সারা দিনের ক্লান্তি কাটাতে কিংবা অবসরে পছন্দের গান চললে, নিমেষে মন ফুরফুরে! আপনি যদি সঙ্গীতপ্রেমী হন, তা হলে সামান্য খরচেই এমন কিছু ডিভাইস কিনে নিতে পারেন, যাতে আপনার ফ্ল্যাট বা বাড়িতে অবসরের মুহূর্তগুলি পাবে অন্য মাত্রা।
স্পিকার সম্পর্কিত আলোচনা শুরু করার আগে দেখে নেওয়া যাক, এই মুহূর্তে ক’ধরনের স্পিকার রয়েছে। সহজ করে বললে, বাড়িতে ব্যবহারের উপযোগী মূলত তিন ধরনের স্পিকার রয়েছে। সাধারণ স্পিকার, উফার এবং সাব-উফার। এই প্রতিটি ডিভাইসের কাজও আলাদা। যেমন, স্পিকার কিনে আপনি যদি মিউজ়িক সিস্টেমের সঙ্গে কানেক্ট করেন, তা হলে কেবল গান শুনতে পাবেন। কিন্তু গানের ব্যাকগ্রাউন্ডের ডিটেলিং অর্থাৎ মিউজ়িক বেস শুনতে পাবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে উফার কেনার কথা ভাবতে হবে। উফার কিনলে আপনি গান এবং মিউজ়িক বেস— দু’টিই শুনতে পাবেন। তৃতীয় ক্ষেত্রে, সাব-উফারে আপনি কেবলই গানের বেস শুনতে পাবেন। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভাল, সাব-উফার সাধারণত তাঁরাই কেনেন, যাঁরা গান এবং মিউজ়িক নিয়ে নিয়মিত চর্চা করেন।
তাই যে যন্ত্রই কিনুন না কেন, সেটা নির্বাচন করুন আপনার প্রয়োজন অনুসারে।
লিভিং এরিয়ায়
বসার ঘর কিংবা ফ্ল্যাটের ডাইনিং কাম লিভিং— মিউজ়িক সিস্টেমের জন্য স্পিকার কিনতে হবে ঘরের আয়তন বুঝে। আয়তন যদি ছোট বা মাঝারি হয়, সে ক্ষেত্রে প্রমাণ সাইজ়ের বক্স স্পিকার কিনতে পারেন। অফলাইন শো’রুম কিংবা অনলাইনে বিভিন্ন দরের এবং আকারের বক্স স্পিকার পেয়ে যাবেন। স্পিকার স্ট্যান্ড কিংবা টাওয়ার স্পিকারও লাগাতে পারেন। তবে এই ধরনের সেটআপ যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমনই জটিলও। তাই কম খরচে এবং সহজে কাজ মেটাতে চাইলে সাউন্ডবার কেনার কথা ভাবতে পারেন। এটি আদতে পেন্সিল বক্সের মতো আকারের একটি স্পিকার ডিভাইস। যন্ত্রটি ব্যাটারি এবং ব্লু-টুথ চালিত হওয়ায় কোনও রকম তার সংযোগ করার প্রয়োজন থাকে না। তবে আকারে ছোট হলেও, এগুলির সাউন্ড-কোয়ালিটি কিন্তু বেশ ভাল!
হোম থিয়েটারের জন্য
বসার ঘরের মসৃণ দেওয়ালে টাঙানো ৪০ কিংবা ৫০ ইঞ্চির পেল্লায় ফ্ল্যাট-স্ক্রিন টিভিতে হোম থিয়েটারের আমেজ পেতে কয়েকটি ওয়্যারলেস উফার কিনে নিতে পারেন। সেগুলিকে ঘরের বিভিন্ন প্রান্তে রেখে স্মার্ট টিভির সঙ্গে ‘সিঙ্ক’ করিয়ে নিন। এতে ভিডিয়োর মিউজ়িক বেসও উপভোগ করতে পারেন। আরও ভাল মিউজ়িক কোয়ালিটি চাইলে এক কিংবা একাধিক ডলবি অ্যাটমস এনেবল্ড সাউন্ডবার কিনে নিতে পারেন। এই ধরনের সাউন্ডবারে স্পিকারগুলি ছাদের অভিমুখে লাগানো থাকে। এতে স্পিকার থেকে বার হওয়া মিউজ়িক ছাদে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে। ফলে গোটা ঘরে সুরের তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িতে বসে আপনিও পেয়ে গেলেন সিনেমা হলের আবহ!
শোওয়ার ঘরে...
এর পর আসা যাক, পড়ার ঘর কিংবা বেডরুম প্রসঙ্গে। ছিমছাম ডিজ়াইনের কোনও স্পিকার বাছতে হবে। তাই চেষ্টা করুন পোর্টেবল স্পিকার কেনার। চাইলে ‘ইকো ডট’ স্মার্ট স্পিকারও কিনতে পারেন। সহজ করে বললে, অ্যামাজ়ন অ্যালেক্সা। এআই কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তিতে তৈরি এই ডিভাইসটিকে ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমেই চালাতে পারবেন। আকারে ছোট, ফলে এটিকে সহজেই বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। ডিভাইসের চার পাশের সুদৃশ্য এলইডি, স্পিকারটিকে অন্দরসজ্জার অংশ করে তোলে। এ ছাড়া উন্টজ় অ্যাঙ্গল থ্রি স্পিকারও কিনতে পারেন। ত্রিকোণ আকৃতির এই যন্ত্রটির দু’দিকে স্পিকার থাকায়, আপনার পছন্দের গানের মিষ্টি সুর ঘরের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়বে অনায়াসে।
হেঁশেলেও সঙ্গী হতে পারে...
রান্নার সময়ে গান শুনতে চান কিংবা ভিডিয়ো দেখে রান্না? তা হলে আপনাকে এমন কোনও ডিভাইস বেছে নিতে হবে, যেখানে স্পিকারের পাশাপাশি ডিসপ্লে স্ক্রিনও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন অ্যামাজ়নের ইকো শো এইট মডেলটি। আকারে খানিকটা ট্যাবলেটের মতো। আকারগত সুবিধের জন্য সহজেই ডিভাইসটিকে রান্নাঘরে যে কোনও টেবিলের উপরে রাখতে পারবেন। এর পর বাড়ির ওয়াইফাই-এর সঙ্গে কানেক্ট করে চালিয়ে নিন পছন্দের কোনও গান কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে কোনও রান্না।
এ ছাড়াও জেবিএল সংস্থার লিঙ্কভিউ মডেলটি কেনার কথাও ভাবতে পারেন। তবে আগেরটির চেয়ে এই মডেলটির স্ক্রিন তুলনায় ছোট।
স্পিকার বা উফার যেটি-ই কিনুন, সেটি দেখতে ভাল হলে তা আপনার অন্দরসজ্জারও একটি অংশ হয়ে ওঠে। তাই তাতে ধুলো জমতে দেওয়া চলবে না। নিয়মিত পরিষ্কার করুন আপনার শখের ডিভাইসটি।