ডেঙ্গি সামলাতে গিয়ে এমনিতেই নাকানিচোবানি খাচ্ছে দিল্লি প্রশাসন, তার উপরে নয়া আতঙ্ক রাজধানী জুড়ে। এ বার আশঙ্কা সোয়াইন ফ্লু-র।
স্বাস্থ্য-বিশারদ ও চিকিৎসকদের আগাম সতর্কবার্তা, ঋতু-পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই হানা দিতে পারে নয়া বিপদ। ‘‘সেপ্টেম্বর শেষ হতে চলল। ধীরে ধীরে দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করলে অর্থাৎ শীতের শুরুতে হাজির হতে পারে সোয়াইন ফ্লু-র বহনকারী এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। তবে ডেঙ্গির মতো এ ক্ষেত্রে রোগ ছড়ানোর জন্য কোনও বাহক লাগে না। বাতাসে ছড়ায়। তাই আরও দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ে।’’— বলছেন চিকিৎসকরা। সফদরজঙ্গ হাসপাতালের অধ্যাপক-চিকিৎসক জে সি সুরির কথায়, ‘‘বয়স্ক মানুষরা, বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস, কিডনির সমস্যা রয়েছে কিংবা ক্যানসার রোগীরা সাবধান! বিপদ রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও।’’
গত বছর বহু দিল্লিবাসী আক্রান্ত হয়েছিলেন সোয়াইন ফ্লু-তে। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছিল হাসপাতালগুলিকে। এ বছর ডেঙ্গি নিয়েই চাপে রয়েছে হাসপাতাল-প্রশাসন। তার উপরে যদি সোয়াইন ফ্লু হানা দেয় শহরে, ভয়ে চিকিৎসকমহল। ডেঙ্গি নিয়েও ডাক্তারদের একাংশের বক্তব্য, সাধারণ মানুষকে আর একটু বেশি সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র প্রশাসনের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল সৌম্য স্বামীনাথন যেমন বলেন, ‘‘বাড়িতে যাতে কোনও ভাবে জল জমে না থাকে, সেটা বাড়ির মালিককেই দেখতে হবে। এডিস ইজিপ্টাই পরিষ্কার জলে জন্মায়। আর খুব অল্প পরিমাণ জলেই জন্মাতে পারে। তাই অপরিষ্কার বাসনে কিংবা ফুলদানির জমা জলেও বিপদ লুকিয়ে থাকতে পারে। ফ্রিজ কিংবা এসি-র ট্রে-তেও জল জমিয়ে রাখবেন না।’’ নিজের বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখাও নিজেদেরই দায়িত্ব, মত স্বামীনাথনের। তাঁর কথায়, ‘‘এই মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। সুতরাং গা ঢাকা পোশাক পরুন।’’
যদিও দিল্লিবাসীর একাংশ ক্ষুব্ধ প্রশাসনের উপর। দক্ষিণ দিল্লি পুর নিগমের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলোতে এখনও পর্যন্ত ৫০০ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর রয়েছে। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর দিল্লি পুর নিগমের। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। যদিও সরকারের দাবি, পরিস্থিতি আগের থেকে ভাল।
তবে তা কতটা সত্যি, প্রশ্ন উঠছে। এইমস-এর মতো হাসপাতালেও অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে পুর নিগম। অনেকেরই প্রশ্ন, হাসপাতালের যদি এই অবস্থা হয়, মানুষ কোথায় যাবে!
বাধা মেয়রকে
ডেঙ্গির মশা জন্মেছে কি না দেখতে যন্ত্রপাতি নিয়ে মেয়রের নেতৃত্বে এমসিডি-র (দিল্লি পুরনিগম) একটি দল গিয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সরকারি বাসভবনে। কিন্তু তাঁদের সেখানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তবে দিল্লি সরকারের দাবি, নাটক করতে বিজেপি শাসিত উত্তর দিল্লি পুরনিগমের মেয়র রবীন্দ্র গুপ্ত মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এসেছিলেন। শনিবারই ধোঁয়া ছড়ানো হয়েছিল।