Monsoon

Monsoon Travel: বর্ষায় শহুরে কোলাহল থেকে মুক্তি চান? দিন দুয়েকের বিরতি নিয়ে ঘুরে আসুন এই জায়গাগুলি থেকে

কলকাতার আশেপাশেই এমন বহু স্থান রয়েছে, যেগুলি বৃষ্টির ছোঁয়ায় যেন নতুন করে যৌবন ফিরে পায়; আসল সৌন্দর্য মেলে ধরে। হাতে ২-৩ দিনের ছুটি থাকলে অনায়াসেই ঘুরে আসতে পারবেন এই সব জায়গা থেকে।

Advertisement

সংগৃহীত প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২২ ২৩:০৪
Share:

গ্রীষ্মের পরে বর্ষায় যেন প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি

ষড়ঋতুর এই দেশে বর্ষার প্রতি প্রেম অপার। বাঙালির আবেগ থেকে সাহিত্য চর্চা, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের অনেকটাই জুড়ে রয়েছে বৃষ্টির বৈচিত্র। ঠিক তেমনই বর্ষাকালে ভ্রমণ করাটা অনেকের কাছে রোমাঞ্চের মতো। আসলে বর্ষার মরশুমে বেড়াতে যাওয়ার আলাদা আনন্দ রয়েছে। বৃষ্টিভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ উপভোগ করা থেকে পাহাড়ি ঝর্নায় স্নান, আরও কত কী! কলকাতার আশেপাশেই এমন বহু স্থান রয়েছে, যেগুলি বৃষ্টির ছোঁয়ায় যেন নতুন করে যৌবন ফিরে পায়; আসল সৌন্দর্য মেলে ধরে। হাতে ২-৩ দিনের ছুটি থাকলে অনায়াসেই ঘুরে আসতে পারবেন এই সব জায়গা থেকে।

Advertisement

হেনরি আইল্যান্ড

হেনরি আইল্যান্ড

বৃষ্টির শহরে, শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে কিছুটা নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চাইলে এই স্থানের থেকে আর ভাল কিছু হয়ত হতে পারে না। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এই দ্বীপে পাবেন দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র, মৎস্য প্রকল্পের কানঘেঁষা ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অপার নীরবতা। সুন্দরবনের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত হেনরি আইল্যান্ড দক্ষিণ ২৪ পরগণার আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। জমজমাট বকখালি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের উপকূলের এই স্থানে খুঁজে পেতে পারেন নিরিবিলি পরিবেশ ও অপার শান্তি। কলকাতা থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত হেনরি আইল্যান্ড। ধর্মতলা থেকে বাসে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে জে়টি ঘাট স্টপে পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে ইঁটের রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে গেলেই পৌঁছে যাবেন হেনরি আইল্যান্ড। এই পথের মধ্যে হাতানিয়া-দোহানিয়া নদী পার হওয়ার অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। ট্রেন যেতে হলে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চড়ে নামখানা নামতে হবে। এর পরে নদী পেরিয়ে ভ্যান ধরে গন্তব্যে পৌঁছনো কেবল সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

বকখালি

বকখালি

হঠাৎ বৃষ্টিতে মন উচাটন। হাতে দিন দু’য়েকের ছুটিও রয়েছে! শহরের অনতিদূরে ঘুরে আসুন বকখালি থেকে। এখানে সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি, বনবিবির মন্দির, ওয়াচ টাওয়ার, লাল কাঁকড়া, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি দেখতে পাবেন। তবে মজার বিষয় হল, এখানকার প্রধান আকর্ষণ কিন্তু কুমির চাষ ও মাছ চাষ। বকখালি ঘুরতে এসে এটা কিন্তু একেবারেই মিস করবেন না। আবার বকখালি থেকে লঞ্চে করে চলে যেতে পারেন জম্বু দ্বীপ বা মৌসুনী আইল্যান্ড। পর্যটকদের জন্য এটিও একটি আকর্যণীয় স্থান। এখানে যেতে লঞ্চে জনপ্রতি ভাড়া ১৫০ টাকা। সকালে গঙ্গাসাগর, মৌসুনী আইল্যান্ড ও জম্বু দ্বীপ যাওয়া প্যাকেজের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে বকখালি এসে লাল কাঁকড়া দেখার জন্য কারগিল বিচ যেতে ভুলবেন না যেন। কলকাতা থেকে বকখালির দূরত্ব প্রায় ১৩২ কিমি। এখানে পৌঁছতে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চড়ে নামখানা নামতে হবে। সেখান থেকে খানিক পথ পার হলেই বকখালি। সময় লাগবে কম-বেশি ৪ ঘন্টা। চাইলে গাড়ি ভাড়া করেও আসতে পারেন এখানে।

শান্তিনিকেতনের সোনাঝুড়ির হাট

শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতন নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এই জায়গার মূল বৈশিষ্ট্য। শান্তির নীড় হল শান্তিনিকেতন। শুধু বর্ষাই নয়, যে কোনও সময়ে এখানে এলে মন জুড়িয়ে যায়। এক আলাদা শান্তির অনুভূতি পাওয়া যায়। লাল মাটি, সবুজ বনানীর চিত্রপটে গড়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট বিশ্বভারতী। প্রকৃতির অতুল ঐশ্বর্য ও শিল্প-সাহিত্যের অপূর্ব মেলবন্ধনে শান্তিনিকেতন শুধুমাত্র বাংলা বা ভারতের কাছে নয়, সমগ্র বিশ্বের কাছেই একটি আকর্ষণীয় দ্রষ্টব্য স্থান। সেখানে কোনও কটেজে বসে বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে সোঁদা মাটির গন্ধ উপভোগ করার মজাটাই আলাদা।

টাকি

টাকি

হাতে ২-৩ দিনের ছুটি নিয়ে এই বর্ষায় ইছামতীর তীরে টাকি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। বাঙালির প্রিয় জায়গাগুলির মধ্যে একটি হল অবশ্যই টাকি। বৃষ্টির ছোঁয়ায় এখানকার সৌন্দর্য্য যেন আরও বেড়ে যায়। কলকাতা থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার দূরত্বে ইছামতীর পাড়ে এই টাকি শহর। ইছামতীর অন্য পাড়েই বাংলাদেশ। এখানে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে একাধিক দর্শনীয় স্থান। তবে টাকির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হল গোলপাতার জঙ্গল বা ছোট সুন্দরবন। রয়েছে মানুষের তৈরি করা ছোট্ট ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। ইলশেগুঁড়ির ফাঁকে ইচ্ছে হলে ইছামতীতে নৌকা নিয়েও ভ্রমণ করতে পারেন। যেতে পারেন মাছরাঙা দ্বীপেও। তবে হ্যাঁ, বৃষ্টির সময় অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।

গাদিয়াড়া

গাদিয়াড়া

হাওড়া জেলার একটি ছোট্ট শহর হল গাদিয়াড়া। ভ্রমণপ্রেমীদের প্রিয় উইকেন্ড ডেস্টিনেশন। হুগলি, রূপনারায়ণ এবং দামোদর নদী এসে এখানে মিলিত হয়েছে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান। যেমন - ফোর্ট মর্নিং টন, যা একটি ইংরেজ দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। প্রকৃতি প্রেমী এবং ফটোগ্রাফি অনুরাগীদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত জায়গা। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পর্যটকদের কাছে গাদিয়ারাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন করে সাজনো হয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রকে । হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে উলুবেড়িয়া বা বাগনান স্টেশনে নেমে, সেখান থেকে শ্যামপুর হয়ে বাসে করে ৮ কিলোমিটার গেলেই গাদিয়াড়া। ধর্মতলা থেকে বাসে মাত্র দু’ঘন্টা এবং গাড়িতে দেড় ঘন্টার যাত্রা পথ। আধুনিক জীবনযাপনের সমস্ত সুবিধাই রয়েছে এখানে। শান্ত নদীর পাড়ে বিকেল বেলায় সূর্যাস্ত উপভোগ করার মুহূর্তও আপনি উপভোগ করতে পারবেন।

এই প্রতিবেদনটি সংগৃহীত এবং 'আষাঢ়ের গল্প' ফিচারের অংশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement