তেতোর সঙ্গই বাঁচাবে হরেক অসুখের হাত থেকে। ছবি: আইস্টক।
স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার হদিশ জানাতে গেলে প্রায় সব চিকিৎসকের এক রা, প্রচুর সবুজ শাকসব্জি আর তেতো ডায়েটে রাখতেই হবে। শুধু এ দেশ নয়, পুষ্টিগুণ বাড়াতে সারা বিশ্ব জুড়ে সব শিশুকেই স্থানীয় তেতো স্বাদের শাকসব্জি খাওয়াতে অভিভাবকরা উঠেপড়ে লাগেন।
কথায় বলে, প্রথম পাতে তেতো খেলে সব খাবারই স্বাদু ঠেকে। কিন্তু কেবল স্বাদবর্ধন করাই তেতোর একমাত্র কাজ নয়। বরং চিকিৎসকদের মতে, নিয়ত ডায়েটে তেতো রাখলে অসুখবিসুখের সঙ্গে লড়াই করা অনেক সহজ হয়ে ওঠে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, তেতো শুধু মুখের স্বাদ বদলায় এমনই নয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, বিপাক হার বাড়িয়ে তুলতে, কিছু মরসুমি অসুখ রুখে দিতে এই সব শাকসব্জির ভূমিকা অনেক। কিছু কিছু তেতো সব্জি তো মরসুম অনুযায়ী মেলে। প্রকৃতির নিয়মেই ওই সময়ের কোনও অসুখ প্রতিরোধ করতে ওই সব সব্জি সে সময়ই ফলে। এ ছাড়াও রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, এ সব নিয়ন্ত্রণে রাখতেও তেতোর ভূমিকা অনেক।’’ তাই বছরের বিভিন্ন সময় খাবার পাতে কোন কোন তেতো রাখলে সারা বছরই ভিতর থেকে অনেকটা সুস্থ থাকা যাবে রইল তার হদিশ।
আরও পড়ুন: বাজির আগুনে বেশি পুড়ে গেলে কী ভাবে প্রাণ বাঁচাবেন?
উচ্ছে/করলা: সারা বছরই মেলে এই সব্জি। এর অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল গুণ শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। উচ্ছে বা করলার রস প্রতি দিন সকালে খেলে ডায়াবিটিসেও বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
পলতা: বাঙালির শুক্তো রান্নার অন্যতম উপাদান এই পাতা। পলতায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি, তাই রোগ প্রতিরোধের সঙ্গে পলতার গুণে শরীরে শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে অনেকেই পলতা পাতার বড়া করে খান, তেলে পড়লে এই সব পাতার গুণ অনেকটাই নষ্ট হয়। তাই তরিতরকারিতেই এদের ব্যবহার করা ভাল।
নিমপাতা: প্রাকৃতিক ভাবেই নিমপাতা জীবাণুনাশক। ত্বকের নানা অসুখ দূর করতে ও জীবাণুনাশক হিসেবে এই পাতার ব্যবহার সর্বজনগ্রাহ্য। স্নায়বিক সমস্যা সারাতে ও ক্ষুদ্রান্তে ব্যাক্টিরিয়ার হানা ঠেকাতে মরসুমে রাখুন নিমপাতা।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে এই ক’টা পানীয় রোজ রাখুন ডায়েটে, কমবে শ্বাসকষ্টও
মেথি: মেথি শাক আর মেথির দানা, বাঙালি রান্নায় দুইয়ের ব্যবহারই যথেষ্ট। ডায়াবিটিস সামাল দিতে ও শরীরে অম্লের ভাব কমাতে মেথি সাহায্য করে। চুলের খাদ্য জোগাতেও মেথির ব্যবহার যথেষ্ট। তাই এই তেতো মশলাও রাখুন খাবার পাতে।
সজনে ফুল: বসন্তে এই খাবার পাতে রাখুন প্রায়ই। বসন্ত রোগের হানা রুখতে যেমন কাজে আসে, তেমনই ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, সর্দি-জ্বরের উপশমে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এতে প্রচুর ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকায় সদ্য মা হয়েছেন এমন কারও ডায়াটে সজনে ফুল রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।