কেন কমছে স্মৃতিশক্তি, কারণগুলি চমকে দেওয়ার মতোই। ছবি: ফ্রিপিক।
বয়স হলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে অল্প বয়সেই যদি সব ভুলতে শুরু করেন, সে ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকেরা কখনও বলছেন, ডিজিটাল মাধ্যমের উপর এত বেশি নির্ভরতার কারণে মস্তিষ্কের কসরত কমছে, ফলে মরচে পড়ছে স্মৃতির পাতায়। আবার কখনও বলা হচ্ছে, ‘ব্রেন ফগ’-এর কারণে এমন হচ্ছে। আচমকা ভাবনাচিন্তা শ্লথ হয়ে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, সদ্য ঘটা ঘটনাও মনে না পড়ার মতো নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। রোজের কিছু বদভ্যাসও কিন্তু এর জন্য দায়ী।
রোজের কোন কোন অভ্যাসের কারণে স্মৃতিশক্তি মতে পারে?
প্রাতরাশ না খাওয়া
এই অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। রোজের ব্যস্ততায় সকালের জলখাবার না খেলে শরীর প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন পাবে না। ফলে সকাল থেকেই গ্লুকোজ় জারিত হয়ে শক্তি উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। এর প্রভাব পড়বে মস্তিষ্কেও।
ডিজিটাল মাধ্যমের উপর নির্ভরতা
আজকাল আর কোনও কাজেই মস্তিষ্কের কসরত তেমন হয় না। ফোন নম্বর মনে রাখার অভ্যাস চলে গিয়েছে সেই কবেই, স্মার্টফোনই সে কাজ করে দেয়। ঠিকানা খুঁজতেও আর মাথা ঘামানোর দরকার পড়ে না। জিপিএস-গুগ্ল ম্যাপ রাস্তার খুঁটিনাটি বলে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশটিকে আর মনে রাখার জন্য বিশেষ পরিশ্রম করতে হয় না। ফলে স্মৃতির পাতাতেও মরচে পড়তে শুরু করে।
মোবাইলে স্ক্রলিং
রাতে শুতে যাওয়ার আগে ঘণ্টাখানেক মোবাইলে স্ক্রল করার অভ্যাস মস্তিষ্কের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। একাধিক গবেষণা বলছে, ৩-৪ ঘণ্টা যদি মোবাইলে একটানা 'রিল্' বা ভিডিয়ো দেখেন কেউ, তা হলে তাঁর শরীরে স্ট্রেস হরমোন বা কর্টিসলের মাত্রা বাড়বে। কেবল তাই নয়, মেলাটোনিন হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গিয়ে ঘুমের সমস্যা দেখা দেবে। এতে মস্তিষ্কের ক্লান্তি বাড়বে যা ব্রেন ফগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি দেওয়া পানীয়
শুধু যে খাবারে চিনি মেশালে বিপদ হয় এমন নয়, প্রক্রিয়াজাত খাবারও সমান বিপজ্জনক৷ কারণ তাতে অ্যাডেড সুগার থাকে, তা সে ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল হোক কি পাউরুটি, প্যাকেটের ফলের রস হোক কি বিয়ার, সস, কেচাপ, কুকিস, ক্যান্ডি, মেয়োনিজ ও অন্যান্য স্যালাড ড্রেসিং, ঠান্ডা পানীয়৷ চিনি বা চিনিসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে হরমোনের তারতম্য হয়, যা থেকে স্মৃতিনাশ, মাইগ্রেন, অনিদ্রার সমস্যাও বাড়ে।
গায়ে রোদ না লাগানো
ঘরের ভিতর যদি বেশি সময় কাটান,তা হলে তার প্রভাব মস্তিষ্কে পড়বেই। সে বাড়িতে থাকা হোক বা কাজের জায়গায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘরের ভিতর থাকলে এবং একটানা টিভি দেখা বা মোবাইলে ঘাঁটাঘাঁটি করে গেলে, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়বে। গবেষণা বলছে, প্রকৃতির মাঝে না থাকা এবং গায়ে রোদ না লাগানোর কারণে, ভিটামিন ডি-এর অভাব হতে পারে। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে অবসাদ, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেবে।