শুয়োর ধরতে নামল পুরসভা, টাকা মেটানো নিয়ে সংশয়

টালবাহানা কাটিয়ে শুয়োর হঠাও অভিযানে তেড়েফুঁড়ে নামল বর্ধমান পুরসভা। বুধবার শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আনজির বাগানে সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় মানুষদের সাহায্যে ৪০টি শুয়োর ধরেন পুরসভার কর্মীরা। অভিযানের তদাকরি করতে হাজির ছিলেন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, তিন কাউন্সিলর খোকন দাস, সেলিম খান ও শুক্তিশুভ্রা হাজরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বধর্মান শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০২:২৬
Share:

চলছে শুয়োর ধরার কাজ।—নিজস্ব চিত্র।

টালবাহানা কাটিয়ে শুয়োর হঠাও অভিযানে তেড়েফুঁড়ে নামল বর্ধমান পুরসভা।

Advertisement

বুধবার শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আনজির বাগানে সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় মানুষদের সাহায্যে ৪০টি শুয়োর ধরেন পুরসভার কর্মীরা। অভিযানের তদাকরি করতে হাজির ছিলেন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, তিন কাউন্সিলর খোকন দাস, সেলিম খান ও শুক্তিশুভ্রা হাজরা। শুয়োরগুলি ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত।

উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপে শতাধিক মৃত্যুর পরে রাজ্য জুড়ে শুয়োর হঠাও অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে সেভাবে সক্রিয় হয়নি বর্ধমান পুরসভা। উল্টে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের যুক্তি ছিল, এনসেফ্যালাইটিসের ভাইরাসের বাহক মশার লার্ভা ধংস করার উপায় যেখানে রয়েছে, সেখানে তড়িঘড়ি শুয়োর হঠাও অভিযানের দরকার নেই। বরং শুয়োরেরা যেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই এলাকাগুলির জলাশয়ে পাতি হাঁসের চাষ করলেই চলবে। কারণ পাতিহাঁসেরা এই এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমন ছড়ানো মশাদের লার্ভা খেয়ে ফেলে। তাই শুয়োর তাড়ানোার আগে পাতিহাঁসের চাষের পক্ষে ছিলেন তিনি।

Advertisement

তাহলে এ দিন হঠাত্‌ কেন পুরসভা শুয়োর হঠাতে কোমর বেঁধে নামল? ওপর থেকে কী রাতারাতি কোনও নির্দেশ এসেছে? পুরপ্রধান বলেন, “পাতিহাঁসের ছানা না মেলায় ওই অভিযান চালানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, বর্দমান শহরের আশপাশে যে সমস্ত প্রাণিসম্পদ দফতরের খামার রয়েছে, তাতে পাতিহাঁসের ছানা নেই। রয়েছে ক্যাম্বল হাঁসের ছানা। ওই ক্যাম্বেল প্রজাতির হাঁস কিউলেক্স বিশনোই প্রজাতির যে মশারা এনসেফ্যালাইটিস ছড়ায়, তাদের লার্ভা খায় না। ফলে বাধ্য হয়ে পুরসভাকে অভিযানে নামতে হয়েছে।” স্বরূপবাবুর দাবি, আটক করা শুয়োরগুলি এ দিন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ি নিয়ে গিয়েছেন। রাখার জায়গা না থাকায় সেগুলি কার্যত বিনামূল্যে দিয়ে দিতে হয়েছে ওই ব্যবসায়িদের। আবার আনজির বাগানের যে সমস্ত শুয়োর পালকদের কাছ থেকে ৪০টি নানা আকারের শুয়োর নেওয়া হয়, তাঁদের নগদে কিলো প্রতি ১০০ টাকা দাম দিতে হয়েছে বলেও পুরপ্রধানের দাবি।

তবে কোন তহবিল থেকে ওই টাকা দেওয়া হবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়ছে পুরসভা। বর্ধমান পুর এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার শুয়োর রয়েছে। তাদের ধরে ভিন রাজ্যে পাঠানো এবং শুয়োর পালকদের নগদে ১০০ টাকা কিলো দরে টাকা দেওয়া, কত দিন সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান। কারণ শুয়োর প্রচুর হলেও পুরসভার অর্থ সীমিত। পুরসভার দাবি, যতদিন সম্ভব পালকদের নগদে দাম দেওয়া হবে। তারপরে টাকাপ্রাপকদের তালিকা তৈরি করা রাখা হবে। টাকা মিললে তাঁদের শুয়োরের দাম দেওয়া হবে। এই টাকা পেতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও পুর বিষয়ক দফতরের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন স্বরূপবাবু।

সব দেখেশুনে তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলরের সরস মন্তব্য, “শুয়োর নিয়ে তো দেখছি, ভিক্ষে চাই না, কুকুর সামলাও দশা হল আমাদের।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement