করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরের অন্যতম উপসর্গ হল অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া ও প্রবল শ্বাসকষ্ট। কিন্তু শ্বাসকষ্ট না হলেও অক্সিজেনের মাত্রা কমছে কি না, তা এমনিতে বোঝা যায় না। তাই মৃদু উপসর্গযুক্ত বা উপসর্গহীন করোনা রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার পরিমাপ বলে দেয় পালস অক্সিমিটার। এই যন্ত্রটি আঙুলের ডগায় লাগালেই পরীক্ষা সম্ভব। হৃদ্স্পন্দনও মাপা যায়।
মেডিসিন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘রোগীর হিমোগ্লোবিনে অক্সিজেন কতটা সম্পৃক্ত হয়েছে, তা বলে দেওয়ার কাজটি করে পালস অক্সিমিটার। একজন সুস্থ মানুষের ৯৬ থেকে ৯৮ শতাংশ অক্সিজেন স্যাচুরেশন স্বাভাবিক। কিন্তু তা ৯০-এর নীচে নামলেই চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় বলে হাইপোক্সিয়া। এতে শরীরে তখন অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ায় শ্বাসকষ্টের সঙ্গে মাথা, বুক ব্যথা ও হৃদ্স্পন্দনও বাড়তে পারে।’’ এই পরীক্ষার জন্য মধ্যমা প্রধান হলেও, তর্জনী বা বুড়ো আঙুলও ব্যবহার হয়। এমনিতে দিনে দু’বার, সমস্যা জটিল হলে প্রতি চার থেকে ছয় ঘণ্টা অন্তর পরীক্ষা করতে পারেন। তবে আঙুল ঠান্ডা হলে বা জ্বর হলে অনেক সময়েই ভুল রিডিং আসতে পারে, সে ক্ষেত্রে একটু বিরতি দিয়ে পুনরায় মাপুন।
‘‘অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫-এর নীচে গেলেও চিন্তার কারণ ছিল না এত দিন। কিন্তু করোনা আবহে ৯৪ থেকে কমলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। হঠাৎ ওই মাত্রা ৯০-এর নীচে নেমে গেলে শ্বাসকষ্ট শুরুর আগেই অক্সিমিটারে ধরা পড়বে। তখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে রোগীকে,’’ বললেন ডা. তালুকদার।
সার্জিক্যাল স্টোর ছাড়াও অনেক মেডিক্যাল স্টোরেই অক্সিমিটার মিলবে। পাওয়া যায় অনলাইনেও। দাম ১০০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। তবে ডা. তালুকদারের মতে, ‘‘ঘরে-ঘরে অক্সিমিটার মজুত না করে, আবাসন বা অ্যাপার্টমেন্টে কয়েকটি অক্সিমিটার রেখে স্যানিটাইজ় করে ব্যবহার করুন। চাহিদা বেড়ে অক্সিমিটারের আকাল তৈরি হলে সে আর এক সমস্যা।’’