WhatsApp

১৫ মে-র মধ্যে নয়া নীতিতে সম্মতি না জানালে কী হতে পারে আপনার হোয়াটসঅ্যাপের

সম্মতি না জানালে ১৫ মে-র পর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ‘ইনঅ্যাক্টিভ’ হয়ে যাবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:৩৩
Share:

ফাইল ছবি।

ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য যে নতুন নীতি ঘোষণা (‘প্রিভেসি পলিসি’) করেছে হোয়াটসঅ্যাপ, আগামী ১৫ মে-র মধ্যে তাতে সম্মতি জানাতেই হবে ব্যবহারকারীদের। যাঁরা সম্মতি জানাবেন না ১৫ মে-র পর তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অরকেজো (ইনঅ্যাক্টিভ) হয়ে যাবে। তার ৪ মাস পর (১২০ দিন) সেই অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি মুছে দেওয়া (‘ডিলিট’) হবে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে কী হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ এ নিয়ে সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালত হোয়াটসঅ্যাপকে নোটিস দিয়ে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত জানাতে বলেছে।

Advertisement

আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার নতুন নীতি কার্যকর করতে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। সেই নীতিতে সম্মতি জানানোর জন্য ব্যবহারকারীদের জন্য ১৫ মে পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যদি কোনও ব্যবহারকারী সম্মতি না জানান, তা হলে তাঁর জন্য নতুন সময়সীমা ধার্য করা হবে না।

নয়া নীতিতে সম্মতি না জানালে ব্যবহারকারীদের কী কী মাশুল গুণতে হবে নিজেদের আলাদা একটি পেজে পেজেও তা সবিস্তারে জানিয়ে দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।

Advertisement

বলা হয়েছে, ‘নতুন নীতিতে সম্মতি জানানোর জন্য যে স্থান (অ্যাকসেপ্ট বাটন) রয়েছে তাতে ‘ক্লিক’ না করলে ব্যবহারকারীরা সামান্য কয়েকটা দিন হোয়াটসঅ্যাপ কল ও নোটিফিকেশন পেতে পারবেন। কিন্তু অ্যাপ থেকে কোনও মেসেজ পড়তে ও পাঠাতে পারবেন না’।

সে ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারীদের সামনে দু’টি রাস্তা খোলা থাকছে।

১) হোয়াটসঅ্যাপের নতুন নীতিতে সম্মতি জানানো।

২) চ্যাট হিস্ট্রি ডাউনলোড করে অন্য মেসেজিং অ্যাপে চলে যাওয়া।

১৫ মে-র মধ্যে নয়া নীতিতে সম্মতি না জানালে ব্যবহারকারীর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অকেজো হয়ে যাবে। তার ১২০ দিন পর সেই অ্যাকাউন্ট আপনা আপনিই মুছে যাবে।

তবে এ নিয়ে সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও হয়েছে। গ্রাহকদের গোপনীয়তা রক্ষার প্রশ্নে ফেসবুক, হোয়াট্‌সঅ্যাপকে সম্প্রতি নোটিস দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য ছিল, গ্রাহকদের গোপনীয়তার প্রশ্নে আশঙ্কা তৈরি হলে তাতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকেও নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালত। একটি মামলার শুনানির সময় গ্রাহকদের গোপনীতায় রক্ষা যে আদালতেরও দায়িত্ব, তা-ও মনে করিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ বোবডে। ফেসবুক এবং হোয়াট্‌সঅ্যাপের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘সকলের কাছেই তাঁর গোপনীতায় অধিকার গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা ২-৩ ট্রিলিয়ন ডলারের (লক্ষ কোটির) সংস্থা হতে পারেন। তবে মানুষের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। এবং আমাদেরই তা রক্ষা করতে হবে।’’

গত জানুয়ারিতে পরিষেবা সংক্রান্ত সুরক্ষা বিধিতে বদলের ঘোষণা করে হোয়াট্‌সঅ্যাপ। সে সময় তারা জানিয়েছিল, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তা কার্যকর করা হবে। তবে দেশজোড়া গ্রাহকদের আশঙ্কায় তা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হন হোয়াট্‌সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। নিজেদের কথাবার্তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় বহু গ্রাহকের। হোয়াট্‌সঅ্যাপের নয়া সুরক্ষাবিধি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কর্মণ্য সিংহ সরিন এবং অন্য অনেকে। আদালতে তাঁদের আইনজীবী শ্যাম দিয়ানের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির থেকে এ দেশে তাদের সুরক্ষাবিধি সংক্রান্ত নীতিতে পার্থক্য করছে হোয়াট্‌সঅ্যাপ। তবে হোয়াট্‌সঅ্যাপের তরফে তাদের এক আইনজীবী কপিল সিব্বল পাল্টা দাবি করেন, ‘‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে হোয়াট্‌সঅ্যাপের বিশেষ তথ্যসুরক্ষা নীতি আলাদা। ওখানে নয়া আইন হলে আমরাও তা অনুসরণ করব।’’

তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বোবডের মন্তব্য, ‘‘(হোয়াট্‌সঅ্যাপে) নিজেদের তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে মানুষজনের আশঙ্কা রয়েছে। মানুষজনের মনে হচ্ছে, কাউকে মেসেজ করলে তার গোটাটাই ফেসবুকে ফাঁস হয়ে যাবে।’’ যদিও এ নিয়ে ওই দুই সংস্থার তরফেই কী প্রতিক্রিয়া জানানো হয়, সে দিকে নজর থাকবে বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৪ সপ্তাহ পরে এই মামলায় ফের শুনানি হবে।

ফলে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের নীতি কী হতে চলেছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement