আজও তৈরি হল না ক্যানিং-১ ব্লকের দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে দাঁড়িয়া গ্রামে হেমচন্দ্র প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। পঞ্চায়েতের সদিচ্ছার অভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে গ্রামে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকায় কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় বাসিন্দাদের ২০ কিলোমিটার দূরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে যেতে হয় বা ৪০ কিলোমিটার দূরে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে যেতে হয় বলে জানালেন স্থানীয় মানুষ। শুধু এই গ্রাম নয়, পাশাপাশি হাটপুকুরিয়া, নিকারিঘাটা, বেলেগাছি-সহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১ লক্ষ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য অনুমোদন হয়ে আছে। পঞ্চায়েতের অ্যাকাউন্টে টাকাও দেওয়া আছে।” পঞ্চায়েতের গাফিলতি আছে বলে মানছেন তিনিও। বিডিও বলেন, “এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। দেখা যাক, দ্রুত কী ভাবে ওই কাজ শুরু করা যায়।” ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭৬ সালে ফণিভূষণ গায়েন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা ওই এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য ৯ বিঘা জমি দান করেছিলেন। সে সময়ে কংগ্রেসের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন গোবিন্দচন্দ্র নস্কর। ওই সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে সরকার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য ও স্থায়ী সমিতি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য অনুমোদন চেয়ে সমস্ত কাগজপত্র জেলাতে পাঠায়। সেই মতো ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র অনুমোদন করে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা ধার্য করে। ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জায়গা সংস্কারের জন্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা অনুমোদন করে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজের কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
গ্রামবাসী মইনুল হক, নিরঞ্জন মণ্ডলরা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য ওই জমি পড়ে রয়েছে। এটির জন্য আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ করেও কোনও কাজ হয়নি। ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাস বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য জেলা থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে। তেমনি পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে জমি সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছি। পঞ্চায়েতের স্থানীয় সমস্যার কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।” জেলার মিটিংয়ে এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম দাস মালাকার। ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিট জিতে প্রধান হয়েছিলেন নন্দরানি সর্দার। পরে তিনি দলত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দেন। প্রধান বলেন, “ওই জমি পঞ্চায়েত অফিস থেকে কিছুটা দূরে। তা ছাড়া, ওই জমিতে কিছুটা সমস্যা রয়েছে।”