উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এসএনসিইউতে মঙ্গলবার রাতে আর একটি শিশু মারা গিয়েছে। অস্বাভাবিক কম, মাত্র ৮০০ গ্রাম ওজনের ওই শিশুকে চিকিত্সকরা বাঁচাতে পারেননি। চিকিত্সকেরাই জানিয়েছেন, স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের শিশুর ক্ষেত্রে ফুসফুস-সহ কিছু অঙ্গ ঠিক মতো কাজ করে না। ফুসফুসকে সচল রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সি-প্যাপ যন্ত্রের সাহায্যে এ ধরনের শিশুদের ওষুধ দেওয়া হয়। এত দিন ওই যন্ত্র না থাকলেও গত ১৭ এপ্রিল নতুন ২টি সি-প্যাপ যন্ত্র আনা হয়েছে। অথচ তা ব্যবহারের বন্দোবস্ত এখনও করা হয়নি কেন এ ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে।
১৪ থেকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে ১৪ নবজাতকের মৃত্যু হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে। তা স্বাভাবিক মৃত্যুর হারের চেয়ে বেশি বলে মেনে নেন কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৫ জন। শিশু মৃত্যুর হার কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ। অথচ তার পরেও সি-প্যাপ, ফটোথেরাপি, রেডিয়েন্ট ওয়ার্মারের মতো নতুন আনা যন্ত্রগুলি কেন চালু করা যাচ্ছে না তা নিয়ে অসন্তুষ্ট রোগীর পরিবারের লোকেরা। হাসপাতাল সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “যন্ত্রগুলি কোম্পানির লোক এসে চালানোর বন্দোবস্ত করে দিয়ে যাবেন। তাঁরা না আসায় দেরি হচ্ছে। দ্রুত সেগুলি চালু করার চেষ্টা চলছে।” রেডিয়েন্ট ওয়ার্মারের মতো যন্ত্র ১০ দিন আগে আনা হয়েছে। স্টোর থেকে কর্তৃপক্ষকে সেই খবর কয়েক দিন পরে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কেন তা জানাতে দেরি হল সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অমরেন্দ্রবাবুর দাবি, এসএনসিইউর সামনে নিরাপত্তা কর্মী বসানো হয়েছে। এক জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকছেন মায়েদের কে কখন ঢুকছেন, বিশেষ পোশাক পরে যথাযথ ভাবে ঢুকছেন কি না তা নজরদারির জন্য। পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা যাতে সিনিয়র চিকিত্সক থাকেন এবং কোনও ভাবেই যেন জুনিয়রদের হাতে ছেড়ে দেওয়া না হয় তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে প্রসূতি বিভাগে জায়গার অভাবে এক শয্যায় ২ জন কোথাও ৩ সদ্যোজাতকে নিয়ে তাদের মায়েদের থাকতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এক সঙ্গে ৪ বা ৬ জন একই শয্যায় থাকতে হওয়ায় সমস্যা হচ্ছেই। ওই ওয়ার্ড এবং লেবার ওয়ার্ড এবং শিশু বিভাগের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেখান থেকেও অনেক নবজাতক সংক্রমণে আক্রান্ত হয় বলে সদর হাসপাতালের চিকিত্সকদের একাংশেরই সন্দেহ।