diabetes

Diabetes in Kids: ছোটদের ডায়াবিটিস নিয়ে রাজ্য হতে পারে দেশের মডেল

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে ডায়াবিটিস টাইপ-ওয়ানে বিশ্বে আক্রান্ত ছিলেন ৯০ লক্ষ মানুষ।

Advertisement

জয়তী রাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২২ ০৫:৪৮
Share:

ফাইল চিত্র।

নতুন পরিকাঠামো না গড়েই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সেই রোগ যদি হয় টাইপ-ওয়ান ডায়াবিটিস, তবে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষামূলক ভাবে এমনই একটি প্রকল্প এসএসকেএম হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের হাত ধরে শুরু করেছে রাজ্য। বাড়তি পরিকাঠামোর পিছনে খরচ না করে এবং বর্তমান ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েই নতুন এই প্রকল্পের ভাবনা উঠে এসেছে বিজ্ঞান বিষয়ক ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে। কারণ, ছোটদের ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়’ (এনসিডি)-এর জন্য ভারতে এমন প্রকল্প এই প্রথম। যা সফল হলে সারা দেশে ছোটদের এনসিডি-র চিকিৎসার ভাবনায় কেন্দ্রীয় সরকার পাকাপাকি ভাবে পরিবর্তন আনতে পারে।

Advertisement

তথ্য বলছে, এ দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই কারণ হল ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়’। সেই তালিকায় রয়েছে হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস, ক্যানসার, ফুসফুসের সমস্যার মতো অসুখ। বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণ হওয়ায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীন ‘ন্যাশনাল নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ় প্রোগ্রাম’-এ পড়ছে এই সব রোগ। কিন্তু ছোটদের ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়’ নিয়ে এতকাল ভাবনাচিন্তাই ছিল না সরকারের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে ডায়াবিটিস টাইপ-ওয়ানে বিশ্বে আক্রান্ত ছিলেন ৯০ লক্ষ মানুষ। ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজ়ম’ অনুযায়ী, টাইপ টু-র মতো দ্রুত না হলেও ভারতে ডায়াবিটিস টাইপ-ওয়ান বাড়ছে। ১৪ বছর বয়সের মধ্যে প্রতি এক লক্ষ শিশুর তিন জন নতুন করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

Advertisement

কী এই রোগ? শরীরের আত্মরক্ষার ব্যবস্থাই আক্রমণ করে বসে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষে। যার ফলে, ইনসুলিন উৎপাদন হয় না, হলেও অত্যন্ত কম পরিমাণে। ইনসুলিনের অভাবে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ‘অটোইমিউন ডিজ়িজ়’ হিসেবে পরিচিত এই রোগ শিশু বা কমবয়সিদের হয়। ঘন ঘন প্রস্রাব, বিছানা ভেজানো, খিদে বেড়ে যাওয়া, ওজন কমা, গলা শুকিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, ক্লান্তি, আবছা দৃষ্টির মতো উপসর্গ থেকে রোগকে চেনা যায়।

পিজি-তে বড়দের এনসিডি ক্লিনিকেই ২০১৩ সালে প্রথম শুরু হয় ছোটদের ডায়াবিটিস টাইপ-ওয়ান ক্লিনিক। পরে তা চালু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক চিকিৎসক জানান, দু’বছরের এই প্রকল্পে রোগীর স্বাস্থ্য, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। সেই সবের পর্যবেক্ষণে ইতিবাচক দিক উঠে এলে আরও ২৩টি জেলার সরকারি হাসপাতালে ছোটদের এই ক্লিনিক শুরুর কথা ভাবা হবে।

এসএসকেএমের এই প্রকল্পের মাধ্যমে এসএসকেএম হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিচালিত বড়দের এনসিডি ক্লিনিকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হয়েছে যথাক্রমে এম আরবাঙুর, হাওড়া জেলা হাসপাতাল, চুঁচুড়ার ইমামবড়া হাসপাতাল এবং বারাসত হাসপাতালের। এ বছরের জানুয়ারি থেকে ওই চার জেলা হাসপাতালে সপ্তাহে এক দিন করে শুরু হয়েছে ছোটদের ডায়াবিটিস টাইপ-ওয়ান ক্লিনিক। জেলার চারটি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের স্বাস্থ্য ভবনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চার হাসপাতালে গিয়েও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সংযোগকারী হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। ক্লিনিকের দিনেও সেখানে উপস্থিত থাকছেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, রাজ্যের এই প্রকল্পকে মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই প্রকল্প সফল হলেই সিলমোহর পড়বে ছোটদের এনসিডি নিয়ে কেন্দ্রের ভাবনায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement