নববর্ষের ক্যালেন্ডার তরুণ মজুমদার। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দিন কয়েকের আর অপেক্ষা। তার পরেই নববর্ষ উদ্যাপনে মেতে উঠবে বাঙালি। বাঙালির বৈশাখী উদ্যাপন মানেই পাটভাঙা নতুন শাড়ি, হালখাতা, মিষ্টির বাক্স আর নানা রকম ছবি দেওয়া ক্যালেন্ডার। বাঙালির নস্ট্যালজিয়ার অন্যতম উপাদানই হল ক্যালেন্ডার। তেমনই বাঙালির ছুটির দিনের দুপুর মানেই টেলিভিশনের পর্দায় ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ কিংবা ‘দাদার কীর্তি’। বাঙালির যাপনে, মননে, সংস্কৃতি-চেতনায় জড়িয়ে আছেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। বাঙালির আবেগে মিশে আছেন ‘বালিকা বধূ’র পরিচালক। তাই এই নববর্ষে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতা এবং আবেগকে এক সুতোয় বাঁধছে ‘সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন’। এই সংস্থা পরিচালকের ছবির পোস্টার, বুকলেট কভার দিয়ে তৈরি করেছে তাদের নববর্ষের ক্যালেন্ডার। যার প্রতি পাতায় স্রষ্টা এবং তাঁর সৃষ্টি নিয়ে যাবে স্মৃতি-সফরে। এই ক্যালেন্ডার প্রকাশিত হবে ১১ এপ্রিল, ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে।
আগে বাড়িতে হালখাতা সেরে কেউ ফিরলে বাড়ির ছোটদের মধ্যে ক্যালেন্ডার দেখা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যেত। ক্যালেন্ডারের ছবিতে গল্প খোঁজা চলত। আরাধ্য দেবদেবীর ছবি দেওয়া ক্যালেন্ডার বাড়িতে এলে প্রথমে কপালে ছুঁইয়ে প্রণাম করা হত। তার পর সযত্নে দেওয়ালে টাঙানো হত। আবার ক্যালেন্ডারে যদি কার্টুন চরিত্র কিংবা নিসর্গের ছবি থাকত, তা হলে ক্যালেন্ডার নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত বাড়ির কচিকাঁচাদের মধ্যে। বাঙালির চাহিদায় ক্যালেন্ডার শিল্পও চলত রমরমিয়ে। ইদানীং কাগজের ক্যালেন্ডারের চাহিদা কমেছে। সময়ের বিবর্তনের হাত ধরে এসেছে ‘ডিজিট্যাল ক্যালেন্ডার’। ঠিক এমন এক সময়ে বাঙালির হারাতে বসা এক আবেগকে ক্যালেন্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ায় আরও রঙিন হয়ে উঠল নববর্ষ।
তরুণ মজুমদারের ছবির পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
ক্যালেন্ডার সেজে উঠেছে ‘পলাতক’, ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলী’, ‘ফুলেশ্বরী’র মতো বিখ্যাত কিছু ছবির পোস্টারে। প্রতিটি ছবিতেই গান হচ্ছে অন্যতম সম্পদ। ক্যালেন্ডার প্রকাশ অনুষ্ঠানের সন্ধ্যা ভরে থাকবে পরিচালকের ছবির গানের সুরের মূর্ছনায়। এ ছাড়া সঙ্গীত পরিবেশন করবে ‘দোহার’। নববর্ষের প্রাক্মুহূর্তে এই ক্যালেন্ডার প্রকাশ বাঙালিয়ানার উদ্যাপন বলে মনে করেন সংস্থার সম্পাদক সঞ্জীব আচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘তরুণ মজুমদারের ছবি মানে, তার গান সুপার হিট হবেই। আর রবীন্দ্রসঙ্গীতের অপূর্ব ব্যবহার ওঁর ছবিতে দেখা গিয়েছে। এই দুই মিলিয়েই গীতি আলেখ্য 'তরুণ গাথা'র পরিকল্পনা করেছি। সঙ্গে থাকছে বাংলা নববর্ষের ক্যালেন্ডারে তরুণ মজুমদারের ছবির পোস্টার ও বুকলেট। সংগ্রহে রাখার মতো এক ক্যালেন্ডার।’’