শিশুর চোখ ভাল রাখতে কী করবেন, অভিভাবকদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ। ছবি: ফ্রিপিক।
স্কুল থেকে ফিরেই হয়তো শিশু বলে যে চোখে খুব ব্যথা করছে। অথবা বোর্ডে লেখা নোট ঠিকমতো লিখে আনতে পারে না। এ সব ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরা ভেবে বসেন যে সন্তান বুঝি ফাঁকি দিচ্ছে, বা পড়াশোনা না করার বাহানায় চোখে ব্যথার কথা বলছে। অভিভাবকেরা জেনে রাখবেন, অনেক শিশুই কিন্তু এমন সমস্যার মুখোমুখি হয়। তাই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই শ্রেয়।
শিশুদের চোখের একটি গুরুতর সমস্যা হল ‘লেজ়ি আই’। ঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু না করলে পরবর্তী কালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে বা চলে যেতে পারে। অভিভাবকদের দেখতে হবে, শিশু এক চোখে ঝাপসা দেখছে না কি দুই চোখেই। অনেক সময়ে চোখের পাওয়ার বেড়ে যাওয়ার কারণেও ‘লেজ়ি আই’ হয়। সে ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চোখ দেখিয়ে চশমা নেওয়া জরুরি। আবার ছোটবেলাতেই চোখে ছানি পড়া বা কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেও এমন অসুখ হয়। চক্ষুরোগ চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডলও তেমনটাই জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, জন্মের পর থেকেই যদি শিশুর চোখের সমস্যা থাকে, তা হলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
রোগ চেনার উপায়
শিশুর দু’টি চোখের মণির মধ্যে অসামঞ্জস্য রয়েছে কি না খেয়াল করতে হবে।
শিশু যদি সব সময়েই বলে যে চোখে ব্যথা হচ্ছে, লেখা পড়তে সমস্যা হচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ছানি পড়লে মণির মধ্যে সাদা ছোপ দেখতে পাবেন।
শিশু সোজা ভাবে দেখছে, না কি ঘাড় হেলিয়ে দেখতে চেষ্টা করছে, তা খেয়াল করুন।
ঘন ঘন চোখের পাতা পড়া, চোখ থেকে জল পড়াও কিন্তু ভাল লক্ষণ নয়।
বাবা-মায়েরা কী করবেন?
প্রতি ৬ মাস অন্তর শিশুর চোখের পরীক্ষা করাতে হবে।
চোখে ব্যথা হলে বেশি পড়তে দেওয়া যাবে না, টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
শিশুকে শেখাতে হবে হাত না ধুয়ে যেন বার বার চোখে হাত না দেয়। গরমের সময়ে নরম সুতির রুমাল রেখে দেবেন শিশুর স্কুলব্যাগে। রুমাল দিয়ে মুখ ও চোখ মোছা শেখাবেন।
গরমে শরীরে জলের ঘাটতি হয়, এতে শরীর যেমন অসুস্থ হয়ে পরতে পারে, তেমনই চোখের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। তাই বার বার জল খাওয়াতে হবে শিশুকে। ডাবের জল, ফলের রসও খাওয়াতে হবে নিয়ম করে।
চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কোনও রকম চোখের ড্রপ দেবেন না শিশুকে।