—প্রতীকী চিত্র।
বিভিন্ন বয়সে দাঁতের নানা রকম সমস্যা লেগেই থাকে। তার মধ্যে একটি হল পেরিকরোনাইটিস। আক্কেল দাঁত ওঠার সময়ে দাঁতের মাড়িতে যে প্রদাহ দেখা দেয়, তাকেই বলে পেরিকরোনাইটিস। আক্কেল দাঁত ওঠার সময়ে মাড়ির মাংসের উপরে চাপ দেয়। সে সময়ে আশপাশের নরম টিসুর উপরে চাপ তৈরি হয়। তা থেকে ব্যথা যন্ত্রণা ও কিছু ক্ষেত্রে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। কারণ সেই অংশটা মুখের এত ভিতরে যে, ভাল করে পরিষ্কার করা যায় না।
দন্তবিশেষজ্ঞ ডা. পারমিতা গঙ্গোপাধ্যায় বিষয়টি ভেঙে বুঝিয়ে দিলেন, “পেরি মানে চারপাশ, করোনা বলতে দাঁতের ক্রাউনটাকে বোঝায় এখানে আর আইটিস মানে প্রদাহ। অর্থাৎ দাঁতের ক্রাউনের চারপাশে যে প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন দেখা দেয়, সেটিই হল পেরিকরোনাইটিসের উপসর্গ। আসলে যত পুরনো দিনে ফিরে যাব, দেখা যাবে আদিম যুগে মানুষের দাঁতের গঠন, চোয়াল অনেক চওড়া ও শক্ত ছিল। তখন কাঁচা মাংস দাঁত দিয়ে ছিড়ে খাওয়া হত। ক্রমশ সভ্য হয়েছি। আমরা এখন অনেক মডিফায়েড, নরম খাবার খাই। ফলে ক্রমশ আমাদের দাঁতের গঠন ও কাজ অনেক বদলে গিয়েছে।” খাদ্যাভ্যাসের বদল, দাঁতের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক বজায় না রাখলে তখন দাঁতের গোড়ায় প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
দাঁতে ব্যথার উপসর্গ দেখা দিলে ও সেই ব্যথা থেকে গেলে বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। কারণ হিসেবে পারমিতা বলছেন, যে দাঁতের মাড়িতে প্রদাহ হয়েছে, তা পাশের দাঁতেও ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই নিজে চিকিৎসা না করে বিশেষজ্ঞের মত নিন। প্রদাহ কমাতে চিকিৎসকেরা অ্যানালজেসিক (ব্যথানাশক) ও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। আবার অনেক সময়ে দাঁতের গোড়ায় ক্যাভিটি দেখা যায়। তার মধ্যে খাদ্যের অবশিষ্টাংশ জমেও প্রদাহ বা ইনফেকশন হতে পারে। সেটা পাশের দাঁতগুলোর ক্ষতি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে দন্তচিকিৎসকেরা ক্যাভিটির ভিতরটা পরিষ্কার করে দেন। তবে নিজে থেকে বাড়িতে পরিষ্কার করতে গিয়ে দাঁত খোঁচানো উচিত নয়। কিছু ক্ষেত্রে এক্স-রে করে দাঁতের অবস্থা বুঝে দাঁতটি তুলেও দেওয়া হয়। অনেক সময়েই দাঁত বাঁকা ভাবে ওঠে। ফলে গালের ভিতরের চামড়া কেটে-কেটে সাদা দাগের মতো হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে দাঁত তুলে দেওয়া হয়।
কী করবেন, কী করবেন না
এই রোগ পনেরো-ষোলো বছর বয়স থেকে দেখা দিতে পারে। তবে ঠিক চিকিৎসায় এক-দু’সপ্তাহের মধ্যে ঠিকও হয়ে যায়। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।