Fiddle-leaf fig

আহ্লাদে বাড়ে সে

ভায়োলিনের মতো আকার আর রেশমের মতো মসৃণ ত্বক এই গাছের পাতার। আর সেই জন্য পাতার নামে নামকরণ পুরো গাছের। ফিডল-লিফ ফিগের যত্ন নেবেন কী ভাবে? জেনে নিন এ বারএই গাছের অনেক আলো দরকার। তাই ঘরের অন্ধকার কোণে একেবারেই নয়। বরং যে বারান্দা বা ঘরের যে জানালা দিয়ে আলো আসে, সেখানে রাখতে পারেন একে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ০২:১৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত

ক্রান্তীয় অঞ্চলের এই গাছ একটু যত্ন নিলেই আমাদের দেশেও বাড়ে তরতর করে। আর ঘরের মাঝে যেখানেই রাখুন না কেন, পাতার মসৃণ সবুজে ঘরের ভোলই পাল্টে দেয় এই ফিডল-লিফ ফিগ। তবে তার যত্নও নিতে হবে বইকি!

Advertisement

আরও আলো আরও আলো

এই গাছের অনেক আলো দরকার। তাই ঘরের অন্ধকার কোণে একেবারেই নয়। বরং যে বারান্দা বা ঘরের যে জানালা দিয়ে আলো আসে, সেখানে রাখতে পারেন একে। পুবের ঘর বা বারান্দা এই গাছের জন্য খুবই ভাল। তবে মনে রাখবেন আলো চাই ওর, রোদ নয়। তাই সরাসরি রোদে রাখবেন না। নিয়মিত ৬-৭ ঘণ্টা আলোয় রাখুন। এই গাছের পাতা যেহেতু বড় হয়, প্রত্যেক সপ্তাহান্তে তা কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিতে হবে। তবেই সে পুরোমাত্রায় আলো পাবে।

Advertisement

জল দাও, জল দাও

ফিডল লিফের কিন্তু জলও চাই। এই গাছের মাটি শুকনো রাখা যাবে না। আবার ভিজেও রাখা যাবে না। জল কম দিলে গাছের পাতার ধার বরাবর তা খয়েরি হয়ে যেতে থাকবে। আবার বেশি জল দিলে পাতার মাঝে খয়েরি স্পট দেখা দেবে। উভয়সঙ্কট! তাই এই গাছে রোজ ভাল করে জল দিতে হবে, একই সঙ্গে খেয়ালও রাখতে হবে জল যেন গোড়ায় জমে না থাকে। অর্থাৎ জলনিকাশি যেন ভাল হয়, সে দিকে নজর রাখুন। টবের মাটি রোজ চেক করা জরুরি। যদি দেখেন, শুকিয়ে গিয়েছে তবেই আবার জল দিন। আর ঠান্ডা জল না দিয়ে ঘরের তাপমাত্রায় এনে জল দিন। ঠান্ডা জল সহ্য করতে পারে না এই গাছ।

পাত্র চাই

যে পাত্রে এই গাছ কিনবেন, তাতে করেই রেখে দেবেন না। অন্ততপক্ষে তার চেয়ে ২-৪ ইঞ্চি বেশি ব্যাসবিশিষ্ট পাত্রে এই গাছের টব বদল করতে হবে। তবেই গাছের শিকড় ভাল গ্রিপ পাবে এবং শাখাপ্রশাখাও বিস্তার করতে পারবে, মাটির নীচে ও উপরে। গাছ যত বাড়বে তার শিকড়ও তত ছড়াবে। তাই গাছের বাড়বৃদ্ধির জন্য টব বদলানো দরকার। এই গাছ প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে বাড়িতে ৬ ফুট পর্যন্ত বাড়লেই যথেষ্ট। তাই গাছের উচ্চতা যদি একটা সীমায় বেঁধে রাখতে চান, সে ক্ষেত্রে রুট বল ট্রিম করতে হবে। শিকড়ের বাইরের অংশের শতকরা ২০ ভাগ ছেঁটে দিতে পারেন। তার বেশি করবেন না। তা হলে শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

টুকরো টিপস

• এই গাছে খুব সহজেই পোকামাকড় লাগে। তাই পেস্ট নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা রাখুন। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করাও জরুরি।

• এই গাছের পাতাও বাড়ির পোষ্যদের জন্য বিষাক্ত। তাই খেয়াল রাখুন, সে যেন এই পাতা চিবিয়ে না ফেলে। তা হলে কিন্তু ওদের পেটখারাপ করবে।

• প্রপ্যাগেট করতে চাইলে প্রথমে একটা শক্তপোক্ত, পুরুষ্টু ডাল বেছে নিন। এ বার সেই ডালে যেখানে পাতা বেরিয়েছে, কাণ্ড ও পাতার সেই জয়েন্ট থেকে খানিকটা অংশ কেটে নিন। একটি পাত্রে জল ভরে তার মধ্যে এই শাখা রাখুন আলোয়। জল নোংরা হয়ে গেলে তা পাল্টে দিন। অপেক্ষা করতে হবে প্রায় এক মাস। নতুন পাতা গজালে বা শিকড় বাড়লে অন্য পাত্রে পুঁতে দিন।

• এই গাছে মাসে একবার সারও দিতে পারেন। তার জন্য ৩:১:২ অনুপাতে নাইট্রোজেন-ফসফরাস-পটাশিয়াম মেশাতে হবে। সার তৈরি করার ধারণা না থাকলে বাজারচলিত এই মিশ্রণও কিনে নিতে পারেন।

• মাঝেমাঝেই এই গাছের নষ্ট হয়ে যাওয়া পাতাও ছেঁটে দিতে পারেন। তবে খুব সাবধানে, মূল কাণ্ডের যেন ক্ষতি না হয়।

এই গাছ খুব সুখী। যেমন সুন্দর দেখতে, তেমনই এর দিকে নজর রাখাও প্রয়োজন। তাই গাছ কেনার আগে মাথায় রাখুন, এই ফিডল-লিফের বাড়বৃদ্ধির জন্য অনেক ধৈর্য ও যত্ন লাগে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement