কাল্পনিক বাস্তব কি বাস্তবসম্মত?

যেন পাগল হওয়ার অবস্থা! একাধিক মনোবিদের সঙ্গে আলোচনায় সে জানতে পারে যে, তাকে নিয়ে কেউ একটা গল্প লিখছে। যদিও অজয় তাকে চেনেই না। অজয়ের অফিসের সহকর্মীরাও তার এই অবস্থায় যথেচ্ছ হাসিঠাট্টা করে।

Advertisement

সুকোমল ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৪
Share:

নাটকের একটি দৃশ্য

লোকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বহু নাটকের নামেই দু’টি পরস্পরবিরোধী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। যেন ব্যোমকেশ বক্সীর ভাষায় ‘প্রতিভাবান বদমায়েশ— প্যারাডক্স হয়ে যাচ্ছে!’ তবে এই পরস্পর-বিরোধিতা অন্তত অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে সীমা মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সম্প্রতি প্রদর্শিত নাটক ‘কাল্পনিক বাস্তব’-এ প্রতিফলিত হয়নি। গল্পের নায়ক অজয় খুব মুখচোরা স্বভাবের। পুরসভার সামান্য কর্মচারী। কিন্তু মানসাঙ্কে পারদর্শী। ঝগড়া ও মারামারি থেকে দূরে থাকে। এই নিপাট ভালমানুষ অজয়ের জীবনে এক অদ্ভুত ব্যাপার শুরু হয়। প্রায়ই এক অচেনা মহিলাকণ্ঠে তার জীবনের ধারাবিবরণী শুনতে থাকে সে। সেই অবস্থায় মানসাঙ্ক দূরের কথা, সাধারণ গুণও আর করতে পারত না সে। যেন পাগল হওয়ার অবস্থা! একাধিক মনোবিদের সঙ্গে আলোচনায় সে জানতে পারে যে, তাকে নিয়ে কেউ একটা গল্প লিখছে। যদিও অজয় তাকে চেনেই না। অজয়ের অফিসের সহকর্মীরাও তার এই অবস্থায় যথেচ্ছ হাসিঠাট্টা করে।

Advertisement

পুরসভা ঠিক এই সময়েই রাস্তার পাশের বেআইনি দোকান ওঠানোর নোটিস পাঠায় অজয়ের হাত দিয়ে। তাদের মধ্যে একটি বেকারির মালপত্রের দোকান চালায় কুসুম নামে এক মেয়ে। কলেজের পড়াশেষে সে এই দোকান খুলেছে। অজয় সেই মেয়েটিকে ভালবেসে ফেলে। কিন্তু সে তা বলতে পারে না। এমনকি সেখানে উপস্থিত পাগলভাই নামে এক জনের ইঙ্গিতেও নয়।

এ দিকে এক বিখ্যাত লেখিকা কমলিকা সাহা সত্যিই যে উপন্যাসটি এখন লিখছে, তা অজয়ের জীবনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে! লেখিকার ইচ্ছে— নায়কের মৃত্যু! তবে লেখিকা এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না, কী ভাবে তা ঘটবে! আর এ জন্যই তার পাণ্ডুলিপি পাঠাতে দেরি দেখে প্রকাশকের তরফে বিনতাকে পাঠানো হয় তার কাছে।

Advertisement

বিপরীত দিকে অজয় তার সমস্যা নিয়ে অধ্যাপক সমর পালের সঙ্গে আলোচনা করছিল এক দিন। আর তখনই টিভিতে কমলিকার গলা শুনে চিনতে পেরে, দৌড়ে সে বের হয়ে যায় এবং খুঁজে বের করে কমলিকার বাড়ি। এর পরেই নিজের সৃষ্ট চরিত্র যখন সামনে এসে ‘আমাকে মারবেন না’ এই অদ্ভুত অনুরোধ জানায়— এক তীব্র অস্বাচ্ছন্দ্য যেন ঘিরে ধরে লেখিকাকে! তার পর... মঞ্চে...

অভিনয়ে অজয় আর বেকারির দোকানের কুসুম অসাধারণ। ছোট ছোট চরিত্রে প্রত্যেকেই ভাল অভিনয় করেছেন, এমনকি কোনও সংলাপ না থাকলেও। তবে বিনতার আর একটু সংযত অভিনয় হলে ভাল লাগত। সঙ্গীত বেশ ভাল, গিটারের ব্যবহারও প্রশংসনীয়। আলোর প্রয়োগ একেবারে যথাযথ। এক বস্তা পিটিশনের ব্যবহার ভাল লাগল। যদিও কুসুম এক বার কেকের ট্রে সরাতে ভুলে গিয়েছিল, তবু সব মিলিয়ে বলতেই হবে— পরিচালক সীমা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াস সার্থক।

অনুষ্ঠান
কালাচাঁদ দরবেশ স্মরণে রবীন্দ্র সদনে আয়োজিত হল সহজিয়া উৎসব। অংশগ্রহণ করেছিলেন সহজিয়া লোকগান দলের সদস্যরা, সাধন দাস বৈরাগ্য, মাকি কাজ়ুমি, মনসুর ফকির, বিশ্বনাথ দাস বাউল, দেবদাস বাউল, কানাই দাস বাউল, দুর্গা খেপী, আনন্দ দাস বাউল, কার্তিক দাস বাউল, দীনদয়াল বাউল, রােধশ্যাম দাস বাউল, শ্যামসুন্দর দাস বাউল, নক্ষত্র দাস বাউল, সুধীর খ্যাপা, লক্ষ্মণ দাস বাউল (জয়দেব), রিনা দাসী, সন্ধ্যারানি দাস, কৃষ্ণদাস বৈরাগ্য, দুলাল সরকার, শ্যামল দাস, শুভেন্দু মাইতি, অরুণ চক্রবর্তী, রঞ্জন প্রসাদ, স্বপন বসু, বাপী, বুলা, তপন রায়, শিলাজিৎ, সৌমিত্র, উপল, গাবু, পর্ণাভ, নাজমুল, তীর্থ প্রমুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement