প্রতীকী ছবি।
নির্বাচনের সময়ে মুকুল রায় একেক সময় একেক রকম কথা বলছিলেন। তাঁর ছেলে অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, ‘‘বাবার সোডিয়াম-পটাশিয়ামের সমস্যা হচ্ছে। তাই একটু অসংলগ্ন কথা বলছেন।’’ কথাটা কতটা সত্যি তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু শরীরের সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রায় গোলমাল দেখা গেলে সত্যিই এমন হতে পারে।
রাতে ভাল করে ঘুমোচ্ছেন, অথচ সকালে উঠেই কোথা থেকে একরাশ ক্লান্তি ভিড় করছে। মাঝে-মাঝে শরীরের কোনও কোনও অংশ ফুলে যাচ্ছে। থেকে থেকেই ছোটখাটো জিনিস ভুলে যাচ্ছেন, এই সব কিন্তু সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ার লক্ষণ। মানবদেহের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই দুটি ইলেক্ট্রোলাইটের কারণেই আমাদের কোষগুলি স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। এর মাত্রা কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্কের কোষও। কাজেই ছোটখাটো জিনিস ভুলতে থাকার সমস্যা দেখা দেয়। একটু বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রায়শই সোডিয়াম-পটাশিয়াম কমে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে ৩.৫-৫.১ এমজি/ডিএল পটাশিয়াম ও ১৩৫-১৪৫ এমজি/ডিএল সোডিয়াম থাকা উচিত।
কেন সোডিয়াম-পটাশিয়াম কমে যায়?
অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে নুন বেরিয়ে গেলে, সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে। এছাড়া বয়স্ক ব্যক্তিদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা থাকলে, তাঁরা নুন কম খেতে বাধ্য হন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ওষুধও শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ঘাটতির কারণ হতে পারে। এছাড়া মেনিনজাইটিস, ব্রেন টিউমার, কিডনির সমস্যা থাকলে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের তারতম্য দেখা যায়।
প্রতীকী ছবি
সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা কমলে কী হবে?
সোডিয়াম-পটাশিয়াম তার স্বাভাবিক মাত্রার নীচে নেমে গেলে হঠাৎ করেই ভীষণ দুর্বল লাগতে পারে। সেই সঙ্গে হাত ও পা ফুলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে অনেক সময় স্মৃতিজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেই অর্থে বিরল হলেও, এর ফলে এনসেলোপ্যাথিও হওয়ার একটা ঝুঁকি থেকে যায়। শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা যদি ১১০এমজি/ডিএল-এর নীচে নেমে যায়, তাহলে মানুষ কোমাতেও চলে যেতে পারে।
কী করবেন?
গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে থাকলে রান্না করা খাবার ও অন্যান্য উপাদান মিলিয়ে রোজ ৩-৪ গ্রাম নুন খান। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগলে বিষয়টা আলাদা। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সোডিয়াম-পটাশিয়াম পরীক্ষা করান।