ডেডলাইনের চাপে দীর্ঘ সময় বাধ্য হয়েই থেকে যেতে হয় অফিসে। ছবি: শাটারস্টক।
অফিস থেকে দেরি করে ফেরা বা বাড়িতেও অফিসের কাজ নিয়ে আসা— অনেকের কাছেই এ যেন এক রুটিনে পরিণত হয়েছে। অফিসের কাজের ঠেলায় পরিবারের জন্য আলাদা করে সময় বার করে ওঠা হয় না আর। পরিবারের মুখভার, খুদেটির মনখারাপ, বাবা-মায়ের অভিযোগ— সবই মেনে নিতে হয় এক প্রকার বাধ্য হয়েই। শুধু তা-ই নয়, অফিসের চাপে নিজস্ব শখগুলিও বিসর্জন দিতে হয়েছে।
এমনিতে যে কোনও অফিসেই কাজের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। কিন্তু সেই সময় মেনে কাজ করতে পারেন ক’জন! ফলে হয় অতিরিক্ত সময় থেকে কাজ সারতে হয়, নয়তো বছরের শেষে জমে যায় কাজের স্তূপ। ডেডলাইনের চাপে তখন দীর্ঘ সময় বাধ্য হয়েই থেকে যেতে হয় অফিসে।
কখনও-সখনও কাজের চাপের উপর নির্ভর করে একটু বেশি সময় থাকতে হতেই পারে অফিসে। তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু রোজ রোজ এমনটা ঘটলে বুঝতে হবে, আপনার মধ্যে কোথাও খামতি থেকে যাচ্ছে! কোন কৌশল মেনে চললে নিত্য দেরির হাত থেকে মুক্তি মিলবে সহজেই?
১) অফিসের প্রতি দিনের কাজের একটা তালিকা করে ফেলুন প্রথমেই। প্রতিটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন। কী কী কাজ আবশ্যিক, তার পাশে হঠাৎ এসে যাওয়া কাজের জন্যও রাখুন কিছুটা সময়। যদি সে দিন তেমন কোনও কাজ না আসে, তা হলে আবশ্যিক কাজগুলো আর এক বার মিলিয়ে নিতে সেই সময়টা কাজে লাগান।
২) একটানা কাজ করলে কাজের প্রতি অনীহা আসতে পারে। কাজের মাঝে বিরাম নেওয়াও কাজেরই অঙ্গ। কিন্তু বিশ্রামের সময়কে অহেতুক লম্বা করবেন না। এতে কিছুটা অতিরিক্ত সময় হাতে থাকবে। অফিসের ডেস্কে বসে না খেয়ে ক্যান্টিনে আর পাঁচ জনের সঙ্গে গল্প করে খান। মনমেজাজ ভাল থাকবে। বিশ্রামের সময় ফোনে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে সময় নষ্ট না করে, এক কাপ চা কিংবা কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে অফিসের বাইরে খানিক হেঁটে আসতে পারেন। মন ভাল থাকলে কাজেও স্ফূর্তি আসে।
৩) মনঃসংযোগ করুন। একসঙ্গে অনেক কাজ করার বদলে এক একটা কাজে লক্ষ্য স্থির রাখুন। আগে একটা শেষ হোক, তার পর আর একটা। অনেক কাজ একসঙ্গে করতে গেলে কাজে ভুলও হবে, আর সময়ের কাজ সময়ে শেষও হবে না।
৪) ঘন ঘন সিট ছেড়ে উঠে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস আছে? তা হলে তাতে রাশ টানুন। এতে শরীর ও সময় দুইয়েরই ক্ষতি।
৫) সমাজমাধ্যমে ব্যস্ত থাকার অভ্যাস আছে? কিংবা অনলাইন শপিং করার অভ্যাস? সে সব অভ্যাসকে অফিসে টেনে আনবেন না। এতে অনেকটা সময় অপচয় হয়।
৬) অনেকেই কাজের ক্ষেত্রে প্রচুর দায়িত্ব একার ঘাড়ে নিতে যান, কখনও বা নিতে বাধ্য হন। এমনটা করলে কিন্তু কাজও ভাল হয় না, সময়ও বজায় রাখা যায় না। তার চেয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব না নিয়ে যে কাজের জন্য আপনি নিযুক্ত সেটাই মন দিয়ে করুন। কেউ জোর করে সে দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে আলোচনায় বসুন।