international women's day

আন্তর্জাতিক নারী দিবস: রূপান্তরিত নারীর প্রতিও আকৃষ্ট হতে পারেন আর এক নারী

সব মানুষকে যদি আমরা দু’টো লিঙ্গের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেখি, তবে ভাবনাটা খুব সীমিত হয়ে যায়। সমাজের নির্ধারণ করে দেওয়া নারী-পুরুষের লিঙ্গ এবং যৌনতার সীমানার বাইরে অনেকটা বড় জগৎ রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২১ ১৪:২১
Share:

অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রত্নাবলী রায়

নারী দিবস আসে যায়। তবু নারীর ভাবমূর্তি বদলায় কি? সে নারীর যাপন যেমনই হোক, তাতে সমাজ সচেতন হয় কি? নাকি কন্যা-স্ত্রী-বান্ধবী-ছাত্রী-মহিলা সহকর্মীদের কাছ থেকে চাহিদা একই রকম থেকে যায়। মেয়েদের প্রতি আচরণ আরও কতটা বদলানো প্রয়োজন? আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আনন্দবাজার ডিজিটাল মুখোমুখি বসাল দুই নারীকে, যাঁরা বিষমকামী ভাবনার দ্বারা নির্ধারিত সামাজিক নানা ছকের বাইরে রাখেন নিজেদের। যৌনতা থেকে কাজের স্বীকৃতি, সব নিয়ে খোলাখুলি কথা বললেন মনোবিদ-সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় ও অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রশ্ন: উপলক্ষ নারী দিবস। তবে কথা শুনতে চাইছি তাঁদের নিয়ে, যেই মেয়েরা নিজেদের বিষমকামিতার বাঁধা ছক আর তকমার বাইরে রাখতে পছন্দ করেন।

Advertisement

রত্নাবলী: এই নারী দিবস এলেই তো তুই আর আমি সরস্বতী পুজোর পুরোহিতের মতো নানা জায়গায় বলে বেড়াই। কিন্তু কে নারী বল তো? তুই কি নারী, অনুত্তমা?

অনুত্তমা: আমি তো বোধ হয় কোনও খোপেই পড়ি না। বিশ্বাসই করি না এতে। কারও ব্যক্তিসত্ত্বাকে নারী-পুরুষের ভাগাভাগির মধ্যে ফেলেই দেখি না আমি।

প্রশ্ন: মানে আপনি নারী বলেন না নিজেকে?

অনুত্তমা: সব মানুষকে যদি আমরা দু’টো লিঙ্গের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেখি, তবে ভাবনাটা খুব সীমিত হয়ে যায়। সমাজের নির্ধারণ করে দেওয়া নারী-পুরুষের লিঙ্গ এবং যৌনতার সীমানার বাইরে অনেকটা বড় জগৎ রয়েছে। সেটা দেখার জন্য চোখটাই খুলে রাখা হয় না। লিঙ্গ এবং যৌনতার নিরিখে নির্ধারিত কোনও একটি খোপের মধ্যেও আমি পড়ি না। তোমার কী ধারণা? তুমি নারীত্বকে কী ভাবে দেখ?

রত্নাবলী: আমি বোধ হয় এখনও নিজেকে খুঁজছি। মাঝেমাঝে আমার নিজেকে মনে হয় পুরুষ। কখনও মনে হয়, আমি নারী।

অনুত্তমা: কখন মনে হয় তুমি নারী?

রত্নাবলী: কখনও কখনও মনে হয়।

অনুত্তমা: ঠিক কখন? একটা উদাহরণ দাও না?

রত্নাবলী: খুবই কঠিন। তবে আমি যখন নিজের প্রেমিক-সত্ত্বার উদ্‌যাপন করি, তখন আমি কখনও নারী, কখনও পুরুষ হিসেবে নিজেকে দেখতে পারি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে আমার উদ্‌যাপন কেবলমাত্র সমাজকর্মী হিসেবে। সেখানে আমি নারী না পুরুষ, তা দিয়ে কিছু এসে যায় না। কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গের ভেদাভেদ না আসারই তো কথা।

‘আমি নারী। তার মানেই তো আমার বিপরীতে পুরুষকে দাঁড় করিয়ে দিলে চলবে না।’

অনুত্তমা: এখন তুমি কী?

রত্নাবলী: এখন আমি ‘কুইয়ার’। এটা বলাই ভাল।

অনুত্তমা: (হাসি) আচ্ছা কুইয়ারের বাংলা কী?

রত্নাবলী: কুইয়রের বাংলা হয় না, বোধ হয়। অভিধানে যা বাংলা লেখা আছে, তা থেকে কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারবে না।

প্রশ্ন: কুইয়র মানে তো অদ্ভুত। আপনি নিজেকে অদ্ভুত বলবেন কি?

রত্নাবলী: আসলে অনুত্তমা নিজের বিষয়ে যতটা নির্দিষ্ট করে বলল, আমি অতটা পারব না। কারণ আমার কাছে নিজের জায়গাটা অত নির্দিষ্ট নয়। একটা গতায়ত আছে আমার।

অনুত্তমা: কিন্তু আমি তো নির্দিষ্ট করে খুব অনির্দিষ্ট কথাই বললাম রত্নাবলীদি।

রত্নাবলী: ঠিকই। তবে আমি অনির্দিষ্ট কথা, অনির্দিষ্ট করে বললাম। কারণ, আমি এখনও মনোস্থির করতে পারিনি এ বিষয়ে। তবে যে বিষয়টি সম্পর্কে আমি নিশ্চিত, তা হল, সমাজে ভাগ করে দেওয়া যে দু’-চারটি বাক্স রয়েছে, তার কোনও একটির মধ্যেও পুরোপুরি পড়ি না। এক বাক্সে আমার হবে না। সমাজ নির্ধারিত হাতে গোনা কয়েকটি দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে একটা বিশাল বড় জগৎ রয়েছে। সে বিষয়ে আমি খুব সচেতন।

প্রশ্ন: এই যে দু’জন মহিলা নিজেদের নারী বলে পরিচয় দিতে চান না, এটা কেন?

অনুত্তমা: তা তো ঠিক নয়। নারী হওয়া নিয়ে আমার বক্তব্য নেই। নারীত্বের ব্যাখ্যাটাই সঙ্কটজনক। এই যে নিজেরা যে ভাবে সাজগোজ করি, তাতেও তো নিজেদের নারীত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছি। এটা মনে হয় না তোমার?

রত্নাবলী: সেটাকেও তো চ্যালেঞ্জ করা উচিত, অনুত্তমা। যখন আমরা সব ধরনের জৈবিক-সামাজিক নির্ধারককে চ্যালেঞ্জ করছি, তখন পোশাককেও করা উচিত। আসলে আমরা যখন তিন জনে এখানে আড্ডা দিচ্ছি, তখন এখানে কে নারী, কে পুরুষ, কে অন্য কিছু— সে সবে না-ই বা গেলাম। ভাবতে পারা দরকার যে, আমরা তিন জনেই মানুষ!

অনুত্তমা: সেই জায়গায় তো সকলেই পৌঁছতে চাই আমরা!

রত্নাবলী: কিন্তু ওই যে সবেরই বাণিজ্যিকরণ হয়। ছোট্ট টিপ, হাল্কা লিপস্টিক আর অমুক শাড়ি যে মুহূর্তে ছড়িয়ে দেওয়া হল গোটা সমাজে, ওইটাই নারীত্বের নির্ধারক হয়ে গেল। তোরও শাড়ি, লিপস্টিক আছে। কিন্তু তা দিয়ে কী হয়? তাই বলে কি আমরা আমাদের মতো সাজব না? অথচ, এ রকম সাজগোজ করা মহিলাদের ছবি দিয়ে যেই এই লেখাটা বেরোবে, সঙ্গে সঙ্গে লোকে ঝাঁপিয়ে পড়বে, কেন কেন শুধু নারী দিবস কেন? পুরুষ দিবস কেন নয়?

অনুত্তমা: ঠিক তাই। নারীবাদিদের এ ভাবেই তো পুরুষবিদ্বেষী হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু আমি বিষয়টিকে এ ভাবে নারী-পুরুষের ভাগাভাগিতে দেখতে পারি না। আমি যখন নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলি, তখন এক ব্যক্তির অধিকারের কথা বলি। পুরুষের অধিকার খর্ব হওয়ার কথা বলি না। তা ছাড়া, কে নারী? ধর যে মানুষটির পুরুষ দেহের মধ্যে নারীসত্ত্বা রয়েছে। যিনি রূপান্তরকামী, বা রূপান্তরিত নারী— তাঁকে আমি সে ক্ষেত্রে কোন খাপে ফেলব?

প্রশ্ন: তাঁদের নিয়ে কথা হয় কি নারী দিবসে?

অনুত্তমা: হয় না, কারণ হওয়াটা আরও কঠিন। সমাজকে তার আগে নারী-পুরুষ বিষয়ক ধারণাটাই তো বদলাতে হবে। আমি নারী। তার মানেই তো আমার বিপরীতে পুরুষকে দাঁড় করিয়ে দিলে চলবে না। আমি এক জন উভকামী নারী। নারী-পুরুষ দুই লিঙ্গের মানুষের প্রতিই আকৃষ্ট হই।

প্রশ্ন: নারীর প্রতি আকৃষ্ট হন বলে আপনাকে নারী বলা হবে না, এমন বলছেন কি? নাকি নিজের যৌন চাহিদার বিষয়ে আপনি সচেতন বলেই আপনাকে প্রকৃত নারী হিসেবে না দেখতে চাইতে পারে সমাজ?

অনুত্তমা: আসলে এই যে নারী কাকে চাইতে পারে এবং চাইতে পারে না, তা তো পুরুষতন্ত্রের দ্বারা নির্ধারিত। বলতে চাই যে, আমি পিতৃতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে। কারণ, পিতৃতন্ত্র শুধু নারী নয়, পুরুষদেরও বিরুদ্ধে। কোনও লিঙ্গই তো এর মধ্যে শ্বাস নিতে পারে না। কোনও পুরুষেরও অধিকার নেই আর এক জন পুরুষ কিংবা রূপান্তরিত নারী-পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার। আমার পুরুষদের যেমন ভাল লাগে, নারীদেরও ভাল লাগে। আবার নারীর সুবিধে-অসুবিধের কথা যেমন বলি, পুরুষদেরটাও বলি। যাঁরা নারী-পুরুষের এই দ্বিমাত্রিক ভাগাভাগিতে নিজেদের ফেলেন না, তাঁদের কথাও বলি।

প্রশ্ন: এমনকি পুরুষদের তো নারীর প্রতি আকৃষ্ট না হওয়ারও অধিকার নেই, তাই না? তাতেও তো আবার পৌরুষ যথেষ্ট প্রকাশ পায় না?

রত্নাবলী: একদম। যাঁরা ধর রূপান্তরিত হতে চান, তাঁদেরও তো শান্তি নেই। এক রূপান্তরিত নারী আমাকে এক বার বলেছিলেন, তাঁর ‘ডিমোশন’ হয়েছে। কারণ তিনি পুরুষ ছিলেন, নারী হয়েছেন। সমাজের চোখে এক ধাপ নেমে গিয়েছেন।

অনুত্তমা: সত্যি, সেটাই তো সমস্যা। সকলের উপরে চোখ রাঙাবে যে পুরুষতন্ত্র। শুধু চেহারায় পুরুষ হলে তো চলবে না, চাহিদায় হতে হবে। কাজে হতে হবে।

রত্নাবলী: কান্না পেলে কাঁদবে না। আবেগ তাঁদের থাকবে না। আবেগ নাকি মহিলাদের জিনিস। ভাব তো? আবেগের লিঙ্গ বিভাজন।

‘দু’জন পুরুষ আর দু’জন মহিলার মধ্যে যে যৌন সম্পর্ক হয়, সেটুকু আগে মানতে শিখুক।’

প্রশ্ন: আর নারীকে হতে হবে এক বিপরীত। তাই না? কাঁদতে হবে, নরম-কোমল হতে হবে। পুরুষের নারীর প্রতি আকৃষ্ট হতে হবে, নারীর মনে মনে পুরুষকে চাইতে হবে। সে আবার প্রকাশ করতে পারবে না। লজ্জা পেতে হবে তো তাকে?

অনুত্তমা: পরিস্থিতি যখন এ রকম, তার মধ্যে এক জন নারী নিজের যৌনতার বিষয়ে স্পষ্ট থাকবে, এ তো হয়ই না। মেনেই নিতে পারে না সমাজ যে এক জন নারীর যৌন চাহিদা থাকতে পারে। ফলে সমকামি নারী, উভকামী নারী, রূপান্তরকামী নারী, রূপান্তরিত নারী— কাউকেই ভাল চোখে দেখতে পারে না সমাজ। সবটা যে ওই বিষমকামিতার নির্ধারিত খোপে পড়তে হবে। সকলের সব ইচ্ছে, কাজ— সব!

প্রশ্ন: এই যে নারীর যৌনতা নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া, এইটা কখনও নিজেরা লক্ষ করেছো তোমরা? মানে আমরা কথায় কথায় অনেক কিছুই বলি। কিন্তু নিজের বাড়িতে বা কাজের জায়গায় এমন কিছু অসুবিধেয় পড়েছেন?

অনুত্তমা: এই কথাটা বোধহয় আমি এই প্রথম খোলাখুলি আলোচনা করছি। তবে স্কুলে পড়ার সময় থেকে আমি জানতাম যে, দুই লিঙ্গের মানুষের প্রতিই আকৃষ্ট হচ্ছি। আমার এক বান্ধবী ছিল সে সময়ে। আমাদের রাস্তায় একসঙ্গে দেখা যেত। ওই সময়ে বাড়িতে উড়ো ফোন আসতে শুরু করে। হুমকি দিয়ে।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনারা তো শুধু বন্ধুও হতে পারতেন? বাইরের লোকে জানবেন কী করে?

অনুত্তমা: উত্তরটা সহজ। আমার বান্ধবীটি ছোট্ট টিপ-হাল্কা লিপস্টিকের খোপে পড়তেন না। সমাজ যাকে বলে পুরুষালী নারী, সে রকম ছিলেন। ছোট করে কাটা চুল, পরনেও শাড়ি-সালোয়ার নয়। ফলে ধরে নিয়েছিল এই মহিলার কোনও ‘গোলমাল’ আছে। তাই তার বাড়িতেও বেনামী ফোন এল, আমার বাড়িতেও সাবধানবার্তা।

রত্নাবলী: তোরা তো আমাদের পরের প্রজন্ম। তাই উড়ো ফোন যাচ্ছে তখন। তখন লোকে তো সচেতন হয়েছে খানিকটা। কিছু তো কাজ হয়ে গিয়েছে। আমরা যখন স্কুল-কলেজে পড়ি, তখন এ রকম দু’জন মহিলাকে একসঙ্গে দেখলে বলা হত ওই যে ‘দাদা-বৌদি’ যাচ্ছে। তোর বাড়িতে উড়ো ফোন আসার ঘটনাটা আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সামাজিক পরিবর্তন হিসেবে দেখতে হবে। লোকে অনন্ত বুঝেছে যে, এ রকমও হতে পারে। সেটাও যে ‘স্বাভাবিক’, তা হয়তো মানতে পারেনি। তবে বোধটা তো প্রয়োজন।

অনুত্তমা: আসলে কী বলো তো, আমার জীবন যে একই গতে বাঁধা হতে হবে না, এই ছাড়টুকুও তো সমাজ দিতে রাজি হয়। ফলে বুঝতেই চায় না যে নানা রকম মানুষ থাকে। আমি যেমন এখনও কোনও রূপান্তরিত বা রূপান্তরকামীর সঙ্গে সম্পর্কে যাইনি। নারী আর পুরুষের সঙ্গে গিয়েছি। কিন্তু আগামীতে যাব কি না, জানি না। অন্তত আমার যাপনে সেই খোলা ভাবটা রয়েছে। সেইটাই সমাজেও আসুক। আমি অন্তত সেটুকু চাই।

রত্নাবলী: খুব ভাল ভাবে বললি। আমি যেমন স্বামী-পুত্র নিয়ে সংসার করেও নিজেকে ও ভাবে একটা খাপে বন্দি করে রাখার কথা ভাবতে পারি না। আমি কী ভাবে চলব, শুধু পুরুষেরই আকর্ষণের পাত্রী হয়ে উঠব কি না, সেটা আমার ইচ্ছের উপরে নির্ভর করে, তাই না?

অনুত্তমা: আমার যেমন মনে হয় যে, সমকামী নারীরাও ওই ‘ফ্যান্টাসির’ ফাঁদে পড়ে যান। মানে বিয়ে করলেন আর এক মহিলাকে। তার পরে শাঁখা-সিঁদুর পরছে। এক মহিলাকে তো জিজ্ঞেসই করতে শুনলাম। যদি এ রকমই সাজবি, তবে কষ্ট করে লেসবিয়ান হতে গেলি কেন? আসলে মহিলা সঙ্গী থাকা সত্ত্বেও কেউ শাঁখা-সিঁদুর পরে ঘুরবে কি না, তা একেবারেই তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ। সেটা তিনি কী ভাবনা থেকে করছেন, নিজের কাছে স্পষ্ট থাকা দরকার। এই সাজের কতটা আত্ম-নির্ধারিত, আর কতটা সমাজ নির্ধারিত, এইটা যদি তিনি একটু ভেবে দেখেন।

রত্নাবলী: আসলে এই নিধার্রণটাই তো ফাঁদ। তার মধ্যে কে কখন পড়ে যাচ্ছে, কে জানে! চাহিদা-আকর্ষণের এমন একটা সামাজিক নির্মাণ আছে, সেটা থেকে বেরোনো সহজ না। দাম্পত্যের ব্যাখ্যাটাই যে সামাজিক ভাবে নারী-পুরুষের বন্ধনে বেঁধে ফেলা হয়েছে।

অনুত্তমা: আসলে যৌনতা বা লিঙ্গের নিরিখে যুগলের সংজ্ঞাটা বোধহয় এ বার ভেঙে গড়ার সময় এসেছে। আরও কত নারী দিবস পেরোতে হবে সে সময়টা দেখতে, সেটাই ভাবছি। অনেক অনেক শতক লাগবে।

রত্নাবলী: দু’জন পুরুষ আর দু’জন মহিলার মধ্যে যে যৌন সম্পর্ক হয়, সেটুকু আগে মানতে শিখুক। বাকি তো পরে আসবে।

অনুত্তমা: সঙ্গে খেয়াল করাতে হবে যে, এই মহিলারা ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হননি, পুরুষেরা তাঁকে পছন্দ করেননি বলে নয়। এ সমাজে নানা ধরনের যৌন চাহিদাসম্পন্ন মহিলা আছেন। তাঁদের অনেকেরই পুরুষের প্রতি যৌন টান নেই। কিন্তু তাঁরাও স্বাভাবিক। এটুকুও নারী দিবসের বড় প্রাপ্তি হবে।

রত্নাবলী: আসলে কী বলতো? এইটাও খেয়াল করতে হবে যে, সমাজের বেঁধে দেওয়া পথে চলতে না চেয়ে যাঁরা নিজের জায়গা ধরে রাখতে চান। তাঁরা আসলে ঝুঁকি নেন। সেই ঝুঁকি নেওয়ার ইচ্ছেটারও সম্মান প্রাপ্য।

অনুত্তমা: এইটা খুব ভাল বললে। ঝুঁকির নেওয়ার ভাবনার মর্যাটা প্রাপ্য থাকে। নারী দিবসে সেটাও মনে করা দরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement