ইভ অবার্সন সংবাদ সংস্থা
পার্কিনসন’স এর মতো কঠিন রোগ থাকা সত্ত্বেও গত বছর ১১০০ কিলোমিটারের আল্পস সফর করেছিলেন সুইৎজারল্যান্ডের ইভ অবার্সন। শরীরে অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনির মতো বেশ কিছু উপসর্গের সঙ্গে লড়ে এই উচ্চতায় ট্রেকিং চালিয়ে গিয়েছিলেন ইভ। একবার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হওয়ার পর এবার ফের নতুন সফরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তিনি।
জেনিভার কাছে ছোট্ট শহর নাইয়নের বাসিন্দা ইভ। পেশায় একটি ক্লিনিকের প্রশিক্ষক। পার্কিনসন’স নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই এই সফরগুলি করেন তিনি। গরু-চড়ানোর সবুজ পাহাড় পেরিয়ে আরও বেশি উচ্চতায় ট্রেক করেন ইভ।
পার্কিনসন’স নিয়েও পর্বত-সফর।
৫২ বছরের ইভ এ বিষয়ে বললেন, ‘‘এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যেই গত বছর আমি এই ট্রেকে গিয়েছিলাম। যা আমার কাছে অত্যন্ত জরুরি বলে মনে হয়েছিল, তেমনই একটি কাজ করেছিলাম। যতটা আশা করেছিলাম, তার চেয়েও বেশি লোকের মনে এই রোগ নিয়ে আগ্রহ তৈরি করতে পেরেছি, তাতেই আনন্দ।’’
‘‘আমি পাহাড় ভালবাসি, তাই এই অভিযানে গিয়েছিলাম। আমি প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে পার্কিনসন’স থাকা সত্ত্বেও মানুষ অনেক কিছুই করতে পারেন। প্রচুর মানুষের কাছ থেকে উৎসাহ-ভালবাসা পেয়েছি। অনেকে ফোন করে বা ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন,’’ বললেন ইভ।
পাহাড় ইভের পছন্দ বরাবরই।
২০০৪ সালে ৩৫ বছর বয়সে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে ইভের। এর ফলে কাঁপুনি, মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং হাঁটাচলা করতে অসুবিধা তৈরি হয়। এই উপসর্গগুলি সময়ের সঙ্গে আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে প্রত্যেক পার্কিনসন’স এর রোগীদের মধ্যে।
মার্চ মাসে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে ইলেকট্রোড এবং বুকে একটি তার বসান। এতে পার্কিনসন’স এর উপসর্গগুলি কম হয়। ইভ জানিয়েছেন এই অস্ত্রোপচারের পর থেকে তাঁর জীবনটাই বদলে গিয়েছে। ‘‘এই রোগ কখনও সারে না। কিন্তু অনেক কিছু এখন করতে পারছি, যা আগে পারতাম না,’’ বললেন ইভ। পাঁচ বছরের জন্য তিনি নিস্তার পেয়েছেন কঠিন উপসর্গগুলির হাত থেকে। তবে ১৫টি ওষুধ খেতে হত তাঁকে। সেগুলি এখন বন্ধ রাখায় বেশ কষ্টকর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছিল তাঁর।
সে সবের মধ্যেও বেজায় খুশি ইভ। আগে পেশাদার গল্ফার ছিলেন তিনি। রোগ হওয়ার পর থেকে অনেক কিছু করতে পারতেন না। এখন সেগুলি সম্ভব হচ্ছে। এর পরের অভিযান নিয়ে তিনি খুব বেশি মুখ খুলতে চান না এখনই। তবে জানিয়েছেন, এই সফরের জন্য বিশেষ ধরনের ট্রাইসাইকেল তৈরি করেছেন তিনি।