Art Exhibition

ইচ্ছেপূরণের আঁকিবুকি

রিমঝিমের ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার শখ। বিদেশে আইটি-র চাকরি ছেড়ে চলে এসেছিলেন, শুধুমাত্র ছবি আঁকবেন বলেই। দেশে ফিরে আঁকায় মনোনিবেশ করেন।

Advertisement

শমিতা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:২৬
Share:

কালি-কলম-মন: রিমঝিম সিংহ দাশগুপ্তর একক প্রদর্শনীর চিত্রকর্ম। —নিজস্ব চিত্র।

চারুবাসনার সুনয়নী চিত্রশালায় রিমঝিম সিংহ দাশগুপ্তের একক প্রদর্শনী হয়ে গেল সম্প্রতি। প্রদর্শনীর নাম রাখা হয়েছিল, ‘উইশ ট্রি’। বিশেষ করে প্রকৃতি-সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে ছবি এঁকেছেন রিমঝিম। বেশির ভাগ ছবি কালি দিয়ে কাগজে আঁকা।

Advertisement

রিমঝিমের ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার শখ। বিদেশে আইটি-র চাকরি ছেড়ে চলে এসেছিলেন, শুধুমাত্র ছবি আঁকবেন বলেই। দেশে ফিরে আঁকায় মনোনিবেশ করেন। তাঁর কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পশিক্ষা নেই। সম্পূর্ণ ভাবেই স্বশিক্ষিত রিমঝিম।

রিমঝিম সিংহ কাগজে বিভিন্ন মাধ্যমে, যেমন অ্যাক্রিলিক জলরং এবং কালিতে কাজ করেন। অ্যাক্রিলিক ব্যবহার করেন জলরঙের মতো করে। কাজেই তাঁর কাজে এই সব মাধ্যমই মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। অর্থাৎ বেশির ভাগ কাজেই মিশ্র মাধ্যমের ছোঁয়া।

Advertisement

কালি-কলম-মন: রিমঝিম সিংহ দাশগুপ্তর একক প্রদর্শনীর চিত্রকর্ম। —নিজস্ব চিত্র।

রিমঝিমের কাজে প্রকৃতিকে ঠিক যেন চেনা যায় না। অনেকটাই নিজস্ব উপায়ে নিসর্গের ছবি আঁকেন বলেই ছবিগুলিতে কিছুটা বিমূর্ততা বা একটা সাররিয়েল মেজাজ স্বচ্ছন্দে এনে ফেলেন। জীবনের জটিলতা পছন্দ করেন না শিল্পী। তাই ছবিতে সরলতাকে একটা বড় জায়গা দেন তিনি। ছবি এঁকে আনন্দ পান এবং সেটাই দর্শকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান। তাঁর ছবি একান্ত ভাবেই মন-ভাল-করা ছবি। কোনও গভীর জীবনদর্শন হয়তো সেখানে কাজ করে না সব সময়ে।

আরও একটা কথায় শিল্পী বিশ্বাস করেন, সেটা হল— সহজাত শিল্প। বাবুই পাখির বাসাকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করেছেন রিমঝিম। প্রকৃতি স্বভাবসুলভ ভাবেই সুন্দর। এই সৌন্দর্যকে তুলি-কলমে ধরার জন্য বিশেষ শিল্পশিক্ষায় বিশ্বাস তিনি করেন না। যদিও আর্ট কলেজে শিক্ষাপ্রাপ্ত বড় বড় শিল্পীদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল তিনি। মনের গভীরে যে সব ভাব এবং লুকিয়ে থাকা কথা আছে, সেগুলিকে কলমে-রঙে-তুলিতে একটি ভাষা দিতে চান রি‌মঝিম। এই প্রদর্শনীতেও তার প্রতিফলন দেখা গেল।

কালি-কলম-মন: রিমঝিম সিংহ দাশগুপ্তর একক প্রদর্শনীর চিত্রকর্ম। —নিজস্ব চিত্র।

‘উইশ ট্রি’ প্রদর্শনীতে রিমঝিম-এর একটি ছবি দেখা গেল, তার নাম ‘দ্য গাউন’। জলের নীচে মাছের জলকেলিতে ডানা-পাখনায় যেন একটা পোশাকের ভাবভঙ্গি দেখা যাচ্ছে। মহিলাদের লম্বা একটা গাউনের মতো। ছবির গতিটা খুব সুন্দর ধরেছেন শিল্পী। ছবিটা তুলি কলম এবং কালিতে করা।

আর একটি ছবির নাম ‘স্টর্ম ফ্লাওয়ার্স।’ ঝড়ের মুখে ফুলযুগল। এখানেও বেশ একটা মেজাজ ধরা পড়েছে। এ ছাড়া ‘স্ট্যান্ডিং’ নামের ছবিটিতে গাছের ঝুঁকে পড়া ডালপালা, দূরের একটি গাছের সাক্ষী ভাব, আকাশ এবং জলের একাকার হয়ে নিজেদের হারিয়ে ফেলার অদ্ভুত এক মুহূর্ত ধরা পড়েছে। অধিকাংশ ছবিতেই প্রকৃতিপ্রেম পেশ করেছেন তরুণ শিল্পী, অন্তরের বিহ্বলতা বিস্ময় এবং আনন্দ মাখিয়ে, এক স্বতঃস্ফূর্ত স্বরে। প্রদর্শনীটি তাই মন ভাল করে দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement