নতুন ছবির জন্য বিশেষ প্রস্তুতি দেবের। ছবি: সংগৃহীত।
উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন অভিনেতা দেব। নায়কের পিঠের উপর এঁটে রয়েছে ছোট-বড় বিভিন্ন মাপের অজস্র কাপ। যেন পিঠে কাপের মেলা বসেছে। বুধবার রাতে এমনই একটি সাদা-কালো ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামের পাতায় ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। ছবির নীচে লেখা, ‘‘কষ্ট না করলে কিছু পাওয়া যায় না, পরবর্তী ছবির জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’’ আরশিনগর থেকে গোলন্দাজ— পর্দায় চরিত্র হয়ে উঠতে প্রস্তুতির খামতি রাখেন না অভিনেতা দেব। পরিশ্রমের সেই ছাপ ফুটে ওঠে পর্দাতেও। অভিনেতার বিচ্যুতিহীন প্রস্তুতি বরাবর মন জিতে নেয় দর্শকের। ‘বাঘাযতীন’ ছবির শুটিং শেষ করেছেন সবে। বিরতি না নিয়েই পরবর্তী ছবি ‘প্রধানের’ প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন অভিনেতা। এই ছবিই তার প্রমাণ।
টলিপাড়ার অভিনেতা থেকে সাধারণ দর্শক— মন্তব্য বাক্সে নতুন ছবির জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেবকে। তবে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, এই বিশেষ প্রস্তুতির বিষয়ে। ছবি দেখে অনেকেই বুঝতে পারছেন না, এতগুলো কাপ পিঠে লাগানোর কারণ কী। আসলে এটি একটি থেরাপি। যার নাম হল ‘হিজামা’ কিংবা ‘কাপিং থেরাপি’। সম্প্রতি এই ধরনের থেরাপির বেশ চল হয়েছে। হলিউড অভিনেতা থেকে খেলোয়াড়— অনেককেই এই কাপিং থেরাপি নিতে দেখা গিয়েছে। তবে ইদানীং এর জনপ্রিয়তা বাড়লেও বহু দশক আগেই এর জন্ম। এই থেরাপি নিলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। শরীরের কোনও অংশে ব্যথা-বেদনা থাকলে তা সেরে যায়। ভিতর থেকে আলাদা একটা শক্তি পাওয়া যায়। সমস্ত শারীরিক ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পেশিও সচল হয়ে ওঠে।
ছবিতে দেবের পিঠে যে কাপ বসানো, তা প্রায় সবগুলিই খালি। তবে কাপের মধ্যে অ্যালকোহল, বিভিন্ন ধরনের ভেষজ মশলা ভরেও এই থেরাপি করানো হয়। কাপগুলি রাবারের তৈরি। কাপের মুখে এমন কিছু থাকে যা চামড়ার সংস্পর্শে আসতেই শক্ত হয়ে বসে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে সুচ দিয়ে পিঠে খুব সূক্ষ্ম কিছু ছিদ্র করা হয় চামড়ার ভিতরে। সেই ছিদ্রের মধ্যে দক্ষতার সঙ্গে কাপগুলি বসানো হয়। দু’ভাবে করা যায় এই থেরাপি। ২০-৪০ মিনিট রাখলেই যথেষ্ট। ধীরে ধীরে বিষয়টিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে সময় বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই ধরনের থেরাপি নেওয়ার আগে এক বার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া জরুরি। শরীর কাপিং থেরাপি নেওয়ার উপযুক্ত কি না, তা একমাত্র চিকিৎসকেরাই বলতে পারবেন। কলকাতার বেশ কিছু ক্লিনিক আছে, যেখানে কাপিং থেরাপি করানো হয়। বিভিন্ন জায়গায় থেরাপির আলাদা আলাদা খরচ রয়েছে। তবে প্রতিটি সেশনে ৩-৭ হাজার টাকা খরচ পড়ে।