bone

হাড়ের অসুখ ঠেকাতে এখন থেকেই পাতে রাখুন এ সব খাবার

খাবার পাতে নজর দিলেই বাড়তে পারে হাড়ের সমস্যা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৪
Share:

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ডেকে আনে হাড়ের অসুখ। ছবি: আইস্টক।

একটা বয়সের পর হাঁটু-কোমরে যন্ত্রণা আজকাল স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু’পা হাঁটলে বা একটু বেশি কায়িক শ্রমেই জানান দিচ্ছে শরীর। গাঁটে ব্যথার মতো নিরীহ রোগ কিংবা অস্টিওপোরোসিসের মতো জটিল অসুখের হানা প্রায় ঘরে ঘরে। চিকিৎসকদের মতে, সময় থাকতে হাড়ের কথা ভাবলে বয়সকালে সমস্যা অনেকটা এড়ানো যায়। শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হাড়ের সমস্যার অন্যতম কারণ।

Advertisement

শরীরে যে সব খনিজ পদার্থের প্রয়োজনীয়তা আছে তার মধ্যে অন্যতম ক্যালসিয়াম। হাড়ের কাঠামোকে দৃঢ় রাখার মূল উপাদান হল ক্যালসিয়াম। এ ছাড়া পেশি সচল রাখা, নার্ভাস সিস্টেমকে কার্যকর রাখতেও ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। শরীরে ক্যালসিয়াম ছাড়াও ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-র মতো ফ্যাট সলিউবল ভিটামিনগুলোর আত্তীকরণ সম্ভব নয়। তাই রোজের খাদ্যতলিকায় ক্যালসিয়াম থাকা খুব প্রয়োজন।

এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতি দিন এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা আছে। অনেক সময়ই হাড়ের সমস্যার জন্য ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্যালসিয়ামের জন্য ওষুধ খাওয়াকে খুব একটা সমর্থন করে না। বরং চিকিৎসকদের মতে, ওষুধের মাধ্যমে দেওয়া ক্যালশিয়াম বেশি পরিমাণে খেলে তা শরীরে সমান ভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পেরে শেষে কিডনিতে গিয়ে জমা হয়। তা থেকে পাথর হতে পারে। তাই হাড়ের সমস্যা রুখতে ছোট বয়স থেকেই পাতে থাকুক ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। কোন কোন খাবার থেকে আপনি সর্বাধিক ক্যালসিয়াম পেতে পারেন রইল তার সন্ধান।

Advertisement

আরও পড়ুন: দাঁতের সমস্যায় জেরবার? এই সব অভ্যাসে রাশ টানলে সারবে অসুখ

দুধ: ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস এই খাবার। এক কাপ মাঠাযুক্ত দুধে প্রায় ২৭০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সঙ্গে উপরি পাওনা ভিটামিন ডি এবং এ। সোয়াবিন থেকে যে দুধ পাওয়া যায়, তার এক কাপ দুধে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম। যাঁদের দুধ হজম করতে সমস্যা হয় তাঁরা সোয়া মিল্ক, আমন্ড মিল্ক বা নারকেলের দুধ খেতে পারেন।

চিজ: চিজে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম। এ ছাড়াও মিলবে ফসফরাস ও জিঙ্কের মতো মিনারেল। প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় চিজ বা ছানা রাখতে পারেন৷ তবে চিজ ওজন বাড়িয়ে তোলে। তাই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

দই: অনেকেরই দুধ হজম করতে সমস্যা হয়। আর যাঁরা এই সমস্যায় ভোগেন তাঁদের জন্য আদর্শ বিকল্প দই। এক কাপ ফুল ফ্যাট দই থেকে প্রায় ২৮০-২৯০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। টক দইয়ের মধ্যে যে ল্যাক্টোব্যসিলাস থাকে তা হজমেও সাহায্য করে।

সবুজ পাতার শাকসব্জি: বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, পালং, নটে, সর্ষে শাক ইত্যাদিও ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস। প্রতি দিনকার খাদ্যতালিকায় থাকুক এই সব শাকসব্জি।

শুকনো ফল: শুকনো অ্যাপ্রিকট, বাদাম, খেজুরে ক্যালসিয়াম রয়েছে প্রচুর। তবে বেশি পরিমাণে শুকনো ফল খেলে বাড়তে পারে ওজন। তাই রাশ টানুন পরিমাণে।

ডাল: নানা ধরনের ডাল— যেমন রাজমা, সোয়াবিনের দানা, ছোলা ও বিভিন্ন ধরনের ডাল ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস। এক কাপ রান্না করা মুগ ডাল থেকে প্রায় ২৭০ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: যৌন সংসর্গ থেকেও সংক্রামিত হতে পারে ডেঙ্গি! বলছে গবেষণা

ডিম, মাংস এবং সামুদ্রিক মাছ: রোজের খাদ্যতালিকায় থাকুক ডিম, মাংস কিংবা সামুদ্রিক কোনও মাছ। এগুলিও শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান বাড়ায়।

সাবধানতা

প্রত্যেকের শরীরের অবস্থা ও প্রয়োজনীয়তা আলাদা। ক্যালসিয়াম যেমন হাড়ের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় তেমনই শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা কিডনি স্টোনের মতো সমস্যা। এ ছাড়াও অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম শরীরে আয়রন এবং জিঙ্ক সংশ্লেষেও বাধা সৃষ্টি করে। তাই খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম রাখার আগে নিজের শরীর অনুপাতে ঠিক কতটা পরিমাণে এটি প্রয়োজন, তা জানতে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement