আচমকাই হৃদ্স্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু ঘটে
জিম করার সময়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন বছর পঁয়ত্রিশের যুবক। কেন এমন ঘটল, কেউ বুঝতেই পারলেন না। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করলেন তাঁকে। কারণ জানালেন ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নিঃশব্দে মৃত্যু ডেকে আনে এই সমস্যা। অর্থাৎ, আচমকাই হৃদ্স্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু ঘটে। শুধু অসুস্থদের নয়, এমন হতে পারে খেলোয়াড়দের মতো সুস্থসবল মানুষদেরও।
তবে চিকিৎসকেরা এটাও জানাচ্ছেন, এই সমস্যা সম্পর্কে মানুষকে যদি সচেতন করা যায়, তা হলে এক জনের জীবন তিনি বাঁচাতে পারেন সিপিআর দিয়ে। কিন্তু তা নিয়ে অধিকাংশ মানুষের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। হৃদ্রোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে ব্লকেজ থাকার জন্য যে হার্ট অ্যাটাক হয়, তাতে রোগীর বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি হয়, গা গুলোয় এবং প্রচণ্ড ঘাম হয়। এমনকি, তিনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করতে পারেন। সেই সময়ও থাকে। কিন্তু সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে সেই সুযোগ প্রায় নেই। কারণ, এটি আচমকা ঘটে এবং কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। হৃদ্পিণ্ডের ইলেকট্রিক সার্কিটগুলি গোলমাল করে হৃদ্স্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। অ্যাপোলো হাসপাতালের হৃদ্রোগ চিকিৎসক ও ইলেকট্রোফিজ়িয়োলজিস্ট আফতাব খান বলেন,“হৃদ্পিন্ড আচমকা থেমে গেলে মস্তিষ্ক রক্ত পায় না। আর শরীরকে চালানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি ওই অঙ্গ যদি তিন মিনিট রক্ত না পায়, তা হলেই স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। ১০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে রোগীর।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ওই সময়ে চিকিৎসক বা অ্যাম্বুল্যান্স আসার অপেক্ষা না করে আশপাশের লোকজন রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন। তাতে তাঁর ঝুঁকি কেটে যাওয়া সম্ভব।
কাল, ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হৃদয় দিবসের আগে মঙ্গলবার এ নিয়ে এক আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল অ্যাপোলো হাসপাতাল। চিকিৎসকেরা জানান, কারও শ্বাসপ্রশ্বাস বা হৃদ্স্পন্দন আচমকা বন্ধ হয়ে গেলে সব থেকে বেশি কাজে আসে কার্ডিয়ো-পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর)। আচমকা কারও এমন সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে সেই রোগীকে মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার পর্যন্ত জোরে জোরে এবং দ্রুত বুকে চাপ দিতে হবে। চিকিৎসকেরা আরও জানান, যত ক্ষণ না জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে হৃদ্পিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, তত ক্ষণ সিপিআর দিয়ে রোগীর মস্তিষ্কে এবং অন্যান্য অঙ্গে অক্সিজেনপূর্ণ রক্তের প্রবাহ চালু রাখা সম্ভব।