিল এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ ছিল সেটাই শোনানোর। যে কবি নিজে বলেছিলেন ‘আমি কবি হতে আসিনি। আমি নেতা হতে আসিনি। সবার মাঝে আমি প্রেম পেতে এসেছিলাম — আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম।’ নজরুলকে নিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রতিবেদকের আগে দেখার সুযোগ ঘটেনি।
রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এই দুই কবির আবির্ভাবের মধ্যে আটত্রিশ বছরের ব্যবধান। তাঁদের মধ্যে অগ্রজ ও অনুজের যে মধুর সম্পর্ক ছিল সে তথ্যও উঠে এসেছে এই রচনায়। অথচ কত ভ্রান্ত প্রচার অনেক সময়েই রচিত হয়েছে। মুক্তপ্রাণ, ঈশ্বরবিশ্বাসী কাজী নজরুল বালক বয়স থেকেই ধর্মচর্চায় নিজে নিযুক্ত ছিলেন বলে বিশ্বাস করতেন ধর্ম মানুষকে আলাদে করতে পারে না। মন্দির ও মসজিদ-এর অবয়ব এক হয়ে গিয়েছিল তাঁর চোখে। তাই তো তিনিই লিখতে পারেন ‘জাতের নামে বজ্জাতি সব’ গানটি। এক দিকে যেমন লিখেছেন কাব্যগীতি, শ্যামাসঙ্গীত, তেমনই লিখেছেন ইসলামিক গজল। বাংলা গজলে এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। জীবন কাহিনি বর্ণনা করার ফাঁকে ফাঁকে এসেছে গান, কবিতা-সবই অনিন্দিতার কণ্ঠে। তিনি যে এত দরদ দিয়ে গান করেন তা জানা ছিল না। আমরা তো কত নজরুলগীতি শুনি। কিন্তু গানের আগে অত কথা বলেও তাঁকে রাগের আলাপ, তান কিছুই করতে হয় না। যে ভাবে তাঁর ঠাকুরদা গানগুলিতে সুর দিয়েছেন সেই সহজ সরল ভঙ্গিতেই তিনি গানগুলি শুনিয়েছেন এক অসাধারণ চলনে। গানগুলির মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় ‘জানি জানি প্রিয়’, ‘ব্রজগোপী খেলে হোরি’, ‘যদি কোনোদিন চোখে আসে জল’, ‘শূন্য এ বুকে’। শেষোক্ত গানটির আগে ‘রক্ত ঝরাতে পারি নি’ পাঠটি আমাদের চেতনায় নাড়া দেয়। নজরুল ইসলাম বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন বিয়াল্লিশ বছর বয়সে। স্তব্ধ প্রেক্ষাগৃহে এমন সুন্দর জীবনী নির্ভর অনুষ্ঠান আরও বড়ও আকারে হলে বহু শ্রোতার গোচরে আসত।
সুরসাধনায় মাউথ অর্গান
বারীন মজুমদার
বিদেশ বা এদেশেও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসরে একক ভাবে, কখনও বা দ্বৈত ভাবে যন্ত্রসঙ্গীতের আসর বসে। কিন্তু লঘু যন্ত্রসঙ্গীতে তেমন শোনা যায় না। এক সময় তিমিরবরণ কৃত বৃন্দাবন শোনা যেত। পরবর্তী কালে ভি বালসারার আসর শুনতেও দর্শকাসন ভরে যেত। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সে সবেরও বদল ঘটেছে। হয়তো উদ্যোগের অভাব। সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ববিতা বসুর সৌজন্যে হারমোনিকা বা মাউথ অর্গান শোনা গেল যার আয়োজনে ছিল ‘সুরসাধনা’। এটি সংস্থার সমবেত বাদন। মুখ্য বাদিকা ছিলেন ববিতা বসু। তিনি সঙ্গীতের চর্চা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে। পরবর্তী সময়ে কণ্ঠ সাধনা ছেড়ে মনোনিবেশ করেন যন্ত্রতে। যা জানা গেছে তা হল তিনি কিবোর্ড শিল্পী রাণা দত্তর কাছে দীর্ঘ কাল ধরে শিখে চলেছেন এবং তিনিই দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম মহিলা শিল্পী যাঁর হারমোনিকার অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এদিন তাঁর সহশিল্পীরা ছিলেন রাণা দত্ত (কিবোর্ড), শুভজ্যোতি দত্ত (গিটার), টিটো দত্ত (অক্টোপ্যাড) ও পলাশ রায় (গিটার)। অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে অনেক পুরনো দিনের গানের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন।
তিনি শুরু করলেন ১৯৪৮-এ বিটলস-এর একটি রচনা দিয়ে এবং সেই সঙ্গে যুক্ত করলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘জাগরণে যায় বিভাবরী’ গানটিকে। সুরগুলি তিনি চমৎকার ধরেছেন। কর্নেল বুগিস মার্চ-এর সঙ্গে দোশাত্মবোধক গানের যে মিলন ঘটিয়েছেন এককথায় অপূর্ব। আবার কানন দেবীর ‘তুফান মেল’-এর গান বাজানোর সময় পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে আর একটি ট্রেন চলে যাবার মুহূর্তটি যন্ত্রের মাধ্যমে ধরেছেন তাও বিস্ময়কর। তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত জনপ্রিয় বাংলা গান ছিল ‘চল রীণা ক্যসুরিনা যা তিনি ফিরিয়ে আনলেন তাঁর বাদনের মাধ্যমে। বর্তমানের ‘রং দে মোহে গেরুয়া’ও শুনিয়েছেন। তিনি শেষ করলেন ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়’ গানটি বাজিয়ে।
রঙ্গের সঙ্গে ব্যঙ্গ
মুম্বইয়ের প্রযোজনাটি দেখলেন মনসিজ মজুমদার
আদ্যম ও সঙ্গীত কলা মন্দির-এর যৌথ উদ্যোগে মুম্বইয়ের রেজ নাট্যদলের প্রযোজনায় ইংরেজি নাটক ‘দ্য সিন্ধুস অব আপার জুহু’ সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল কলকাতায়। উচ্চলোকের সিদ্ধাইয়ের মতো সিধু দম্পতি- বলবিন্দর আর বেহরোজ —মুম্বইয়ের উচ্চবিত্ত এলাকায় এক বহুতল সৌধের চৌদ্দতলার বাসিন্দা। সারা জীবনের সঞ্চয়ে এমন উচ্চলোকের ফ্ল্যাট কিনে হাজারো বিপাকে পড়ে সিধুরা, কলে জল থাকে না, লিফট কাজ করে না, কার্ডবোর্ডের মতো দেয়াল, কান-ঝালাপালা- করা প্রতিবেশী আর তাদের কুকুরের নিরন্তর ডাক, খুব নিচ দিয়ে উড়ে-যাওয়া প্লেনের বিকট আওয়াজ। এতেই সিধু কর্তার বিপত্তির শেষ হয় না, একদিন চোরে কর্তার ব্ল্যাক লেবেল সমেত সর্বস্ব লোপাট করে। ইতিমধ্যে সিধু কর্তার চাকরিও চলে যায়।
একসঙ্গে এত ঝঞ্ঝাটে তিতিবিরক্ত সিধুকর্তার আচরণে ও উচ্চারণে দর্শকের হাসির রোলে উপচে পড়ে। কিন্তু প্রহসনের মোড়কে যে তীব্র ব্যঙ্গ তা লক্ষ ভ্রষ্ট হয় না। নাগরিক জীবনের যত কিছু ঝামেলা এবং তার জন্যে দায়ী যা এবং যারা – পুরকর্তা থেকে অসৎ প্রমোটর, মধ্যবিত্ত হয়েও উচ্চবিত্তের জীবনবাসনা — সব কিছুই পরিচালক ও নাট্যকার রাহুল ডাকুনহার এই প্রহসনে ব্যঙ্গ করেছেন। কিন্তু ব্যঙ্গের সঙ্গে রঙ্গের চমৎকার মিশেলে প্রহসন ঝকঝকে কৌতুকের কমেডি হয়ে উঠেছে। এত ঝুট-ঝমেলায় সিধু দম্পতির নিদারুণ পরিস্থিতি দেখে দর্শক হাসিতে ফেটে পড়েন, কিন্তু সহানুভূতির খামতি হয় না। কারণ সিধুকর্তার রাগ, বিরক্তি, চিৎকার, সঙ্গে থাকে কৌতুকদীপ্ত সংলাপ আর সিধু গিন্নির কর্তাকে শান্ত সপ্রেম ও সহমর্মী প্রয়াস। প্রযোজনার প্রধান নির্ভর রজত কপূরের অভিনয়। নিত্য ক্ষিপ্ত-মেজাজি সিধুকর্তা জীবনের নানা ঝামেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী লড়াই চালান সারা মঞ্চ জুড়ে, যেন মহাকাব্যিক যুদ্ধ। তার প্রতিটি প্রতিক্রিয়া ন্যায্য এবং কমেডিসুলভ। আর তা আরও স্পষ্ট হয় গিন্নির ভূমিকায় শ্যেরনাজ পটেলের অভিনয়ে প্রতিতুলনায়। প্রযোজনার কমিক অভিঘাতে এক সুষ্ঠু ভারসাম্যের সংযোজন ঘটিয়েছে পটেলের ধীর, স্থির সিধুগিন্নি বেহরোজ।