বজ্রপাতের সময়ে স্নান করা একেবারেই নিরাপদ নয়। ছবি-প্রতীকী
বর্ষার মরসুম অনেকের বেশ পছন্দের। আবার এ সময়ে অনেকের বিড়ম্বনার শেষ থাকে না! ভাল-মন্দের মাঝেই এই মরসুমে বাজ পড়ে অনেক মানুষের মৃত্যুও হয়। সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে প্রায় ২৪,০০০ মানুষ বজ্রপাতে মারা যান এবং ২,৪০,০০০ আহত হন।
মূলত ‘ক্লাউড টু গ্রাউন্ড লাইটেনিং’ বা মেঘ থেকে মাটিতে নেমে আসা বজ্রপাতের কারণে মানুষের প্রাণ যায়। বজ্রপাতের সময় গাছের নীচে দাঁড়ানো, জানালার কাছে দাঁড়ানো, ফোন চার্জে লাগিয়ে কথা বলতে বারণ করা হয়। এ সময়ে নিরাপত্তার কারণে বাড়িতে থাকারই পরমর্শ দেওয়া হয়। তবে বজ্রপাতের সময়ে বাড়িতে থাকলেই কি আপনি সম্পূর্ণ নিরাপদ?
বজ্রপাতের সময়ে স্নান করা একেবারেই নিরাপদ নয়। শুধু তা-ই নয়, এই সময়ে বাসন মাজলেও প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাজ পড়লে পাইপবাহিত জল এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী এমন কোনও জিনিস স্পর্শ না করাই ভাল। বাজ পড়ার পর জল ও ধাতব জিনিসের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহণের পথ খোঁজে। বজ্রপাতের সময়ে ধাতব কল ও জল দুই-ই বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে যেতে পারে। তাই কল খুলেই হোক কিংবা শাওয়ারে বাজ পড়ার সময়ে স্নান করলে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুও হতে পারে।
এই সময়ে কংক্রিটের মেঝেতে শোবেন না। কংক্রিটের দেওয়ালে হেলান দেবেন না। কংক্রিট এমনিতে বিদ্যুতের পরিবাহক নয়। তবে বাজ পড়লে ধাতব বিমের সঙ্গে সংস্পর্শে এসে তা বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে উঠতেই পারে।
সাধারণত কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়। সেই কারণে এই মেঘকে বজ্রগর্ভ মেঘও বলা হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে এপ্রিল-মে মাসে এই বজ্রগর্ভ মেঘের পরিমাণ বেড়েছে। তার একটি অন্যতম কারণ যেমন বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য, তেমনই আর একটি কারণ হল তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত দূষণ। দূষণের মাত্রা যত বাড়ছে, গড় তাপমাত্রা তত বাড়ছে। ফলে বজ্রগর্ভ মেঘের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আর বাজ পড়ে মৃত্যুর হারও বাড়ছে। তাই সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।