হঠাৎ দাবদাহ, সতর্ক থাকুন

বর্ষা চলে এসেছে। কিন্তু তার মধ্যে হঠাৎ করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশ বেড়ে গিয়েছে। গরম এতই তীব্র যে আগামী কয়েক দিনের জন্য স্কুল ছুটির কথা ঘোষণা করেছে সরকার। এই হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করতে পারে। জানাচ্ছেন চিকিৎসক পরেশনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাক্ষাৎকার: সুচন্দ্রা দেবর্ষা চলে এসেছে। কিন্তু তার মধ্যে হঠাৎ করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশ বেড়ে গিয়েছে। গরম এতই তীব্র যে আগামী কয়েক দিনের জন্য স্কুল ছুটির কথা ঘোষণা করেছে সরকার। এই হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করতে পারে। জানাচ্ছেন চিকিৎসক পরেশনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাক্ষাৎকার: সুচন্দ্রা দে

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০১:২৩
Share:

রোগী দেখছেন চিকিৎসক। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রশ্ন: ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্ষা চলে এলেও হঠাৎ করেই তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। এতে কি শরীর অসুস্থ হতে পারে? হলে কী রোগ হতে পারে?

Advertisement

উত্তর: এ বছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে সে ভাবে গরম পড়েনি। যেখানে আষাঢ়ে অর্থাৎ জুনের মাঝামাঝি সময়েই বর্ষা আসার কথা, সেখানে এ বছর এত দিন পরে গরম পড়ছে। অসময়ে তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি আট থেকে আশি— সকলের শরীরেই প্রভাব ফেলবে। বিশেষ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা শিশু ও বয়স্কদের। এই দু’টি শ্রেণির ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম হওয়ায় তাঁরা সহজে পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে তাঁরা সহজেই নানা রোগে আক্রান্ত হয়।

প্রশ্ন: এ সময়ে সাধারণত কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?

Advertisement

উত্তর: এ ভাবে তাপমাত্রা বাড়লে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ক) তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি হলেই তা শরীরের পক্ষে সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করে যায়। তখন মূলত যে সমস্যাটা দেখা দেয় তা হল সানস্ট্রোক। পঞ্চাশোর্ধ্বদের মধ্যে এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এটি প্রধানত বেশি বয়সের মানুষদের সমস্যা। এই বয়সে সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ মাত্রায় শর্করা, কোলেস্টেরেল বা যকৃতের সমস্যা থাকে। এ ছাড়াও অনেকেরই প্রস্রাব কম হওয়ার সমস্যা থাকে। এমন হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই রোগের আশঙ্কা বাড়ে।

খ) বিয়েবাড়ি বা বাইরে রেস্তোঁরার খাবার থেকে এ সময়ে ফুড পয়েজনিং হওয়ার আশঙ্কা অনেক গুণ বেড়ে যায়। খাবার দীর্ঘক্ষণ বাইরে না ঢাকা অবস্থায় পড়ে থাকলে তা গরম হয়ে তাতে পচন ধরতে শুরু করে। পচন চোখে দেখে বোঝা না গেলেও তা থেকে হাল্কা দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। সেটাও অগ্রাহ্য করে খাবার খেলে কিন্তু শরীর খারাপ হতে বাধ্য।

গ) অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি থেকে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ ধরে এক টানা সূর্যের ইউভি রশ্মি চোখে লাগলে এই সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে জলাশয়ের আশেপাশে যাঁদের কর্মসূত্রে থাকতে হয় তাঁদের বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, সূর্যরশ্মি জলে প্রতিফলিত হয়ে যে অতি উজ্জ্বল আলোর সৃষ্টি করে তা চোখের পক্ষে বিপজ্জনক।

ঘ) অতিরিক্ত গরমে প্রায়ই ডিহাইড্রেশন বা শরীর জলশূন্য হয়ে পড়তে পারে। সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শরীরে যে তরল প্রবেশ করছে তার তুলনায় বেশি তরল বেরিয়ে গেলে দেহ জলের অভাব অনুভব করে। জল তিনটি পদ্ধতিতেই দেহ থেকে নির্গত হয়— ঘাম, প্রস্রাব ও নিশ্বাসের মাধ্যমে।

ঙ) শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণ সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সময়ে আইসক্রিম বা কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তা থেকেই আচমকা ঠান্ডা লেগে কাশি, বুকে ব্যথা হতে পারে।

প্রশ্ন: সানস্ট্রোকের লক্ষণগুলি কী?

উত্তর: তীব্র দাবদাহে ও আর্দ্রতাযুক্ত আবহাওয়ায় অনেক সময় যা ঘাম হয় তা শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না। তখনই প্রবীণদের সানস্ট্রোক হতে পারে। এই রোগের প্রধান লক্ষণই হল আচমকা ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, হঠাৎ দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ( বেড়ে গিয়ে তা ১০৫ থেকে ১০৬ ডিগ্রিও ছুঁয়ে ফেলতে পারে) নাড়ির স্পন্দন দ্রুত ও দুর্বল হয়ে যাওয়া। সাধারণত সরাসরি সূর্যের আলোয় হাঁটার সময়েই কেউ সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। এই সময়ে ত্বক লাল, গরম ও শুষ্ক এবং হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খিঁচুনিও হতে পারে। মাথা ঘোরা, দুর্বল বোধ হওয়ার পরে রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। প্রলাপ বকতে শুরু করলে বা হ্যালুসিনেশন হতে শুরু হলে তা কোমা, এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।

প্রশ্ন: এই রোগ কেন হয়?

উত্তর: এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে থাকা ‘হিট রেগুলেশন সেন্টার’, যা বাইরের পরিবেশের সঙ্গে দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে, তা কাজ বন্ধ করে দেয়। দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আচমকা এত বেড়ে যায় যে তা বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। গরমে দীর্ঘদিন ধরে যদি ক্লান্তি বা অবসাদ হতে থাকে তাও সানস্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন: এই রোগের চিকিৎসা কী?

উত্তর: ছায়া থাকলে বা ঠান্ডা ঘরে (সম্ভব হলে বাতানুকূল ঘরে) রোগীকে নিয়ে যেতে হবে। পাখা চালিয়ে শরীর ঠান্ডা করতে হবে। আঁটোসাটো পোশাক পরে থাকলে তা ঢিলে করে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীর বমি হলে বরফ দেওয়া নুন-চিনির সরবত করে খাওয়াতে হবে। ডাবের জলও এ ক্ষেত্রে কার্যকরী। একটু পরে ঠান্ডা জলে স্নান করতে হবে। মাথায় ঠান্ডা জলে ভেজানো কাপড়ের টুকরো দিয়ে জলপট্টি দিতে পারলেও কাজ হয়। ঘাড়ে ঠান্ডা জলে ভিজানো টাওয়েল বা গামছা পেঁচিয়ে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। পায়ুদ্বারে (রেক্টাম) বরফ জল দিলে দেহের অতিরিক্ত তাপমাত্রা সহজে নেমে যায়। স্যালাইনের মাধ্যমে প্যারাসিটামল ইঞ্জেকশন দিতে হবে। পালস ও রক্তচাপ মেপে নিতে হবে। রোগীর জ্ঞান ফিরলে জানতে হবে তাঁর হৃদরোগ বা মস্তিষ্কের কোনও রোগ রয়েছে কি না। রোগের ইতিহাস জেনে সে ভাবে চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

প্রশ্ন: কী সতর্কতা অবলম্বন করলে সানস্ট্রোক এড়ানো সম্ভব?

উত্তর: উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই গরমের অসুখকে প্রতিরোধ করা উচিত। প্রথমত, বাইরের তাপমাত্রা জেনে তবেই এত গরমে রাস্তায় বেরনো উচিত। ‘আমেরিকান কলেজ অফ স্পোর্টস মেডিসিনে’র দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে যে সব অসুখ হয় তা মূলত বাড়ে যখন এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় কেউ থাকেন। এই তাপমাত্রা থাকলে বাইরের কাজ কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে। তাপমাত্রা সূচক ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁলে সব ধরনের অ্যাথলেটিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শরীরকে জলশূন্য হতে দিলে চলবে না। এবং সোডিয়ায়, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তৃতীয়ত, হাল্কা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে যাতে শরীরে তৈরি হওয়া ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে। গরম হাওয়া (লু) প্রতিরোধের জন্য মুখে রুমাল বা মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। চতুর্থত, রোদে ত্বক পুড়ে যাওয়া এড়াতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, যা ত্বকের নিজস্ব ঠান্ডা হওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রয়োজনীয় সীমায় বজায় রাখে। পঞ্চমত, রাস্তায় বেরোলে টুপি ব্যবহার করতে হবে। মাঠে কাজ করার সময় চাষিরা বড় বাঁশের টোকা জাতীয় টুপি ব্যবহার করতে পারেন। যদি কেউ বুঝতে পারেন যে তাঁর কর্মক্ষমতা কমে আসছে, তৎক্ষণাৎ কাজ বন্ধ করে ছায়া ঘেরা ঠান্ডা পরিবেশে চলে যেতে হবে। তীব্র দাবদাহে অ্যালকোহল গ্রহণ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক।

প্রশ্ন:সানস্ট্রোকের প্রভাব কি কোনও ভাবে মস্তিষ্কে পড়তে পারে?

উত্তর: অনেক সময়ে সানস্ট্রোক হলে রোগী মাথা ঘুরে লুটিয়ে পড়েন। তখন মাথায় আঘাত লাগার আশঙ্কা থাকে। এতে স্নায়বিক ক্রিয়ার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তা থেকে কোমা ও এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

প্রশ্ন: শরীর জলশূন্য হয়ে গিয়েছে তা কী ভাবে বুঝতে পারব?

উত্তর: কখনও অস্বস্তি বোধ হলে বা ত্বকে কোনও পরিবর্তন লক্ষ করলে সতর্ক হতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা না করলে পরে বড় সমস্যা হতে পারে। আচমকাই মাথা ঘোরা, মাথায় যন্ত্রণা, ঘন ও কড়া দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, সময় বিশেষে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, মুখ ও নাক শুকিয়ে যাওয়া, ত্বকে সাড় না পাওয়া ও বমিবমি ভাব, সঙ্গে দুর্বলতা অনুভব করলেই বুঝতে হবে শরীর জলশূন্য হয়ে গিয়েছে। শরীর জলশূন্য হয়ে যাওয়ার উপসর্গগুলি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন, রোগীর পক্ষে ততই ভাল।

প্রশ্ন: শিশুদের ডিহাইড্রেশনের উপসর্গগুলি কী?

উত্তর: শিশুদের মুখের সঙ্গে জিভও শুকিয়ে যেতে শুরু করে। অনেক সময়ে শরীরে জলের অভাব এতটাই থাকে যে কাঁদলেও চোখ দিয়ে জল বার হয় না। শিশুদের ক্ষেত্রে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। শিশুরা বিরক্তি অনুভব করতে থাকে।

প্রশ্ন: শরীর জলশূন্য হওয়ার চিকিৎসা কী হতে পারে?

উত্তর: এর সব থেকে ভাল চিকিৎসাই হল প্রতিরোধ। যে হেতু তরলের অভাবেই ডিহাইড্রেশন হয়, তাই শরীরে সব সময়ে জলের মাত্রা বেশি রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতি দু’ কেজি দেহের ওজনে এক লিটার করে জল পান করা আবশ্যক। শুধু জলই নয়, জল বেশি আছে এমন কোনও খাবার, যেমন ফল, দুধ, কফি, সুপও খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রস্রাবও বেশি হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশন খুবই বিপজ্জনক। ডিহাইড্রেশন যেহেতু জল ও ইলেকট্রোলাইটস-এর (সোডিয়াম ও পটাসিয়াম) অভাবে হয় তাই শরীরের ইলেকট্রোলাইটসের মাত্রা বজায় রাখতে হবে। ফলের রস বা কাঁচা ফল বেশি মাত্রায় খেতে হবে। তরমুজ, শসা, তালশাঁস,

আম খেতে হবে রোজ। ডিহাইড্রেশনের কোনও রোগীর উচ্চ রক্তচাপ থাকলে বা নাড়ির স্পন্দন বেড়ে গেলে স্যালাইনের মাধ্যমে শিরায় তরল ঢোকানো জরুরি হয়ে পড়ে।

প্রশ্ন: তীব্র গরমে দুই বর্ধমানের নানা এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দেয়। অনেক সময় নোংরা জলও আসে। এর থেকে কী কী হতে পার?

উত্তর: নোংরা জল খেলে ডায়রিয়া হবার আশঙ্কা প্রবল। কাটোয়া মহকুমা এখনও আর্সেনিক প্রবণ নয়। তবে এ সময়ে আর্সেনিকযুক্ত জল পান করলে বিপদ বাড়ে। জলের রোটা ভাইরাস থেকে ডায়রিয়া ছাড়াও হেপাটাইটিস-বি ছড়াতে পারে। সালমোনেলা সিগেলা ভাইরাস রক্ত আমাশয়-এর কারণ। পুকুরের নোংরা জল পান বা তাতে স্নান করা একেবারেই স্বাস্থ্যপ্রদ নয়।

প্রশ্ন: গরমে ত্বকের কী সমস্যা হতে পারে?

উত্তর: রোদে ঘুরলে ত্বক পোড়ে না, তবে ট্যান হয়ে যায়। অর্থাৎ ত্বক বাদামি হয়ে পড়ে। আসলে এর মাধ্যমে ত্বক আত্মরক্ষা করে, যা ক্যানসারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ঘাম জমে শরীরের নানা অংশে ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে, যাকে ঘামাচি বলে। এ ছাড়াও লোমকূপের বাইরে ঘাম বেরোতে না পারলে ছোট ছোট পুঁজের আকার ধারণ করে, যা ত্বকের ভেতরে বায়ু চলাচল রোধ করে।

প্রশ্ন: এই তীব্র রোদে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় কী ভাবে?

উত্তর: সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি এড়াতে দুপুর ১১টা থেকে ২টো পর্যন্ত বাইরে না বেরনোই ভাল। তীব্র রোদে বিকাল চারটে পর্যন্তও বেরোতে না পারলেই ভাল। সুতির গাঢ় রঙের পোশাক পরতে হবে, যা সূর্যরশ্মি থেকে রক্ষা করে। ছাতা ব্যবহার করতে হবে। সমুদ্রতটে গেলে ‘সানবার্ন’ হতে পারে।

প্রশ্ন: ত্বক ভাল রাখার ঘরোয়া পদ্ধতি কী?

উত্তর: সকালে কাজ শুরুর আগে ও কাজের শেষে তেল মেখে নিলে ভাল কাজ হয়। সানস্ক্রিন লাগাতে পারেন। তবে তা ট্যান হওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে না। পায়ের আঙুলের খাঁজে, বগলে, তলপেটে বা স্তনের নীচে যাতে ঘাম না জমে তা মহিলাদের লক্ষ রাখতে হবে।

প্রশ্ন: কড়া রোদ চোখের কি কোনও ক্ষতি করতে পারে?

উত্তর: অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণ তিন ধরনের— ইউভি-এ, ইউভি-বি এবং ইউভি-সি। এর মধ্যে ইউভি-এ ও ইউভি-বি চোখের উপরিতলের কোষ-সহ কর্নিয়া ও লেন্সের ক্ষতি করতে পারে। চোখের সামনের দিকেও ক্ষতি হতে পারে। অল্প সময়ে বেশি মাত্রায় ইউভি রশ্মি চোখে পড়লে কর্নিয়া ফুলে গিয়ে ‘ফটোকেরাটাইটিস’ হতে পারে। একেই চোখের সানবার্ন বলে। চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে বালির মত কিছু অনুভূতি হওয়া ও আচমকাই চোখ থেকে বেশি জল পড়া এর লক্ষণ। শিশুদের চোখ ইউভি রশ্মি ছাঁকতে পারে না বলে তাদের রেটিনায় বেশি বিকিরণ পৌঁছয়। এই রশ্মির চোখে দীর্ঘকালীন প্রভাব আরও মারাত্মক। ক্যাটারাক্ট বাড়িয়ে রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

প্রশ্ন: চোখের সুরক্ষার উপায় কী?

উত্তর: চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মত সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। ইউভি প্রতিরোধক কনট্যাক্ট লেন্স পরলেও সানগ্লাস ব্যবহার উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement