diet

নিরামিষ ভালবাসেন? মাছ-মাংস-ডিম ছাড়াই শরীরকে সুস্থ ও ছিপছিপে রাখুন এই উপায়ে

নিরামিষ খাবারের মেনু বাছার সময় খুব সতর্ক থাকা দরকার৷ না হলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে৷ হতে পারে রক্তাল্পতা৷

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ১৮:২৯
Share:

সব দিক বুঝে–শুনে খেতে পারলে নিরামিষ খাওয়া ভাল৷ ছবি: শাটারস্টক।

বাঙালির শরীর–মন পুষ্ট হয় মাছে–ভাতে৷ মাংস–ডিমেও ‘না’ নেই তাঁর৷ তবে আজকাল স্বাস্থ্যের খাতিরে কেউ কেউ নিরামিষ খাওয়া ধরেছেন, বিশেষ করে বেশি বয়সে৷ কেউ নিরামিষ খান শখে, কেউ প্রাচীন প্রচলিত সংস্কার মেনে বা তিথি–পার্বণে৷

Advertisement

সাধারণভাবে নিরামিষের নানান প্রকারভেদ আছে৷ সব প্রাণীজ খাবার, এমনকি দুধ, মধুও বাদ দেওয়া হয় যে নিরামিষ খাবারে, তার নাম ‘ভেগান ডায়েট’৷ ল্যাক্টো–ভেজিটেরিয়ান ডায়েটে উদ্ভিজ্জ খাবারের পাশাপাশি দুধজাত খাবার থাকে৷ ওভো–ল্যাক্টোভেজিটেরিয়া দুধ–ডিম খেতে পারেন৷ আবার সেমি–ভেজিটেরিয়ানরা আবার রেড মিট ছাড়া সব খান৷

নিরামিষের গুণাগুণ

Advertisement

সব দিক বুঝে–শুনে খেতে পারলে নিরামিষ খাওয়া ভাল৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল কম ঢ়োকে শরীরে৷ তার হাত ধরে ওবেসিটি, ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ, হাইপ্রেশার, ডায়াবেটিস ও কিছু ক্যানসারের আশঙ্কা কমে যায়৷ নিরামিষ খাবার সহজে হজম হয়৷ প্রোটিনের বাড়াবাড়ি থাকে না বলে কিডনির জন্য ভাল, বিশেষ করে বয়স বাড়লে যখন প্রোটিনে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনা দরকার হয়ে পড়ে৷ আমিষ খাবার খেলে যা অনেক সময় সম্ভব হয় না৷

আরও পড়ুন: এ সব খাবারই উস্কে দেয় থাইরয়েডের সমস্যা, সুস্থ থাকতে পাত থেকে আজই বাদ দিন এদের

প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সব রকমের খোসা ছাড়ানো ডাল রাখুন পাতে।

নিরামিষ খাবারের মেনু বাছার সময় খুব সতর্ক থাকা দরকার৷ না হলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে৷ হতে পারে রক্তাল্পতা৷ আবার বেশি তেল–ঘি দিয়ে রাঁধলে ওজন বেড়ে সমস্যা হতে পারে৷ কাজেই ডায়েট প্ল্যান করার সময় সতর্ক থাকা দরকার৷

ডায়েট প্ল্যান

স্বাদ ও স্বাস্থ্যের গোড়ার কথা হল বৈচিত্র৷ ঘরে বানানো সব রকম খাবার একটু বুঝেশুনে খেলে ও কয়েকটি খাবার বাদ দিলে পুষ্টি নিয়ে টেনশন করার কিছু থাকে না৷ কী করতে হবে আর কী করবেন না তা জানেন? রইল কিছু জরুরি টিপ্‌স। খাদ্যতালিকায় খোসাওয়ালা ডাল, ব্রাউন ব্রেড, ব্রাউন রাইস, টাটকা ও শুকনো বিন, রাজমা, ছোলা, মটর, সোয়াবিন, রঙিন শাক–সব্জি, বাদাম, সবজির বীজ, দুধ, দই, ছানা, ইত্যাদি রাখুন৷ দু’–একটা করে ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে খান৷ পর্যাপ্ত প্রোটিন পাবে শরীর৷ বিন, পালং, আয়রন ফর্টিফায়েড খাবার, শুকনো ফল খেলে রক্তাল্পতা কম হবে৷ ভাতের পাতে লেবু বা মূল খাবার খাওয়ার পর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কোনও ফল, যেমন, আমলকি, পেয়ারা, কমলা, সবেদা ইত্যাদি খেলে খাবারের আয়রন সহজে ঢুকবে শরীরে৷ আমিষ না খেলে ভিটামিন বি১২–এর ঘাটতি হওয়া স্বাভাবিক৷ সেই ঘাটতি মেটাতে খান ভিটামিন বি১২ ফর্টিফায়েড খাবার, যেমন, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, সয়া মিল্ক ইত্যাদি৷ সাপ্লিমেন্টও খেতে হয় কখনও৷ তবে তা অবশ্যই পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে। গায়ে রোদ বিশেষ না লাগলে ভিটামিন ডি–এর অভাব হতে পারে৷ সে অভাব মেটাতে ১০–৩টের মধ্যে ১৫–২০ মিনিট গায়ে রোদ লাগান৷ ভিটামিন ডি ফর্টিফায়েড দুধ বা সয়া মিল্ক খেলে কিছুটা কাজ হবে৷ ক্যালসিয়ামের জোগান পেতে দুধ, সয়াবিন, ডাল, খেঁজুর, ব্রকোলি, পালং ইত্যাদির সঙ্গে খান ঘরোয়া সুষম খাবার৷ আমিষ খান না বলে চিন্তা করবেন না৷ বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে নিরামিষ খাবার থেকেই ক্যালসিয়াম বেশি ভাল ভাবে শোষিত হয় শরীরে, যদি না ভিটামিন ডি–এর বিরাট ঘাটতি হয়ে যায়৷

আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসে ইনসুলিন নিতে হয়? তা হলে অবশ্যই মাথায় রাখুন এ সব

বিভিন্ন শাক-সব্জি ও ফলে আস্থা রাখুন।

শরীরের বৃদ্ধি ও পুষ্টিতে জিঙ্কের ভূমিকা বিরাট৷ চাল, ডাল, আটা, বাদাম, সয়াবিন ইত্যাদি খেলে শরীরে তার ঘাটতি হওয়ার কথা নয়৷ সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন৷ তবে তাতে যেন জিঙ্ক ১৫–১৮ মিলিগ্রার মধ্যে থাকে৷ ৫০ গ্রামের বেশি থাকলে কারও কারও ক্ষেত্রে শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণে ঘাটতি হতে পারে৷ খাবারের ক্যালোরি ও পুষ্টি ঠিক রাখার চেষ্টা করুন৷ পুষ্টিহীন হাই ক্যালোরি খাবার, যেমন, মিষ্টি ও ভাজাভুজি খাওয়া কমিয়ে বা বন্ধ করে লো ক্যালোরির পুষ্টিকর খাবার খান৷ রিফাইন্ড খাবারের বদলে লাল চালের ভাত, ব্রাউন ব্রেড, জোয়ার–বাজরা–রাগি বা আটার রুটি, খোসাওলা ডাল খান৷ খান ভিটামিন–মিনারেল ফর্টিফায়েড ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল৷ বিভিন্ন রকম শাক–সব্জি–ফল খান৷

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।​

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement