চোট, আঘাত, কাটাছেঁড়া সব বাড়িতেই লেগে থাকে। কিন্তু কোন আঘাতে কী ভাবে চিকিৎসা করা উচিত, তা আমরা সব সময়ে বুঝতে পারি না। ক্ষত দেখে বুঝতে হবে বাড়িতেই প্রাথমিক শুশ্রুষায় তা সারিয়ে তোলা সম্ভব, না কি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে স্টিচ করা আবশ্যিক হয়ে পড়ে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, ‘‘কাটাছেঁড়ার ক্ষেত্রে সেই জায়গাটা পরিষ্কার করা প্রাথমিক কর্তব্য। ভাল করে সাবানজল দিয়ে ধুতে হবে। হাতের কাছে সাবানজল না পেলে, শুধু জল দিয়েই ধুয়ে নিতে হবে। ক্ষতের উপরে ময়লা থাকলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেশি।’’
ক্ষত বুঝে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ডাক্তার তালুকদারের পরামর্শ, এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এক, ক্ষত যতই বড় হোক না কেন, খুব গভীর না হলে সেলাই করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে এ বিষয়ে িচকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক। দুই, আঘাত কোন জায়গায় সেটাও বিবেচনা করতে হবে। মুখের কোথাও যেমন ঠোঁট বা গালে চোট পেলে স্টিচ করিয়ে নিতে হবে। তিন, দেখতে হবে রক্তপাত খুব বেশি হচ্ছে কি না? ব্লিডিং বন্ধ করার জন্য আঘাতের জায়গা সেলাই করা জরুরি হয়ে পড়ে।
চোট, আঘাতে ভাল করে ড্রেসিং করতে হয়। অ্যান্টিসেপটিক লোশন, ক্রিম এ ক্ষেত্রে কার্যকর। বড় ধরনের আঘাত হলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, বাড়িতে কী ভাবে ড্রেসিং করতে হবে। ক্ষতের জায়গাটা খোলা রাখলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। তবে বাইরে বেরোতে হলে ব্যান্ডেজ করে নেওয়া উচিত, যাতে ধুলোবালি না লাগে। আবার আঙুল কেটে গেলে ব্যান্ডেজ করিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
খেয়াল রাখবেন
ডায়াবিটিস আছে, ইমিউনিটি কম এমন ব্যক্তিরা চোট-আঘাতের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই কাজ করুন। কারণ তাঁদের ক্ষেত্রে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেশি।
ব্লিডিং হলে সেটা বন্ধ করার জন্য ক্ষতের আশপাশটা চেপে ধরে রাখতে হবে।
কাচ, বাঁশের কঞ্চি, লোহা জাতীয় জিনিস ফুটলে সেটা আগে বার করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকেরা কাছে যাওয়া জরুরি।
গরম ছ্যাঁকা বা তেল পড়ে ফোস্কা হলে সেই জায়গায় ঠান্ডা জল দিতে হবে। মিনিট দশেক ঠান্ডা জল দেওয়ার পরে অ্যান্টিসেপ্টিক মলম লাগিয়ে নিন। এ সব ক্ষেত্রে ব্যান্ডেজ করবেন না।
স্বাভাবিক নিয়মে ক্ষত না শুকোলে অনেক সময়েই অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়। তবে সেটা চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষ।
বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে, হামেশাই চোট-আঘাতের ঘটনা ঘটে। তবে ছোটদের ক্ষত তাড়াতাড়ি নিরাময় হয়। কিন্তু হাঁটু বা কনুইয়ের আঘাত সারতে সময় লাগে। যেহেতু ওই জায়গাগুলো ভাঁজ হয়। ছোটদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য— আঘাতের জায়গা খোলা রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করে অ্যান্টিসেপটিক মলম দিতে হবে।
বাড়িতে গজ, ব্যান্ডেজ অ্যান্টিসেপটিক লোশন, ক্রিম জাতীয় জিনিস মজুত রাখা দরকার।