কাজের চেয়ে চিন্তা বেশি? ব্যাঙ খাওয়ার নীতি মেনে দেখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
নতুন কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন। কী ভাবে তা করবেন, তার চেয়েও বেশি ভাবনা হচ্ছে সময়ে কাজটি সম্পন্ন হবে তো?
অনেকেরই কাজ শুরুর আগে হাজারো চিন্তা চেপে বসে। কার্যসমাধার পরিকল্পনার বদলে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনায় দিন কেটে যায়। এতে কি আদৌ কোনও লাভ হয়?
কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তার অভ্যাস থাকলে বরং অনুসরণ করতে পারেন ‘ব্যাঙ খাওয়ার নীতি’। আমেরিকান লেখক ব্রায়ান ট্র্যাসি তাঁর ‘ইট দ্য ফ্রগ! টুয়েন্টি ওয়ান গ্রেট ওয়েজ় টু স্টপ প্রোক্রাস্টিনেটিং অ্যান্ড গেট মোর ডান ইন লেস টাইম’ বইতে কার্যক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যাঙ খাওয়ার সহজ উপমা দিয়ে তা ব্যখ্যাও করছেনে।
কী এই ‘ইট দ্য ফ্রগ’?
যদি কারও কাজ থাকে ব্যাঙ খাওয়া, তা হলে দিনের শুরুতেই সেটি করলে চিন্তামুক্ত হওয়া যাবে। কিন্তু যদি একটা নয়, দু’টো ব্যাঙ খেতে হয়, তা হলে ভাবনা হতে পারে কখন, কোনটি খাবেন? এ ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, প্রথমেই বড় ব্যাঙটি খান, তার পর ছোটটি।
‘ব্যাঙ’ আসলে রূপক মাত্র। এ ক্ষেত্রে ‘ব্যাঙ’ আসলে কাজ। কার্যক্ষেত্রে ছোট-ব়ড় নানা কাজের দায়িত্ব থাকে। তার সময়সীমাও থাকে। কিন্তু সেই কাজগুলি করার আগেই শুরু হয়ে যায় তা নিয়ে একরাশ চিন্তা। ব্যাঙ খাওয়ার উপমা দিয়ে এখানে বোঝানো হচ্ছে, একাধিক দায়িত্ব একসঙ্গে থাকলে কঠিন কাজটি দিনের শুরুতেই করে ফেললে সুবিধা হবে। তার পর অপেক্ষাকৃত সহজ কাজে মন দেওয়া যেতে পারে।
কী ভাবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করবেন?
চিহ্নিত করুন
সারা দিনে একাধিক কাজ থাকে। প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে, কোন কাজটি আগে করা দরকার। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সামনে পরীক্ষা। সমস্ত বিষয়ের মধ্যে কোনটি দিয়ে শুরু করবেন, বেছে নিতে হবে।
গুরুত্ব
কাজ বাছাইয়ের পরের ধাপ হবে, কী ভাবে তা সম্পাদন করবেন। একটি বড় কাজ করার জন্য আর কী কী করতে হবে। সেই আনুষঙ্গিক কাজগুলি কখন, কোনটি করলে ভাল হবে। তবে, জটিল এবং কঠিন কাজটি দিনের শুরুতেই সেরে রাখলে সুবিধা হবে।
সকালেই ‘ব্যাঙ’ খান
দিনের শুরুতে বাড়তি কথা না ভেবে প্রথমেই কাজটি নিয়ে বসে পড়া দরকার। কাজের সময় পুরো মনোযোগ থাকলে তবেই তার ফলাফল ভাল হবে। যদি সামনে পরীক্ষা থাকে, তা হলে প্রথম কাজই হবে সকালে উঠে পড়তে বসা।
ধাপ
একটি কাজের বিভিন্ন ধাপ বা স্তর থাকতে পারে। হতেই পারে, কাজটি এক দিনে হবে না। সে ক্ষেত্রে কতক্ষণ ধরে, কী ভাবে এগোলে সুবিধা হবে, সে বিষয়ে স্বচ্ছ পরিকল্পনা করে রাখলে সুবিধা হতে পারে। যেমন, পরীক্ষার আগে যে বিষয়টি একেবারেই তৈরি নেই, সেটির জন্য বেশি সময় রাখতে হবে। যে বিষয়টি মোটামুটি তৈরি, সেটি দ্বিতীয় ধাপে থাকবে।
লক্ষ্য
লক্ষ্যে স্থির না থাকলে কার্য সমাধা সম্ভব নয়। কাজের সময় অন্য ভাবনা, একটি কাজের পাশাপাশি অন্য কাজ করতে গেলে মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে, এমন বিষয়গুলিকে দূরে রেখে লক্ষ্যপূরণের পথে এগোতে হবে।