হোটেলে ঘরের ভিতরেই রয়েছে পার্কের মতো আস্ত একটি ‘স্লিপ’। ছবি: সংগৃহীত
এ যেন শহরের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আর একটি শহর। হোটেলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আর এক হোটেল। অস্ট্রেলিয়ার পর্যটক তথা নেটপ্রভাবী এমা টোকিডোকি জাপানের টোকিয়ো শহরে ঘুরতে গিয়ে সন্ধান পেলেন এমনই এক দুনিয়ার। এমা ঢুকেছিলেন জাপানের একটি ‘লভ হোটেল’-এ। সেখানে এমার তোলা একটি ভিডিয়োই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সমাজমাধ্যমে। বিশেষ এই হোটেলে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে পারেন দম্পতিরা। প্রভাবীর দাবি, নাগরিক জীবনের চাপ কমাতে বহু দম্পতিই নিয়মিত এই ধরনের হোটেলে আসেন।
এমা জানিয়েছেন, দিনের বেলায় আর পাঁচটি হোটেলের সঙ্গে কোনও পার্থক্য নেই এই বিশেষ হোটেলগুলির। কিন্তু অন্ধকার নামতেই রূপ বদলে যায় হোটেলগুলির। উজ্জ্বল আলোয় সেজে ওঠে হোটেলগুলি। ঘনিষ্ঠ সময়কে বৈচিত্রে ভরিয়ে তুলতে এমন সব জিনিস রয়েছে হোটেলে, যা সাধারণ হোটেলের থেকে আলাদা। কোথাও ঘরের ছাদ থেকে দেওয়াল সব কিছু মোড়া রয়েছে আয়নায়, কোথাও হোটেলের দেওয়াল এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে কোনও শব্দ বাইরে না আসে। এমা নিজে এমন একটি হোটেলে গিয়েছিলেন, যেখানে ঘরের ভিতরেই রয়েছে পার্কের মতো আস্ত একটি ‘স্লিপ’। কোনও কোনও হোটেলে আলমারি ভর্তি আদরপুতুল, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলোর সামগ্রীও মেলে। কোথাও বিনামূল্যে দেওয়া হয় কন্ডোম। কোনও কোনও হোটেলে স্বাভাবিক ঘরের সঙ্গেই বিশেষ কিছু ঘর আলাদা করা থাকে, যেখানে ঘণ্টার হিসাবে ভাড়া নেওয়া হয়।
বর্তমানে গোটা জাপান জুড়ে এই ধরনের ‘লভ হোটেল’ রয়েছে সাঁইত্রিশ হাজারেরও বেশি। ছবি: সংগৃহীত
ইউটিউবার জানিয়েছেন, বহু আগে থেকেই এই ধরনের হোটেলের চল থাকলেও এই ধরনের প্রথম আধুনিক হোটেলটি জাপানে খোলে ১৯৬৮ সালে। ওসাকা শহরে। সেই হোটেলটির নাম ছিল ‘হোটেল লভ’। সেই থেকেই এই ধরনের হোটেলের নামকরণ। টোকিয়ো শহরে এই ধরনের হোটেল বেশ বড় ধরনের ব্যবসা। গ্রিক দেবদেবী থেকে দেশ-বিদেশের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র, সব কিছুর নামেই এমন হোটেল রয়েছে জাপানে। প্রভাবীর দাবি, যদি বিদেশি কোনও পর্যটক দেখেন যে, একটি হোটেলে দুই ধরনের ভাড়ার তালিকা দেওয়া রয়েছে, তবে বুঝে নিতে হবে সেটি এই বিশেষ ধরনের হোটেল। নিষিদ্ধতার গন্ধ থাকলেও এই ধরনের হোটেল বহু মানুষের রুজি-রুটির প্রধান মাধ্যম। বেসরকারি হিসাব বলছে, বর্তমানে গোটা জাপান জুড়ে এই ধরনের ‘লভ হোটেল’ রয়েছে সাঁইত্রিশ হাজারেরও বেশি।