Hostel Life tips

পরিবার ছেড়ে ছাত্রাবাসে গিয়ে থাকতে হবে বলে মনে ভয়? কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই পথচলা সহজ হবে

পারিবারিক ঘেরাটোপ ছেড়ে ছাত্রবাসে নতুন জীবন! মানিয়ে নেবেন কী ভাবে, তা নিয়ে মনে ভয়? কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলেই নতুন জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ১৮:০৮
Share:

ছাত্রবাসে কী ভাবে মানিয়ে নেবেন? ছবি: সংগৃহীত।

উচ্চশিক্ষা বা ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য অনেককেই পরিবারের নিশ্চিন্ত আশ্রয় ছেড়ে দূর শহরে যেতে হয়। ছাত্রাবাসে শুরু হয় এক নতুন জীবন। আবাসিক জীবন কাটানো অনেক পড়ুয়াই বলেন, ছাত্রাবাসের জীবন অনেক কিছু শেখায়। জিনিসপত্র ভাগ করে নিতে, একে অন্যের বিপদে পাশে থাকতে শিক্ষা দেয় হস্টেল জীবন। আত্মনির্ভরতার পাঠ মেলে এখানেই। তবে শুরুতে অনেকের মনেই নতুন জীবন নিয়ে ভয় থাকে। বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট পরিবারে বেড়ে ওঠা ছেলে-মেয়েরা সেই বড় পরিসরে গিয়ে কী ভাবে মানিয়ে নেবেন? এ বিষয়ে কিছু জরুরি পরামর্শ দিলেন মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ।

Advertisement

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি

আবাসিক জীবন যে কোনও বয়সেই হতে পারে। স্কুলজীবনেও অনেকে ছাত্রবাসে থাকেন। আবার দ্বাদশ পাশের পর অনেককে পরবর্তী পড়াশোনার জন্য ছাত্রবাসে থাকতে হয়। অনেক সময় সিনিয়ররা নবাগতদের সঙ্গে মস্করা করেন। নিছক মজায় আপত্তি না থাকলেও, কোনও কোনও সময় তা মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে। তার পরিণতি ভাল হয় না। ছাত্রবাসের জীবন শুরু করার সময় এ নিয়ে অনেকেরই ভয়-ভীতি থাকে। মনো-সমাজকর্মী মোহিত বলছেন, সেখানে কী ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে, সে বিষয়ে অভিভাবকদেরই আগাম ধারণা দিতে হবে সন্তানকে। সন্তানের বয়স কম হলে, তাকে বোঝাতে হবে, কেউ ভয় দেখালে, ভয় না পেয়ে বাড়িতে জানাতে। ছাত্রাবাসের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তাঁকে বলতে। কিছুটা বড় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম হবে। সিনিয়রদের কোনও ব্যবহারে যদি সমস্যা হয়, প্রথমেই তা বাড়ির লোককে খোলাখুলি বলা দরকার। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য কমিটি থাকে। সেখানেও সমস্যার বিষয়ে জানানো প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সমস্যা গুরুতর হলে, সময় নষ্ট না করে অভিভাবককে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

Advertisement

তবে প্রথমেই বিষয়টি এতটা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না গেলে দৃঢ় ভাবে সিনিয়রদের বলা যেতে পারে, তাঁদের কোন আচরণটি ভাল লাগছে না। তবে প্রথমেই উচ্চগ্রামে কথা বলতে গেলে হিতে-বিপরীত হতে পারে। প্রয়োজনে একই রকম অসুবিধার সম্মুখীন, অন্য ছাত্রদের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়েও সিনিয়রদের সঙ্গে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কথা বলা যেতে পারে। তবে তাতে পরিস্থিতি জটিল হলে অবশ্যই অভিভাবক, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

হাসিমুখে কথা

নতুন পরিবেশে নতুন মানুষের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ওঠা বড় বিষয়। মোহিত বলছেন, শুরুটা সকলের সঙ্গেই হাসিমুখে হওয়া উচিত। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে যদি দেখা যায়, বন্দুদের ঠাট্টা-তামাশা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠছে, তা হলে অপছন্দের কথা স্পষ্ট ভাবে বলা যেতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে সাবলীল ভাবে কথা বললেও, কেউ যদি কোনও বিষয় এড়িয়ে যেতে চান, তা নিয়ে না খোঁচানোই ভাল।

অপছন্দ জানিয়ে রাখতে পারেন

এক এক জন পড়ুয়া, এক এক পরিবারে এক এক রকম ভাবে বড় হয়েছেন। তাঁদের রুচি-পছন্দ আলাদা। ছাত্রাবাসে শোয়ার খাট আলাদা হলেও শৌচাগার, স্নানাগার অন্যদের সঙ্গেই ব্যবহার করতে হয়। কারও কারও প্রবণতা থাকে অন্যের সাবান, জিনিসে হাত দেওয়া বা না বলে ব্যবহার করার। এমন কিছু সমস্যা হলে, খোলাখুলি কথা বলতে পারেন।

খাবার ও খরচ ভাগ করে নেওয়া

ছাত্রাবাসে বাড়ির খাবারের অভাব সব সময়ই থাকে। অনেক জায়গায় খাওয়া নিয়ে সমস্যাও থাকে। এ ক্ষেত্রে কেউ বা়ড়ি গেলে শুকনো খাবার সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেন। সেই খাবার সকলে ভাগ করে খাওয়ার আলাদাই আনন্দ। একটু বড়দের ছাত্রাবাসে অনেকেই বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খান। সে ক্ষেত্রে খরচ সকলের ভাগ করে নেওয়া উচিত। না হলে একজনের উপর চাপ পড়তে পারে। তবে যদি কোনও আবাসিক অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হন, সকলে মিলে তাঁর পাশে থাকাটা অন্য ব্যাপার।

নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখা

যে হেতু একই ঘরে অন্য জনও থাকেন বা ঘরে যখন তখন আড্ডা বসে, তাই নিজের জিনিস গুছিয়ে নেওয়া দরকার। টাকাপয়সা বা জরুরি জিনিস নিজের আলমারিতে তালা দিয়ে রাখা ভাল। কোনও কিছু খোয়া গেলে বন্ধুদের সঙ্গে মন কষাকষি, দূরত্ব তৈরি করতে পারে। তাই শুরুতেই নিজের জিনিস সঠিক ভাবে গুছিয়ে রাখলে এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যাবে।

স্বাস্থ্যের খেয়াল

ছাত্রাবাসের আবাসিক জীবন মানেই, এক ধাক্কায় অনেকটা স্বাধীনতা। বাবা-মা-অভিভাবকের চোখরাঙানি নেই। অনেক সময় ছাত্রবাসে এসে অনেকেই বেহিসেবি জীবনযাপন শরু করেন। বিশেষত, একটু বড়দের ছাত্রাবাসে। অনেক সময় নিজে না চাইলেও কড়া পানীয় খাবার ব্যাপারে জোরাজুরি শুরু হয় বন্ধুমহলে। এ ক্ষেত্রে নিজের জীবনের রাশ নিজেকেই টানতে হবে। পাশাপাশি প্রাথমিক কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখা দরকার, রাতবিরেতে শরীর খারাপ করলে যাতে হাতের কাছে তা পাওয়া যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement