দীর্ঘদিন গৃহবন্দি হয়ে থেকে সকলের জীবনেই রং একটু কমে আসছে। একঘেয়ে নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে একটু রঙের ছোঁয়াই কিন্তু মন ভাল করতে যথেষ্ট। লকডাউন-পরবর্তী জীবনেও নিজের এই নতুন রূপ বহাল থাকবে। বাজারে হেয়ার কালারের অনেক শেড পাওয়া যায়। আপনার স্কিনটোনের সঙ্গে মানানসই শেডের হেয়ারকালার কিনে নিন। তবে হেয়ারকালার করার টেকনিক কিন্তু অনেক। পুরো চুলে রং করতে পারেন আবার চুলকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিয়েও রং লাগানো যায়। এতে স্টাইল বাড়বে বই কমবে না। কী ভাবে চুলের ভাগ করবেন, তার উপরেই নির্ভর করে স্টাইল।
• নর্মাল হাইলাইট: মাথার সমস্ত চুল ভাগ করা হয় কয়েকটি স্ট্র্যান্ডে। মানে চুলের গোছা অনুযায়ী হবে ভাগ। সারা মাথায় ধরুন সাতটি জায়গা থেকে একগুচ্ছ করে চুল ভাগ করে নিন। এমন জায়গা থেকে এই চুলের গোছা বাছবেন যাতে কালার করার পরে তা চুলের ভলিউম বেশি দেখাতে সাহায্য করে। এ বার চুলের স্ট্র্যান্ডে রং করে নিন।
• বেবিলাইট: হাইলাইটের মতোই, তবে আরও ডেলিকেট। এ ক্ষেত্রে হাইলাইটের মতো অত মোটা চুলের গুচ্ছ নেওয়া যাবে না। বরং সরু সরু চুলের স্ট্র্যান্ড বেছে নিয়ে তাতে রং করতে হবে। এতে চুলে হাইলাইট বেশ ঘন হবে কিন্তু দেখাবে হালকা।
• ওয়ান স্ট্রিপ হাইলাইট: কিছু দিন আগেই সারা আলি খান কয়েক গোছা চুলে তুঁতে রং করান। সেই তুঁতে চুল রিবনের মতো কানের পাশ দিয়ে কাঁধ গড়িয়ে নেমে আসত সামনের দিকে। কিন্তু বাকি চুলের রং স্বাভাবিক। চুলের মধ্যে থেকে এই একটা চুলের স্ট্র্যান্ড বেছে তাতে স্ট্রাইকিং কালার করে ওয়ান স্ট্রিপ বা রিবন হাইলাইট করতে পারেন।
• ওম্ব্রে: এ ক্ষেত্রে চুলের একদম নীচে থাকে গাঢ় রং। উপরের দিকে ক্রমশ সেই রং হালকা হতে হতে চুলের স্বাভাবিক রং ধারণ করে। তবে এ ক্ষেত্রে কালার করার সময়ে পটু হাতে করতে হবে। কারণ দুটো রঙের ভাগ যেন বোঝা না যায়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। খুব মসৃণ ভাবে মেশাতে হবে রঙের মাঝের অংশ।
• ব্যালেয়াশ: ওম্ব্রে গ্রেডিয়েন্টের মতোই এই টেকনিক। কিন্তু দুটো রঙের মিশেল অত মোলায়েম হয় না। বরং খালি হাতেই রং লাগানো হয় চুলের নীচ থেকে উপরের দিকে। হেয়ার স্ট্রিপের মতো দেখতে লাগে। চুলের ভলিউম বেশি লাগে।
• আন্ডারনিথ কালার: এই টেকনিক এখন সবচেয়ে ইন। বাইরে থেকে চুলের রং ধরা পড়বে না। ঘাড়ের কাছে চুলের ভিতরের দিকেই এই রং করা হয়। চুল টেনে মাথার উপরে তুলে পনিটেল বা বান বাঁধলে তবে এই কালার দেখা যায়। পার্পল, রেড, গ্রিন ইত্যাদি গাঢ় রং করা হয় এই টেকনিকে। যেহেতু চুলের ভিতরের দিকে থাকে, তাই চুল তুলে বাঁধলে যাতে চোখে পড়ে, তাই গাঢ় রং করা হয়।
• টিপ কালারিং: চুলের একদম শেষ প্রান্তে এই ধরনের কালার করা হয়। চুলের শেষ প্রান্তে রং হয়, তাই চুল কাটলেই এই ধরনের রং উঠে যায়। তাই অল্প সময়ের জন্য লুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে চাইলে টিপ কালার করতেই পারেন। যেহেতু ইচ্ছে করলেই কেটে ফেলতে পারবেন, তাই স্ট্রাইকিং কালার নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন এই টেকনিকে।
বাড়িতে বসে মুড অফ থাকলে হেয়ার কালার করে দেখতে পারেন। নিজেকে নতুন রূপে আবিষ্কার করারও তো আনন্দ আছে।
যত্নও জরুরি
• চুলে রং করা মানেই তার যত্ন বেড়ে যাবে দ্বিগুণ। কালারড হেয়ারের জন্য শ্যাম্পু, কন্ডিশনার সব আলাদা হয়। তাই সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে
• রং করার দিন দুয়েকের মধ্যে কড়া রোদে বেরোবেন না। তা হলে রং নষ্ট হয়ে যায়
• চুল মসৃণ করার হেয়ার প্যাকও লাগাতে হবে প্রত্যেক সপ্তাহে
মডেল: মুনমুন রায়, রিয়া ভট্টাচার্য
ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: অভিজিৎ পাল