গরমে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন কী ভাবে? ছবি: শাটারস্টক।
গরমে প্যাচপেচে গামের সমস্যা নাজেহাল হতে হয় অনেককেই। কারও ঘাম বেশি হয়, কারও আবার কম। তবে ঘাম আটকানোর কোনও উপায় নেই। উচিতও নয়। আমাদের শরীর অতিরিক্ত জল এবং কিছু খনিজ পদার্থ ঘাম হিসাবে বার করে দেয়। এই ঘাম কিন্তু আসলে গন্ধবিহীন। ত্বকের উপরের স্তরে পৌঁছনোর পর বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে মিশে ঘামে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে হলে প্রথমেই তার কারণ জানা দরকার। পরিচ্ছন্নতার অভাবের কারণে ঘামে দুর্গন্ধ হয়, আবার শারীরিক অসুস্থতার কারণেও ঘামে গন্ধ হতে পারে। ডিয়োডোর্যান্ট কিংবা সুগন্ধি ব্যবহার করাটা হচ্ছে ঘামের গন্ধ তাড়ানোর সেরা উপায়। তবে পারফিউমের গন্ধ খুব বেশি ক্ষণ টেকে না। তা হলে গরমের সময়ে গামের দুর্গন্ধ এড়িয়ে চলতে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
১. বাহুমূল, স্তনের নীচে, কানের পিছনের অংশ, কোমর, হাঁটু ও কনুইয়ের ভাঁজ, হাতের তালু যে অংশে ঘাম বেশি জমে, এই অংশগুলি পরিষ্কার রাখা দরকার।
২. প্রতি দিন পরিষ্কার শুকনো অন্তর্বাস পরবেন। আধশুকনো বা অপরিষ্কার অন্তর্বাস কিন্তু ব্যাক্টেরিয়া বহন করে। যা ঘামে দুর্গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ। গরমে সিন্থেটিক কাপড় কিংবা গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন। সুতির হালকা রঙের পোশাক পরুন। তাতে ঘাম হলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
৩. রোজের পোশাক রোজ বাড়িতে এসে কাচতে দিন। ঘামে ভেজা পোশাক দ্বিতীয় বার না পরাই ভাল। একান্তই যদি পরতে হয়, তা হলে তা রোদে শুকিয়ে নিয়ে তবেই পরুন।
৪. গরমের দিনে স্নানের জলে পছন্দসই এসেনশিয়াল অয়েল (ফুলের পাতা, গাছের পাতা, কাণ্ড, শিকড় ইত্যাদি নিঙড়ে তৈরি করা রস) মিশিয়ে নিতে পারেন। না হলে স্নানের জলে পাতিলেবুর রস এবং খানিকটা বেকিং সোডা মিশিয়ে স্নান করলেও উপকার পাবেন।
৫. শরীরের অন্য কোনও জায়গায় না হলেও, অতিরিক্ত ঘামের কারণে বাহুমূলে দুর্গন্ধের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কারণটা সেই ব্যাক্টেরিয়া। বাহুমূলে নিয়মিত শেভ বা ওয়্যাক্স করলে ওই অংশে ব্যাক্টেরিয়া জমতে পারে না। ফলে দুর্গন্ধও হয় না। গরমের সময় বাহুমূল কেশহীন রাখাই ভাল।
৬. টম্যাটোর অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ব্যাক্টেরিয়াকে মেরে ফেলে বলে ঘাম থেকে আর দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে না। শরীরের যে যে অংশে ঘাম বেশি হয়, সেখানে টম্যাটো দিয়ে ‘স্ক্রাব’ করলেও ভাল ফল পাবেন। পাতিলেবুর রস শরীরের পিএইচ লেভেল কমিয়ে দেয়, ফলে ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হতে পারে না। একটি লেবুকে দু’ভাগ করে তার একটি অংশ নিয়ে বগলের নীচে ঘষে ফেলুন। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করে স্নান সারুন। এটা রোজই করতে পারেন, যত দিন না গন্ধ দূর হচ্ছে।
৭. খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনুন। গরমের সময়ে ঘামের সমস্যা দূর করতে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত তেলজাতীয় বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।