প্রতীকী ছবি।
একটি গোটা দেশ এখন প্রশ্নের মুখে। বলা ভাল, তাদের সংস্কৃতি নিয়ে চলছে তর্ক। অতিথি আপ্যায়নের ধরন দেখে অবাক গোটা বিশ্ব।
নেটমাধ্যমে মজা করেই শুরু হয়েছিল বিষয়টি। এক নেটিজেন লেখেন, কারও বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সংস্কৃতি বা ধর্মকে সম্মান জানানোর জন্য সবচেয়ে অদ্ভুত কোন কাজ করতে হয়েছে কাউকে, তা লিখে জানাতে। তার উত্তরেই এক জন জানান, নৈশভোজের সময়ে সুইডেনের কোনও বন্ধুর বাড়িতে থাকলে কেমন পরিস্থিতি হবে, তা নিয়ে। ‘এক সুইডিশ বন্ধুর বাড়িতে খেলতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ তাঁর মা চেঁচিয়ে জানালেন রাতের খাবার তৈরি। তখন বন্ধু কী করল জানেন? বলল, একটু অপেক্ষা করো আমি খাওয়া সেরে আসছি। বিষয়টি আজব ছিল!’
এর পর থেকেই শুরু হয় সুইডেনে অতিথি আপ্যায়নের সংস্কৃতি নিয়ে তর্ক। আর এক জন লেখেন, ‘বন্ধুর বাড়িতে রাত কাটিয়েছি। সকালে সে বলল ১৫ মিনিটের জন্য নীচ থেকে আসছে। আমি নীচে নেমে দেখি সকলে প্রাতরাশ সারছে। বন্ধু আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘উপরে গিয়ে একটু অপেক্ষা করো, আমার হয়ে এসেছে। এখনই উপরে আসছি।’
এর পর থেকে সুইডেনের সংস্কৃতি নিয়ে নানা ধরনের মিম এবং সমালোচনায় ভরে গিয়েছে নেটমাধ্যম। ‘হ্যাশট্যাগ সুইডেনগেট’ বলে চলতে থাকে নিন্দার সেই চেন। এক এক দেশের মানুষ নিজেদের অতিথি আপ্যায়নের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেন। ভারতীয় কেউ লেখেন, তাঁরা অতিথিকে দেবতুল্য মনে করেন। কেউ বা ব্রাজিল থেকে লেখেন, অতিথিকে নিজের খাবারও দিয়ে দেওয়ার চল আছে সে দেশে।
তবে নিন্দা শুধু অতিথি আপ্যায়নে থেমে থাকেনি। তা গড়ায় গোটা সুইডেনের সংস্কৃতি নিয়ে। কেউ বলছে, শুধু খাবার নয়, নিজেদের তোয়ালে-চাদরও নিয়ে যেতে হয় সুইডেনে বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে থাকতে হলে। কেউ আবার ঔপনিবেশিকতায় সে দেশের কত অবদান ছিল, সে সব কথাও তুলে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
এখন অবশ্য ‘হ্যাশট্যাগ সুইডেনগেট’ শুধু থেমে নেই এক তরফা দোষারোপে। পাল্টা উত্তরও আসতে শুরু করেছে। কেউ কেউ লিখছে, ‘আমরা সুইডিশ। আমরা অতিথিদের খাওয়াই না। তাতে অন্যের কী!’ কারও বা বক্তব্য, ‘আমরা নিজেরা যতটুকু খেতে পারব, ততটুকুই রান্না করি। হঠাৎ অতিথি এলে তাই ভাগ করে খাওয়ার চল নেই।’ কারও বা বক্তব্য, ‘আমরা কোনও গরিব দেশের মানুষের মতো শুধু শুধু খেতে দিতে পারা, না পারা নিয়ে লজ্জিত বোধ করি না।’
তর্ক এখনও থামেনি। চলছে। আর কোন দেশে অতিথি আপ্যায়নের চল কেমন, তা-ও উঠে আসছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।