অতিমারি পরিস্থিতি কেটে গিয়েছে, আর হাত ধোয়ার সেই অভ্যাসেও কোথাও যেন মরচে পড়তে শুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত।
কোভিডকালে সুরক্ষিত থাকতে হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই সময় স্যানিটাইজার এবং হ্যান্ডওয়াশের ব্যবহার খুব জরুরি ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) থেকে বার বার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল এ ব্যাপারে। অতিমারি পরিস্থিতি কেটে গিয়েছে। আর হাত ধোয়ার সেই অভ্যাসেও কোথাও যেন মরচে পড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসকদের মতে, এ অভ্যাস অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। সুস্থ থাকতে হাত পরিষ্কার রাখাটাই তো দস্তুর! তবে সে দস্তুর এখন মেনে চলেন ক’জন? সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের নিয়ে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন শৌচাগার ব্যবহার করার পরেও হাত পরিষ্কার করেন না।
অস্ট্রেলিয়ার ‘ফুড সেফটি ইনফরমেশন কাউন্সিল’-এর তরফে হাত ধোয়ার অভ্যাসের উপর করা সেই সমীক্ষায় ১,২২৯ জন অংশগ্রহণ করেন। সকলের বয়সই ছিল ১৮ বছরের উর্ধ্বে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, অংশগ্রণকারীদের মধ্যে প্রায় ১৯ শতাংশ বলেছেন তাঁরা শৌচালয় ব্যবহার করার পর প্রতি বার হাত পরিষ্কার করেন না। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ স্বীকার করেছেন যে, খাবার খাওয়া কিংবা পরিবেশন করার আগেও তাঁদের সব সময় হাত ধোয়ার কথা মনে থাকে না। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্রিস্টিন কারসন বলেন, ‘‘এই অভ্যাসের কারণে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দারা কেবল নিজেদের শরীর খারাপ করছেন না, এর ফলে বাতাসে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণও বাড়ছে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি এবং ক্যানসারের রোগী, যাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় কম, তাঁদের মধ্যে ব্যক্টেরিয়া সংক্রমণের হারও বেড়ে যাচ্ছে এই কারণে।’’
সমীক্ষা অনুযায়ী শৌচালয় ব্যবহারের পর হাত ধোয়ার অভ্যাসে পুরুষদের তুলনায় খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন মহিলারা। ৮৩ শতাংশ মহিলার হাত ধোয়ার অভ্যাস রয়েছে। অন্য দিকে, ৮০ শতাংশ পুরুষ এই অভ্যাসের কথা স্বীকার করেছেন। সমীক্ষা অনুযায়ী বয়স্কদের তুলনায় অল্পবয়সিদের মধ্যে এই খারাপ অভ্যাসটির আধিক্য বেশি। ৩৪ বছরের নীচে মাত্র ৬৯ শতাংশ বাসিন্দা স্বীকার করেছেন যে, তাঁরা শৌচালয় ব্যবহারের পর হাত পরিষ্কার করেন। অন্য দিকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে প্রায় ৮৬ শতাংশ জানান, তাঁরা শৌচালয় ব্যবহার করে সব সময় হাত পরিষ্কার করেন।