প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
করোনা নিয়েও জীবন চলছে স্বাভাবিক ছন্দে৷ ব্যতিক্রম শরীরচর্চা৷ বহু দিনের অনভ্যাসে শরীরে মরচে পড়ে গেছে৷ বর্ষায় মাঝেমাঝেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির। রোজ সকালের হাঁটার রুটিন কবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যদিও জামা-জুতো, মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে ঘুমোতে যাওয়া-র তোরজোর সব ঠিক আছে৷ অ্যালার্মের আওয়াজে ঘুমও ভাঙছে, কিন্তু বৃষ্টির আওয়াজ শুনেই আলসেমি শুরু। তখনই মনে হচ্ছে আরেকটু না-ঘুমোলে সারা দিন টানা যাবে না৷ ফল, দিনভর অপরাধবোধ৷
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানালেন, “যত এ ভাবে সময় নষ্ট করবেন, তত কমজোর হবে ফুসফুস-হাড়-পেশি-সন্ধি৷ লাইফস্টাইল ডিজিজ তথা হাই ওবেসিটি-প্রেশার-সুগার-কোলেস্টেরল, হৃদ্রোগের আশঙ্কা ও প্রকোপ বাড়বে৷ কমবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, করোনার যুগে যা করা কোনও কাজের কথা নয়৷ কাজেই করছি-করবো না করে, শুরু করে দিন৷ ৭-১০ দিন কোনও মতে কাটিয়ে দিন৷ তিন সপ্তাহ পার করে দিতে পারলে তো কথাই নেই৷ কারণ দেখা গেছে কোনও কাজ তিন সপ্তাহ টানা করলেই তা অভ্যাসে পরিণত হয়৷ ব্যায়ামের ক্ষেত্রে আরও সুবিধে৷ কারণ নিয়মিত ব্যায়ামে শরীরে যে মন-ভালো-করা হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যার কারণে মানসিক চাপ কমে, শরীর-মন ঝরঝরে হয়, ভালো ঘুম হয়, ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায় বলে যাঁরা এক বার ব্যায়াম শুরু করেন, তাঁরা আর ছাড়তে পারেন না৷”
প্রতীকী ছবি।
কিন্তু আলস্য কাটিয়ে কী ভাবে শুরু করা যাবে? পথ দেখিয়েছেন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ গৌতম সাহা৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক৷
জড়তা কাটাতে
১। মনস্থির করে নিন, এই সপ্তাহে রোজ একটু হলেও ব্যায়াম করবেন৷ জামা-জুতো হাতের কাছে রাখুন৷ অ্যালার্ম বাজামাত্র উঠে জামা-জুতো পরে বেরিয়ে যান৷ ইচ্ছে হলে বেরোনোর জামা-প্যান্ট পরেও শুতে পারেন৷ কাজ এগিয়ে থাকবে৷ বেরোনোর অনিচ্ছা আরেকটু কম প্রশ্রয় পাবে৷
২। একা ব্যায়াম করতে ভালো না লাগলে হয় কোনও সঙ্গী খুঁজে নিন নয়তো কোনও দলে নাম লেখান৷ যোগা, জুম্বা, পিলাটের বিভিন্ন গ্রুপ আছে শহরে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিন৷ জিমেও যেতে পারেন৷ একা ব্যায়াম করলে, সে হাঁটা হোক কি দৌড়োনো, যোগা হোক কি ওয়েট ট্রেনিং, নির্দিষ্ট ব্যায়ামের উপযোগী গানের লিস্ট বানিয়ে শুনতে শুনতে ব্যায়াম করুন৷ একঘেয়ে কম লাগবে৷
৩। শরীরের অবস্থা বুঝে ব্যায়ামের লক্ষ্য ঠিক করুন৷ প্রথম দিকে অল্প হাঁটাহাঁটি, যোগা, স্ট্রে চিং করতে পারেন৷ ওয়েট ট্রেনিংয়ের অভ্যাস থাকলে খুব কম ওজন দিয়ে শুরু করুন৷ ২০-৩০ মিনিট কি বড়জোর ৪০ মিনিট করুন প্রথম দিকে৷ আস্তে আস্তে বাড়াবেন৷ না হলে এত ব্যথা হবে যে ব্যায়ামের মোটিভেশন আরও কমবে৷
৪। শুরুতে ওয়ার্মআপ করতে ভুলবেন না৷ ভারী ব্যায়াম করলে তো বিশেষ করে, নয়তো চোট লেগে যাবে৷
৫। ব্যায়াম শেষে করুন কুল ডাউন দিয়ে৷ সামান্য কয়েকটি স্ট্রেচিং করলেই হবে৷
৬। খাওয়া-দাওয়া করুন ঠিক ভাবে৷ নয়তো ব্যায়ামের ধকল নিতে পারবেন না৷
মনে রাখবেন, রুটিনে ফেরা কিন্তু সহজ কাজ নয়৷ কাজেই কোনও তাড়াহুড়ো করবেন না৷ নিজেকে সময় দিন৷ আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে৷