লিচু খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন একই পরিবারের তিন জন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রবিবার সকালে রেজিনগরের মুরুটিয়ার বাসিন্দা প্রৌঢ়া আরতি ঘোষ ও তাঁর দুই ছেলেমেয়ে বানেশ্বর ও বন্দনাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
এর আগে মালদহে কীটনাশক ছড়ানো লিচু খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে তড়িঘড়ি তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ দিন সকালে ডায়েরিয়া ও বমির উপসর্গ নিয়ে ওই তিন জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের জ্বরও রয়েছে। মাধব মণ্ডল, সঞ্চিতা সাহা ও হামিদ আলি নামে তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ওই রোগীদের চিকিৎসা করছেন।” মণিময়বাবু বলেন, “রোগীদের রক্ত, মল ও মূত্র সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এখনও তার রিপোর্ট পাইনি। ফলে লিচু খেয়েই তাঁরা অসুস্থ পড়েছেন এখনই বলা সম্ভব নয়। রোগীদের ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেজিনগর বাজার থেকে লিচু কিনে নিয়ে যাওয়ার পরে শুক্রবার সকালে খালি পেটে ওই তিন জন প্রায় ৫০টি লিচু খান। আরতিদেবীর বড় ছেলে আলানাথ ঘোষ বলেন, “দুপুরের পর থেকেই মা, ভাই ও বোন তিন জনই অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় মুরুটিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ওষুধ নিয়ে এসে খাওয়ানো হলেও লাভ হয়নি।”
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের রক্ত, মল ও মূত্র পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। স্যালাইন চলছে। এখন তাঁরা অনেকটাই সুস্থ।”
এদিকে মালদহের ঘটনার পরে বিভিন্ন আধিকারিকদের নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে দু’দিন বৈঠকও হয়। ওই বৈঠকে লিচু খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করার কথা বলা হয়েছে১) লিচু কেনার পরে গরম জলে ফেলে ধুয়ে নিতে পারলে ভাল হয়। ২) মুখে করে লিচুর খোসা না ছাড়ানো ভাল। বিশেষ করে গাছ থেকে পেড়েই মুখে তোলা যাবে না।
জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক শুভদীপ নাথ বলেন, “লিচুতে ল্যাদা দমনকারী কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তাতে সাধারণ ভাবে ক্ষতি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ধুয়ে খাওয়াই ভাল। না হলে ডায়েরিয়া বা খিঁচুনি হতে পারে।”