অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিন্হা। ছবি: সংগৃহীত।
গরমকালেও ত্বকে জলের অভাব হয়। পর্যাপ্ত জল খেলেও ত্বকে আর্দ্রতার অভাব স্পষ্ট ফুটে ওঠে। শীতে না ক্রিম, লোশন মেখে সমস্যা খানিকটা ঠেকিয়ে রাখা যায়। কিন্তু এই ঘাম, প্যাচপেচে আবহাওয়ায় মুখে পুরু করে ক্রিম মেখে থাকাটাও তো কাজের কথা নয়। বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিন্হাও একই রকম সমস্যার সম্মুখীন হন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁর ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক। দীর্ঘ সময় বাড়ির বাইরে থাকলে কিংবা বিমানে যাত্রা করার সময় ত্বকের হাল আরও খারাপ হয়ে যায়। তাই আর্দ্রতা ধরে রাখতে সোনাক্ষী সারা বছরই বিশেষ নিয়মে ত্বকের পরিচর্যা করেন। জেনে নিন কী ভাবে ত্বকের যত্ন নিলে শুষ্ক ত্বক সহজে পেলব হবে।
প্রথম ধাপ: ক্লিনজ়িং
ত্বক যত পরিষ্কার থাকবে, তত মঙ্গল। শুধু ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলে মুখের উপর জমা তেল, ধুলো-ময়লা যেতে চায় না। ত্বক যদি গভীর থেকে পরিষ্কার করতে হয়, তা হলে ক্লিনজ়ারের সাহায্য নিতেই হবে। শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে ক্রিম বেস্ড ক্লিনজ়ার ব্যবহার করাই ভাল। চাইলে নারকেল তেলও ব্যবহার করা যায়। তার পর মাইল্ড কোনও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপ: টোনার ব্যবহার করা
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার মূল ‘ফান্ডা’ হল টোনার ব্যবহার করা। ত্বকের পিএইচের সমতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে টোনার। অবশ্য সোনাক্ষীর বক্তব্য, এমন টোনার ব্যবহার করা উচিত, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি প্রদাহজনিত সমস্যাও নিরাময় করে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ‘মিল্কি’ টোনার দারুণ কাজ করে।
তৃতীয় ধাপ: এক্সফোলিয়েশন
শুষ্ক ত্বক এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। তার উপর খুব বেশি ঘষাঘষি করা যায় না। আবার ত্বকের উপর জমা মৃত কোষ রেখেও দেওয়া যায় না। তাতে ত্বকের নিজস্ব জেল্লা ম্লান হতে থাকে। সে ক্ষেত্রে সোনাক্ষীর টোটকা আপনারও কাজে লাগতে পারে। সোনাক্ষীর ত্বক যে হেতু শুষ্ক, তাই তিনি সব সময়ে মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করেন।
চতুর্থ ধাপ: সিরাম
ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হলে আর্দ্রতার দিকে আলাদা করে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সোনাক্ষী বলছেন, শুধু টোনারে কাজ হবে না, তার সঙ্গে সিরাম ব্যবহার করতে হবে। সিরামে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইডের মতো উপাদান থাকলে আরও ভাল হয়।
পঞ্চম ধাপ: শিট মাস্ক
মুখে মাস্ক বা প্যাক মাখলে চামড়ায় টান ধরে। শুষ্ক ত্বকের জন্য তা খুব একটা ভাল নয়। তবে সোনাক্ষীর মতো শিট মাস্ক ব্যবহার করলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। চটজলদি ত্বকের জেল্লা ফিরে পেতে এই ধরনের মাস্ক দারুণ কাজের।
ষষ্ঠ ধাপ: ফেস মিস্ট
রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে যেখানেই থাকুন, সারা দিন ধরে মুখে মিস্ট স্প্রে করে নিন। চামড়ায় টান ধরবে না। ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। উপরি পাওনা হবে ত্বকের ‘ডিউয়ি গ্লো’। সোনাক্ষী বলছেন, শুধু কেনার আগে দেখে নিতে হবে মিস্টে যেন গোলাপজল, গ্লিসারিন, অ্যালো ভেরার মতো প্রাকৃতিক উপাদান থাকে।
সপ্তম ধাপ: আই মাস্ক
দীর্ঘ যাত্রাপথ কিংবা সারা দিনের ধকল চোখে ফুটে ওঠে। রাতে ঘুম না হলে চোখের তলায় কালি পড়ে, ফোলা ভাবও দেখা যায়। তার জন্য হাতের কাছে ভাল মানের আইমাস্ক থাকা জরুরি। ক্যাফিন, পেপটাইড বা হায়ালুরনিক অ্যাসিড দেওয়া আইমাস্ক ব্যবহারে এই ধরনের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অষ্টম ধাপ: সানস্ক্রিন কিংবা নাইটক্রিম
বাইরে বেরোনোর আগে সোনাক্ষী সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভোলেন না। তবে সেটি টিন্টেড সানস্ক্রিন। তাই আলাদা করে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে না। টিন্টেড সানস্ক্রিন যেমন অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বকের ক্ষতি রুখে দেয়, তেমনই ত্বকের জেল্লাও ধরে রাখে।
নবম ধাপ: ময়েশ্চারাইজ়ার
রাতের বেলা সানস্ক্রিন মাখার প্রয়োজন পড়ে না। সে ক্ষেত্রে ভাল মানের নাইটক্রিম মেখে নিলেও চলে। যে হেতু সোনাক্ষীর ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাই আর্দ্রতা বজায় রাখতে অভিনেত্রী একটু বেশি ঘনত্বযুক্ত ময়েশ্চারাইজ়ার মাখার পক্ষে।