প্র: অফিস কী বাড়ি সবখানেই স্ট্রেস, নিত্য নতুন টেনশন। বুক ধড়ফড়। হার্টের সমস্যা?
উ: হয়তো নয়। কিন্তু আনুষঙ্গিক অন্য সমস্যা থাকলে হার্টের সমস্যা হতেও পারে। আসলে একটানা স্ট্রেস চলতে থাকলে মুশকিল। এ রকম বুঝলে রক্তচাপ আর ইসিজি করিয়ে নিতে হবে।
প্র: স্ট্রেস মানেই হার্টের সমস্যা?
উ: কোনও সমস্যা নিয়ে এক-আধ দিন চিন্তা করলেন, তো ঠিক আছে। কিন্তু দিনের পর দিন স্ট্রেস পুষে রাখলে বিপদ। ব্লাড প্রেসার চড়বে, ডায়বেটিস হবে। ফলে খুব সহজেই হার্টের সমস্যা আসবে।
প্র: ফুরফুরে মনে অফিস আর সংসার সামলাতে ক’জন পারে?
উ: সেটা ঠিকই। তবে যদি দেখেন রোজকার স্ট্রেসে হিমশিম খাচ্ছেন, দেরি না করে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট রপ্ত করতে হবে। দরকারে মনোবিদের কাছে যেতে হবে।
প্র: স্ট্রেস তো রোজকার সঙ্গী। সেটা মাত্রা ছাড়াচ্ছে, বুঝব কী ভাবে?
উ: না, তেমন নয়। একটু খেয়াল করলে নিজেই বুঝতে পারবেন। ধরুন আগে রাতে শুলেই ঘুমিয়ে পড়তেন। এখন ঘুম উধাও। বা উল্টোটা। সারা দিনই ঘুম পাচ্ছে। কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না বা সারা দিনই খাচ্ছেন। সব সময় একটা ক্লান্তি ঘিরে রয়েছে। অল্পতেই রেগে যাচ্ছেন। খিটখিটে লাগছে, বিরক্তিও। যেটা আগে হত না। তা ছাড়া শারীরিক দিক দিয়েও কিছু সমস্যা হতে পারে।
প্র: শারীরিক সমস্যা বলতে?
উ: প্রেসার বাড়তে পারে, বুক ধড়ফড় হতে পারে। এ ধরনের অস্বাভাবিক কিছু দেখলে ফেলে রাখবেন না।
প্র: একেবারে হার্টের ডাক্তার?
উ: স্থানীয় ডাক্তার। যাকে সব সময় দেখান।
প্র: প্রেসার একটু বাড়লেই ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে?
উ: প্রেসার ওপরের দিকে থাকলে সেটা ফেলে রাখবেন না। সতর্ক হলে ডাক্তার অবধি না-ও যেতে হতে পারে। নিজের ভাললাগাগুলোকে হারিয়ে যেতে দেবেন না। ভাললাগা মনের অক্সিজেন। হার্ট ভাল রাখতে এরও দরকার আছে। বেড়ানো, বই পড়া, গান শোনা, বাগানে সময় কাটানো, যা ভাল লাগে তাই করুন।
প্র: কী করে বুঝব হার্টের সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছে?
উ: বুক, তলপেট, পিঠ বা বাঁ হাতে ব্যথা হতে পারে।
প্র: এ রকম ব্যথা মানেই হার্টের সমস্যা?
উ: তা নয়। তবে ব্যথার কারণ হার্ট কি না, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। হার্টের সমস্যা হলে সময় পাবেন না। এমনকী দাঁতে ব্যথা হচ্ছে, দাঁত তুলে ফেললেন, অথচ ব্যথা কমছে না, এ রকম হলেও সেটা হার্টের সমস্যা হতে পারে। ৪০-এর পর বছরে এক বার চেকআপ দরকার। মেয়েদের চেকআপও খুব জরুরি।
প্র: শুনেছি মেনোপজের আগে মেয়েদের তেমন হার্টের সমস্যা হয় না?
উ: এখন আর সেই থিয়োরি খাটে না। হরমোন আপনাকে যতটা সুরক্ষা দেবে, সেই তুলনায় স্ট্রেস অনেক বেশি। তাই কম বয়সে মেয়েরা সুরক্ষিত এমন ভেবে বসে থাকবেন না। মেয়েদেরও বছরে অন্তত এক বার রুটিন টেস্ট দরকার।
প্র: তাতেই হার্টের সমস্যা এড়ানো যাবে বলছেন?
উ: আগে ভাগে ধরা পড়লে ব্যাপারটা বেশি দূর গড়াবে না। তবে হার্ট ভাল রাখতে ওজন বাড়তে দেবেন না।
প্র: মুশকিল কী জানেন, ওজন বাড়ছে টের পাচ্ছি, কিন্তু এক্সারসাইজ-এর সময় নেই।
উ: অফিস থেকে ফেরার সময় বাড়ি থেকে দুটো স্টপেজ আগে নেমে পড়ুন। কুড়ি-পঁচিশ মিনিট হেঁটে বাড়ি ফিরুন। আলাদা করে এক্সারসাইজের দরকার হবে না। আর যে এক্সারসাইজ-ই করুন না কেন, তার আগে জেনারাল হেলথ চেকআপ আর ইকোকার্ডিয়োগ্রাম করে নেবেন। হার্টের অনেক গঠনগত সমস্যা থাকতে পারে। দুমদাম এক্সারসাইজ করলে বিপদ হতে পারে। এক্সারসাইজ যাই-ই করুন, সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
প্র: সে তো বিশাল লিস্ট...
উ: স্বাভাবিক খাবারই খাবেন। তবে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাবেন। হই হই করে এত যে ডায়বেটিস হচ্ছে, তার পেছনে কার্বোহাইড্রেট। রোজকার খাবারে ভাতের পরিমাণ কমাবেন। তরকারি যেন আলুকেন্দ্রিক না হয়।
সবুজ সবজি বেশি খেতে হবে। খুব ভাল হয় এক জন বিশেষজ্ঞ ডায়টেশিয়ানকে দিয়ে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নেন।
যোগাযোগ-৯৮৩১৬২৬৫৫৩