মনের মতো খেয়েও এমন চেহারা পাওয়া যায়? ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
হিন্দি চলচ্চিত্র ‘অ্যানিম্যাল’ হোক কিংবা ওয়েব সিরিজ় ‘আশ্রম’— খলনায়কের চরিত্রে ববি দেওলের অভিনয় শুধু নয়, নজর কেড়েছে তাঁর সুঠাম শরীরও। দর্শকদের অনেকেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন, এমন পেশিবহুল চেহারাই মানায় ‘ভিলেন’কে।
শরীরে এতটুকু মেদ নেই। বরং ক্যামেরার নানা দৃষ্টিকোণ থেকে ধরা পড়েছে অভিনেতার উন্মুক্ত পেশিবহুল শরীর। যে কোনও শরীরচর্চাকারীর কাছেই ঈর্ষণীয় এমন দৈহিক গড়ন। এ হেন আকর্ষক চেহারা যে অনায়াসে মেলে না, তা মানেন সকলেই। কঠোর শরীরচর্চা, দীর্ঘ ডায়েটের ফলেই ফিট ববি দেওল। কিন্তু ফিটনেস মানেই কি পছন্দের সব খাবার চিরতরে ছেড়ে দেওয়া? এই ব্যাপারেই পথ দেখাচ্ছেন অভিনেতা।
কড়া ডায়েটের মধ্যে থাকলেও অনেকেই সপ্তাহে এক দিন, কেউ আবার মাসে এক বা দু’দিন পছন্দের খাবার খান। সেই দিনটিকে বলা হয় ‘চিট ডে’। তবে সকলেই যে সেটি মানেন, তা কিন্তু নয়। কেউ আবার চিনিকে চিরশত্রু ভেবে জীবন থেকে মিষ্টি বাদ দেন। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জন আব্রাহাম বলেছিলেন, গত ১৭ বছরে তিনি কাজু কাতলির এক কণাও মুখে তোলেননি।
তবে ‘চিট ডে’-তে জমিয়ে খান ববি। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে অভিনেতা সেই ছবি ভাগ করে নিয়েছেন অনুরাগীদের জন্য। তাতেই দেখা গিয়েছে, তিনি ব্রেড পুডিং খাচ্ছেন। আর একটি ছবিতে শোভা পাচ্ছে, চকোলেট পেস্ট্রি এবং ভ্যানিলা আইসক্রিম।
ব্রেড পুডিং, চকোলেট পেস্ট্রি, আইসক্রিম— তিন খাবারেই ফ্যাট এবং ক্যালোরির পরিমাণ যথেষ্ট। বিশেষত, যাঁরা মেদ গলানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের এই ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকারই পরামর্শই দেন পুষ্টিবিদেরা।
অথচ সেই খাবার খেয়েই এমন গড়ন অভিনেতার! তা-ও কি সম্ভব? খাবারের ছবি পোস্টের পাশাপাশি আরও একটি ছবি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেতা। যেখানে দেখা যাচ্ছে পার্কের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। ববি লিখেছেন, ‘‘ক্যালোরি ঝরানোর জন্য হাঁটা প্রয়োজন।’’ অর্থাৎ তিনি যেমন খাচ্ছেন, তেমনই শরীরচর্চাও করছেন, যার ফলে বাড়তি ক্যালোরি জমতে পারছে না।
এ ভাবেই কি ডায়েট করা দরকার? বি-টাউনে তারকাদের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর এক বার তাঁর সমাজমাধ্যম পোস্টে জানিয়েছিলেন, ডায়েট নিয়ে সারা দিন ভাবনাচিন্তা করতে হলে সেটাই ভুল। পেটে খিদে, চোখে ঘুম নেই, অথচ খেতে ভাল লাগছে না, তেমন খাবার খেয়ে যেতে হচ্ছে, সেটা কখনও শরীরের উপযোগী ডায়েট হতে পারে না।
স্বাস্থ্যসচেতনতা নিয়ে ভাবতে ভাবতে অনেকে চিনিকে কার্যত শত্রু ভেবে ফেলেন। ফলে, কখনও কেক, আইসক্রিম, চকোলেট খেয়ে ফেললে মাথায় শুধু ক্যালোরি নিয়ে চিন্তাই মাথায় ঘোরে। কখনও লোভের বশে মিষ্টি খেয়ে ফেললেও অনেকের মনে তীব্র অপরাধবোধ তৈরি হয়। তবে করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা এবং ইংল্যান্ডের ফিটনেস প্রশিক্ষক এমা ডরোথি দু’জনেই মনে করেন, মাঝেমধ্যে পছন্দের খাবার খেয়ে নিলেও তা নিয়ে অপরোধবোধ অর্থহীন। এ জন্য যে অতিরিক্ত শারীরিক কসরত করে তখনই বাড়তি ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে হবে, বিষয়টি তেমনও নয়। বরং বাড়তি ক্যালোরি ঝরানোর জন্য দৈনন্দিন শরীরচর্চাই যথেষ্ট।