জ্বরে আক্রান্ত রোগী। —নিজস্ব চিত্র।
এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত আরও দু’জনের মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এঁদের দু’জনের রক্তেই পাওয়া গিয়েছে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু। এঁদের মধ্যে একজন শিলিগুড়ি ও অন্যজন নাগরাকাটার বাসিন্দা। শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের বাসিন্দা রামপিয়ারি প্রসাদ (৭৫) কে বুধবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় খিঁচুনি জ্বর নিয়ে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি মারা যান। মৃত বালি মহম্মদের (৬০) বাড়ি নাগরাকাটা ব্লকের গ্রাসমোড় চা বাগান এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর আগে তিনি জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
এই নিয়ে জানুয়ারি মাস থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জেই ও এইএস-এ আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৩ জনের মৃত্যু হল। এর মধ্যে জুলাই মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত খিঁচুনি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ১৭ জন রোগী। এর মধ্যে জেই ও কয়েকজন থাকতে পারেন বলে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই অবস্থায় হাসপাতালে ছুটি পাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসদের মধ্যে মত বিরোধ দেখা দিয়েছে। এখন ছুটি মিলছে না উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মীদের। অথচ চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে সেই নীতি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে এদিন অধ্যক্ষের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী সমিতির সদস্যরা। তাঁদের দাবির বিষয়ে অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় কিছু বলতে না চাইলেও, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানান বিষয়টি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় মিটিয়ে নেওয়া হবে।
কর্মচারী সমিতির অভিযোগ, ছুটি নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ দু’রকম নীতি নিচ্ছে। কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে জেলা সম্পাদক প্রশান্ত সরকার বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থা বলে আমাদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে না। তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তাহলে চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হচ্ছে কেন? এই বিষয়েই আমরা আপত্তি জানিয়েছি।’’ তবে তাতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সন্দিহান নিজেরাই। তাঁরাই জানান, এক নার্সিং স্টাফকে নিজের বিয়েতেও ছুটি দেননি কর্তৃপক্ষ। শেষে অসুস্থতার শংসাপত্র জমা দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। সুপার বলেন, ‘‘সমস্যা হয়েছে। কর্মীদের ক্ষোভ স্বাভাবিক। তবে তা মিটে যাবে।’’