অফিসের কেমন কর্মীরা বসকে তেল দেন?

বারবারই ভেবেছেন কেন এমন করে এঁরা? কোনও আত্মসম্মান নেই? মানুষের কোনও আচরণই আসলে কারণহীন নয়। দেখুন তো এঁদের সঙ্গে এই কারণগুলো মেলে কিনা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ১২:১৯
Share:

প্রায় ১০ বছর ধরে একই অফিসের সহকর্মী আপনারা। উপর উপর সম্পর্কও ভাল বেশ আপনাদের। শুধু বসের সামনে গেলেই আপনার সহকর্মীর মুখের হাসি, নোয়ানো ঘাড়, ধোঁয়া ওঠা কফি আনানোর তত্পরতা, বসের টেবিলের এক চিলতে ধুলোর জন্য সাফাইকর্মীকে ঝাড়, মাদ্রিদ থেকে আনা পেপারওয়েটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হওয়া দেখলেই আপনার গা পিত্তি জ্বলে যায়। এমন সহকর্মী আমাদের সকলেরই রয়েছে। বারবারই ভেবেছেন কেন এমন করে এঁরা? কোনও আত্মসম্মান নেই? মানুষের কোনও আচরণই আসলে কারণহীন নয়। দেখুন তো এঁদের সঙ্গে এই কারণগুলো মেলে কিনা-

Advertisement

১। যোগ্যতার অভাব- খেয়াল করে দেখবেন যাঁরা বসকে তেল দেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা অফিসে অন্যদের তুলনায় কম মেধসম্পন্ন হন। কাজের ব্যাপারেও বিশেষ অভিনবত্ব থাকে না এঁদের, দক্ষতাও কম হয়। এই সব ঘাটতির কোনও একটা থাকলে, অথবা সব কটাই এক সঙ্গে হলে বসকে তেল দেন অনেকে।

২। ফাঁকিবাজি- বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অলস বা ফাঁকিবাজ মানুষরাই বসকে তেল দেন। বসের গুড বুকে থাকলে যে কম কাজ করেও বেশ বাহবা জুটে যায়।

Advertisement

৩। উচ্চাকাঙ্ক্ষা- কেরিয়ার নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন থাকলে বসকে অনেকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চান। এঁরাও বসের পা চাটেন, আবার বসেরাও এঁদের ওপর নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। ফলে কেরিয়ারের সিঁড়ি চড়তে গিয়ে অনেক সময়ই ফেঁসে যান এঁরা।

৪। আত্মসম্মানের অভাব- এই সব মানুষদের আত্মসম্মানের অভাব থাকে। এঁদের দিয়ে বস নিজের পাও টিপিয়ে নিতে পারেন, বাড়ির যে কোনও কাজ করিয়ে নিতে পারেন। আর এঁরা সে সব করেও দেন। এ দিকে এই মানুষরা কিন্তু সহকর্মীদের সঙ্গে বেশ বাজে ব্যবহার করেন। আর নিজের থেকে নীচু তলার কর্মীদের তো মানুষ বলেই মনে করেন না হয়তো। কোনও মানুষের সামগ্রিক ব্যবহার কেমন সেটাই কিন্তু তাঁর ব্যক্তিত্বের পরিচয়

৫। দুর্বলতা ঢাকতে- খেয়াল করলে দেখবেন যিনি বসকে তেল দিচ্ছেন তাঁর কিছু না কিছু খামতি রয়েছে। হয়তো ইনি রোজ দেরি করে আসনে, কোনও কাজ যা জানা প্রয়োজন কিন্তু জানেনে না অথবা ইনি কোনও সমস্যায় রয়েছেন। এই সব খামতি বা ফাঁক পূরণ করতেও অনেকে বসতে হাতে রাখতে চান।

৬। লালন পালন- প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বা চাকরি পেয়ে কোনও স্বভাব হঠাত্ গজিয়ে উঠতে পারে না। এঁরা ছোট থেকেই এটা শিখেছেন। স্কুল, কলেজে যাঁরা শিক্ষক, অধ্যাপকদের পিছন পিছন ঘোরেন তাঁরাই কর্মক্ষেত্রে গিয়ে বসকেও তেল দেন। এঁদের পরিবারের ইতিহাস ঘাঁটলেও হয়তো দেখবেন বাপ-ঠাকুরদার জীবনেও বসকে তেল দিয়ে উন্নতির ঘটনা রয়েছে।

তবে চিন্তা করবেন না। কাজ দিয়ে যদি বসের গুড বুকে থাকতে পারেন, তবেই থাকুন। মনে রাখবেন তেল দিলে পথ শুধু মসৃণই হয় না, পিচ্ছিলও হয়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement