কবাবে মিশছে ক্ষতিকর কৃত্রিম রং! ছবি: ফ্রিপিক।
রান্না করা খাবারে কৃত্রিম রঙের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কর্নাটক সরকার। রাস্তার দোকানগুলিতে যে কবাব বা চিকেনের নানা পদ বিক্রি হয়, তাতে যথেচ্ছ পরিমাণে কৃত্রিম রং মেশানো হয় বলেই দাবি কর্নাটক স্বাস্থ্য দফতরের। এই সব কৃত্রিম রঙে এমন রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে, যা শরীরে ঢুকলে ক্যানসারের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাবে। তবে শুধু আমিষ নয়, বেশ কিছু নিরামিষ খাবারেও কৃত্রিম রং মেশানো হচ্ছে বলেই দাবি স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।
কর্নাটক খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা প্রায়ই রাস্তার ধারে ছোটখাটো দোকান কিংবা বড় রেস্তরাঁয় হানা দেন। মঙ্গলবার তেমনই একটি অভিযান চালানোর সময়ে রাস্তার ধারের দোকানগুলি আধিকারিকদের নজরে আসে। সেখানে গিয়ে মাছ ও মাংসের কবাব এবং আরও বিভিন্ন রান্না খাবারের নমুনা তাঁরা নিয়ে এসে পরীক্ষা করেন।
কবাবের ৩৯টি নমুনার পরীক্ষা করা হয়েছে এবং দেখা গিয়েছে, অন্তত ৮ ধরনের কবাবে ক্ষতিকারক কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে। যেগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তার পরেই কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডুরাও নির্দেশিকা জারি করে বলেছেন, আমিষ বা নিরামিষ কোনও খাবারেই কৃত্রিম রং মেশানো যাবে না। এই নিষেধাজ্ঞা সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য যে কোনও মুহূর্তে স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা এই দোকানগুলিতে অভিযান চালাতে পারেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন “এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে ৭ বছরের জন্য কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আইনের কঠোরতম ধারায় মামলা করাও হতে পারে। কেউ মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে খেলা করতে পারে না।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানিয়েছেন, মাছ-মাংসের কবাব, চিকেনের বেশ কিছু পদ ও কয়েক রকম নিরামিষ খাবারে যে কৃত্রিম রং মেশানো হচ্ছে, তাতে ‘রোডামিন-বি’ নামক ক্ষতিকর একটি রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে। জলে দ্রবণীয় রাসায়নিক ‘রোডামিন-বি’। এই রাসায়নিক শরীরে ঢুকলে লিভারের জটিল রোগ হতে পারে। ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়বে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথায়, বড়রা শুধু নন, ছোটরাও রাস্তা থেকে কেনা খাবার খায়। কৃত্রিম রং দিনের পর দিন তাদের শরীরে ঢুকলে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
কয়েক মাস আগেই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে কৃত্রিম রঙের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছিল। হাওয়াই মিঠাইতে ক্ষতিকর রাসায়নিক খুঁজে পাওয়ার পরে তা বিক্রি বন্ধই করে দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সরকার।